• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ঈশ্বর ধামে পাডি় দিলেন ঈশ্বর কণার আবিষ্কর্তা পিটার হিগস

সুনীত রায় বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কিভাবে তৈরি হল? আর মহাসাগর -সাগর, পর্বত, গাছপালা প্রাণীদের কে সৃষ্টি করল? সৃষ্টি যখন হয়েছে তখন প্রশ্ন আসে কে সৃষ্টি করল? সৃষ্টি আর স্রষ্টার খোঁজ করতে মানুষ দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেল৷ পদার্থ বিজ্ঞানীরা স্থির করলেন, তারা সৃষ্টির রহস্য খুঁজে বের করবেন৷ আর দার্শনিকরা বললেন তারা স্রষ্টার সন্ধান করবেন৷ ভুলে গেলে চলবে না

সুনীত রায়

বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কিভাবে তৈরি হল? আর মহাসাগর -সাগর, পর্বত, গাছপালা প্রাণীদের কে সৃষ্টি করল? সৃষ্টি যখন হয়েছে তখন প্রশ্ন আসে কে সৃষ্টি করল? সৃষ্টি আর স্রষ্টার খোঁজ করতে মানুষ দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেল৷ পদার্থ বিজ্ঞানীরা স্থির করলেন, তারা সৃষ্টির রহস্য খুঁজে বের করবেন৷ আর দার্শনিকরা বললেন তারা স্রষ্টার সন্ধান করবেন৷ ভুলে গেলে চলবে না স্রষ্টা সৃষ্টি ওতপ্রোতভাবে জডি়ত৷ এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির প্রধান রহস্য লুকিয়ে আছে – ভর (Mass) আর ভারের (Weight) মধ্যে৷ ভারকে চোখে দেখে বোঝা যায় কিন্ত্ত