উৎসবে ফেরার প্রস্তাবে প্রতিবাদ উৎসবের আলো নেভানোর আয়োজন

স্বপনকুমার মণ্ডল

আরজি করের প্রতিবাদী আন্দোলনের মধ্যেই এল উৎসবে সামিল আহ্বান। ইতিমধ্যে সেই স্বতঃস্ফূর্ত ও ধারাবাহিক আন্দোলন মাসাধিক কাল অতিক্রম করে ইতিহাস গড়ে তুলেই ক্ষান্ত হয়নি,অভূতপূর্ব আলোড়নও সৃষ্টি করে চলেছে। সরকার ও শাসক দলের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে আইন আদালতের ডাকে সাড়া না দিয়ে তার সুদৃঢ় সঙ্কল্পের নাছোড় অভিযান এগিয়ে চলার চরৈবেতির মন্ত্র লাভ করেছে। সেখানে দলমতনির্বিশেষে আমজনতা যেভাবে আরজি করের পোস্টগ্র্যাজুয়েটের ডাক্তারি ছাত্রীর খুন করে ধর্ষণের বিচারের দাবিতে তীব্র প্রতিবাদে সামিল হয়েছে, তা শুধু রাজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, দেশ-দেশান্তরেও তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করে সংবেদনশীল মানুষকেও সেই প্রতিবাদে সক্রিয় করে তুলেছে। এভাবে স্বতঃস্ফূর্ত ও দীর্ঘস্থায়ী আন্দোলন ইতিপূর্বে লক্ষ করা যায়নি। সেদিক থেকে আরজি করের প্রতিবাদী আন্দোলন যেভাবে এগিয়ে চলেছে,তা শুধু অভূতপূর্বই নয়, অকল্পনীয় মনে হয়। এজন্য যারা প্রথমে সময়ের প্রতীক্ষায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিল,তারাও সময়ান্তরে হতাশ হয়ে পড়ে। তারপরেও আন্দোলন যত গতি লাভ করে, ততই মনে হয় শেষের শুরু। অথচ তার পরেও আন্দোলন সগৌরবে এগিয়ে চলে,এগিয়ে যাওয়ার সুদৃঢ় প্রত্যয়ের আলো বিস্তার করে। সেক্ষেত্রে শান্তিপ্রিয় আন্দোলনটি যে সাধারণ জনগণের কণ্ঠস্বরকে উপেক্ষাকারী সরকারের অস্তিত্ব সংকটে অশান্তির কারণ হতে পারে,তা দমনপীড়নকে উপেক্ষা করে চলা আন্দোলনের নিরন্তর প্রকৃতিতেই প্রতীয়মান। তার মধ্যেই আসে সরকারের সর্বোচ্চ শিখর থেকে শারদীয় উৎসবে সামিল হওয়ার আহ্বান। যেন প্রতিবাদ অনেক হয়েছে, আর আন্দোলন করে সময় নষ্ট করতে হবে না, এবার ক্ষান্ত হয়ে উৎসবে মেতে ওঠাই দস্তুর। সামনে বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব।

সারা বছর ধরে সেই উৎসবের দিকে তাকিয়ে থাকে আপামর বাঙালি। স্বাভাবিকভাবেই মনে হবে,উৎসবপাগল বাঙালি স্বভাব ভুলে প্রতিবাদী আন্দোলনে মেতে উঠেছে। আদতে উৎসবই চলছেই, চারিদিকে তারই আয়োজন। উৎসবের আমেজেই লোকে ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে একান্তভাবেই মনের তাগিদে, দলে দলে লোকের ভিড়ে অদৃশ্য ন্যায়ালয়ের দিকে সবার মুখে ‘We want Justice’-এর অভয় বাণীর প্রার্থনা শুধু অধিকারের মতো শোনায়। প্রতিবাদেও যে নির্মল আনন্দ মেলে আরজি করের প্রতিবাদী আন্দোলনের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ধারাবাহিক ভিড়ের হিড়িকেই তা প্রতীয়মান। সাধারণ মানুষের মনে দীর্ঘ দিন ধরে চলা আন্দোলনেও কোনওরকম বিরক্তি নেই,উল্টে নিজে থেকেই সামিল হওয়ার জন্য অশক্ত শরীর নিয়েও আলো জ্বালিয়ে পথ হেঁটে চলেছে, মিছিল করছে, মানববন্ধনে সামিল হয়েছে, সম্মিলিত প্রতিবাদে সামিল হয়ে গণবিক্ষোভ-অবস্থান থেকে অভিযানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই মেয়েদের ঘটা করে রাত দখলের দীপাবলিতেও পুরুষেরাও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে পাশে দাঁড়াচ্ছে। আবার রাতের আলো নিভিয়ে মনের আলো জ্বালিয়ে চলেছে। এ তো উৎসব নয়, মহোৎসবের মহাসমারোহ। এই মহোৎসবের নাম প্রতিবাদের উৎসব। বাঙালি তার হারানো মেরুদণ্ডটি বহুদিন পর ফিরে পেয়েছে। প্রতিবাদের উৎসবের তাই এত বিস্তার, এত পরাক্রম। দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত প্রতিবাদ যেন মেরুদণ্ডটি ফিরে পেয়ে তার অসীম শক্তি প্রদর্শনের উৎসবে মেতে উঠেছে। বাৎসরিক শারদীয় উৎসবের চেয়ে তার অভিনব আয়োজন বাঙালির প্রাণের প্রতিবাদের উৎসব আরও গরিমাদীপ্ত,আরও আভিজাত্যমুখর। সেখানে শারদ উৎসবের আহ্বান শোনার অবকাশ নেই। বাঙালি যে এবার ঘোরতর অন্যায়ের প্রতিবাদকেই মহোৎসবে সামিল করে তার শেষ দেখার আনন্দে মেতে উঠেছে!


আসলে পুজোর আভিজাত্যই উৎসবে মিলে যায়,মিলনমেলায় মিলিয়ে দেয়। পুজোতে সামিল না হলেও ধর্মীয় গণ্ডি অতিক্রম করে সকলে উৎসবে সামিল হয়। সেখানে পুজোর পবিত্রতা উৎসবের আনন্দে মিলিয়ে গেলেও তার সৌরভ অচিরেই গৌরব হয়ে ওঠে। আমুদে বাঙালির পুজো আপনাতেই শ্রীবৃদ্ধি লাভ করে উৎসবে। বারো মাসে তেরো পার্বণের আধিক্য তার কাছে বাহুল্য মনে হয় না, বনেদি আভিজাত্য অনুভব করে। উৎসবপাগল বাঙালির কাছে বছরভর উৎসবের হাতছানি লেগে থাকে। একটি ফুরোলেই পরেরটির প্রস্তুতি চলে। রসিক বাঙালির সরস প্রকৃতি সারা বছর ধরেই সবুজ ও সজীব থাকে। সেখানে রসনা তৃপ্তিতেই আমোদ থেমে থাকে না, রসের আস্বাদনেও তার জুড়ি মেলা ভার। উৎসবের বিস্তার বাঙালির স্বভাবসিদ্ধ। বইমেলাকেও বইপার্বণ বা বইয়ের উৎসবে রূপান্তর করেছে,শারদীয় দুর্গাপূজাকে শারদোৎসব করেই ক্ষান্ত হয়নি, শারদ সাহিত্যের উৎসবেও পরিণত করেছে। সেক্ষেত্রে উৎসব বাঙালির সত্তায়, তার অস্থি মজ্জায়। সেই অস্তিত্বে এবার তার মেরুদণ্ডের আবির্ভাবে সেই উৎসব আভিজাত্যে ও উৎকর্ষে মহোৎসবে পরিণত হয়েছে। সেখানে ভক্তি বা ভজনা নয়, অন্যায়ের প্রতিবাদেও আনন্দের অপার মহিমা। জয়ের আনন্দ অচিরেই অভ্যাসে নিঃস্ব হয়ে পড়ে, পরাজয়ের গ্লানিবোধ জেগে থাকে অবিরত। সেই গ্লানিবোধকে নিঃস্ব করার মেরুদণ্ডটিই বাঙালি একসময় হারিয়ে ফেলে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সেই বীরত্ব স্বাধীনতা লাভের পর নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে দাসত্ব করে রাজত্ব করার বাসনায় মেরুদণ্ডটিই অকেজো হয়ে যায়। এতে রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রভাব যখন তৃণমূল স্তরে পৌঁছায়, তখন সমাজটাও রাজনৈতিক সমাজে পরিণত হয়। জনগণের প্রতিবাদের অধিকার যখন রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় কুক্ষিগত হয়ে যায়, তখন আমজনতার প্রতিবাদও নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে জনগণের প্রতিবাদের অক্ষমতাই সরকার ও শাসকদলের একাধিপত্য থেকে ঔদ্ধত্যের পুঁজি হয়ে ওঠে। জণগণের সমর্থনপুষ্ট শাসকদলই শাসক ও শোষক হয়ে ওঠে। সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দাঁড়ানোর ছকবন্দি ধারণা ভেঙে আমজনতার তীব্র প্রতিবাদী জনস্রোত দেখে স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বাসের অভাব ঘটে, রক্তচক্ষু বিস্ফারিত হয়। বাঙালি যে তার হারানো মেরুদণ্ডটি ফিরে পেতে পারে, কোনও কিছু ভ্রুক্ষেপ না করে প্রতিবাদে পাওয়ার লোভ আর হারানোর ভয় কাটিয়ে উঠতে পারে, তা অনেকের কাছেই অজানা,শাসক দলের কাছে তো বটেই। আরজি করের নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে বাঙালি তার সেই মেরুদণ্ডটি খুঁজে পেয়েছে বলেই তার নিরন্তর আন্দোলনে মহোৎসবের আনন্দ থেকে কোনওভাবেই বিরত করতে পারেনি। কারও নিয়ন্ত্রণ নেই, নেই কারও নির্দেশ পালনের জোরাজুরি বা সক্রিয় উদ্যোগ, কোথাও কেউ দলবেঁধে চলার কথা বলেনি। অথচ রাজ্য তথা দেশদেশান্তরে মানুষই প্রাণের টানে মানের অধিকারে একাকী সংঘবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদের মহোৎসবে সামিল হওয়ার তাগিদে মেতে উঠেছে। সেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে যে যেভাবে পেরেছে, তাই নিয়ে বা দিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ তো নবজাগরণেরই দোসর। পৃথিবীর সেরা উৎসবই নবজাগরণ। তার আলোতেই তো জেগে ওঠে নবজীবন, সন্ধান মেলে অভিনব সভ্যতার। সেখানে আত্মজাগরণের মধ্যেই থাকে নবজাগরণের প্রথম প্রকাশ। বাঙালির মেরুদণ্ড ফিরে পাওয়ার মধ্যেই তার সেই প্রকাশকে আকাশ করে তুলেছে। সেই মনের আকাশের আলোতেই মহোৎসবের আয়োজন প্রয়োজনকেও অতিক্রম করে চলেছে। উৎসবকে যে মাপা পথে চলে না, তার বিস্তারেই আভিজাত্য, তার আড়ম্বরেই আনন্দের নিবিড় হাতছানি। অন্যদিকে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার অপার আনন্দে মহানন্দময় প্রতিবাদী মহোৎসব মেতে ওঠা বাঙালিকে শারদীয় উৎসবের কৃত্রিম বিনোদনী আয়োজনে ফেরায় কার সাধ্যি! সে যে ঘরে ঘরে রক্তমাংসের মাকে বাঁচানো আয়োজনকেই উৎসবে সামিল হয়েছে।

সাধারণত উৎসবের মধ্যে থাকে উদযাপনের আড়ম্বর। সেখানে আনন্দে মেতে ওঠাই দস্তুর। উৎসব মানেই অপার আনন্দ উদযাপন। দেবদেবীর পূজা থেকে নানাবিধ উদ্দেশ্যসাধক অনুষ্ঠানাদি উদযাপনের ঘনঘটায় উৎসবের আয়োজনে থাকে সম্মিলিত আনন্দযাপন। শুধু তাই নয়, সেখানে জয় করাই আনন্দেও উৎসব উদযাপনের ঘটা সেকাল থেকে একাল সর্বত্র তার বিস্তার। স্বাধীনতা দিবসেও অমৃত মহোৎসবের ঘটা সরকারি ভাবেও উদযাপিত হয়েছে। আবার জয় করার আয়োজনেও উৎসবের হাতছানি জেগে ওঠে। রাবণকে পরাজিত করার জন্য অসময়ে শ্রীরামচন্দ্রের দেবী দুর্গার অকালবোধনই আজকের শারদীয় দুর্গোৎসব। সেখানে জয়ের প্রস্তুতির আয়োজনের সম্মিলিত স্বতঃস্ফূর্ত লোকসমাগমে উৎসবের প্রাণের পরশ জেগে ওঠে। সেদিক থেকে বাঙালির শিরদাঁড়াটি দুঃসময়ে ফিরে আসায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আনন্দ আজ তার চোখেমুখে, আত্মশক্তির জাগরণে নিজের পূর্ণ রূপে ফিরে পাওয়ার আনন্দ তার মনে বসন্তের অপ্রতিরোধ্য যৌবনের হাতছানি। সেখানে বিচার চাওয়ার দাবিতে সোচ্চার কণ্ঠের মধ্যেই ‘আমরা করব জয়’-এর সুস্পষ্ট চেতাবনি ছড়িয়ে পড়ে, যুদ্ধজয়ের প্রতীক্ষার মধ্যেও উৎসবের আয়োজন আন্তরিক হয়ে ওঠে। উৎসবের লক্ষ্যেও যে স্বপ্নের বসতি। সেখানে স্বপ্নপূরণের হাতছানিতে উৎসব মহোৎসবে পরিণত হয়। আরজি করের প্রতিবাদী আন্দোলনে অভূতপূর্ব বৈপ্লবিক প্রকৃতিতে বাঙালির সেই হাতছানি শুধু সময়ের অপেক্ষায় উত্তেজনামুখর।

অনেকদিন বাঙালি এরূপ প্রতিবাদী আন্দোলন করেনি, দেখেওনি। সেখানে তার অকুতোভয় কণ্ঠস্বরে মহোৎসবের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। তার মধ্যে তার দীর্ঘদিনের প্রতিবাদহীন জীবনের যন্ত্রণা উপশমের আয়োজনে প্রতিবাদের অপূর্ব আনন্দ তাকে পেয়ে বসেছে। নিজের প্রতিবাদ নিজে করার অপার আনন্দে প্রতিবাদী মহোৎসবের সুদীর্ঘ যাত্রা স্বাভাবিকভাবেই সরকারের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। সেখানে শারদীয় উৎসবে ফেরানোর অছিলায় প্রতিবাদী উৎসবের আলো নেভানোর সংগুপ্ত বার্তা বুঝে নিতে কারও অসুবিধা হয় না। অথচ যে একবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়ে নিজের অধিকার বুঝে নিতে চায়, তাকে নিয়ন্ত্রণ করা বা বিপথে চালিত করা দুরূহ। দেবদেবীর মহিমায় গড়ে তোলা কৃত্রিম উৎসবের চেয়ে মানুষের জীবনসংগ্রামের একাত্মতায় জেগে ওঠে মহোৎসব আপনাতেই সংবেদনশীল জনসাধারণের কাছে অনেক বেশি জরুরি। সেখানে যুদ্ধের সাফল্যের চেয়েও যুদ্ধে সংঘবদ্ধ সক্রিয় থাকার গরিমাও জনমানসে উৎসবের আমেজ বয়ে এনেছে, নবজাগরণের হাতছানিও দিয়ে চলেছে। মনে ও মানে বেঁচে থাকার অধিকারের লড়াই জারি রাখা উৎসবেরই নামান্তর। সেই লড়াইকে যখন থামিয়ে দিতে শারোৎসবে ফেরার প্রস্তাব আসে, তখন তো সেই উৎসব নিছক আনন্দের নিমিত্ত হয়ে ওঠে। অথচ শ্রীরামচন্দ্র দেবীর পূজা নিতান্তই আনন্দের ছিল না, যুদ্ধ জয় করার জন্যই তা গভীর নিষ্ঠা ও সততায় তা করা হয়েছিল। প্রতিবাদের মহোৎসবে সেই লক্ষ্যেই সবাই মেতে রয়েছে। সেখানে অপেক্ষার উত্তেজনাতেও মহোৎসবের নিবিড় হাতছানি। যুদ্ধের প্রস্তুতির মধ্যেই থাকে যুদ্ধজয়ের সাফল্য। সেক্ষেত্রে যুদ্ধের পরাজয়ের চেয়ে প্রস্তুতির ব্যর্থতা অনেক বেশি বেদনাদায়ক। অন্যদিকে প্রস্তুতির সাফল্যে যুদ্ধজয় না হলের তার প্রভাব অক্ষুণ্ণ থাকে অবিরত। সেখানে প্রতিবাদের মহোৎসবে অভাবনীয় যুদ্ধজয়ের প্রস্তুতিই বৈপ্লবিক প্রভাব বিস্তার করেছে। সেক্ষেত্রে কৃত্রিম উৎসবে ফেরার প্রস্তাব আপনাতেই অবান্তর মনে হয়, অকেজো হয়ে পড়ে। যেখানে মানুষ নিজেকে খুঁজে পায়, মানুষ সেখানেই তো যায়। অনেকদিন পরে বাঙালি যে তার হারানো নির্ভীক মেরুদণ্ডটি খুঁজে পেয়েছে, সেটি যে আর সে কোনওভাবেই হারাতে চায়।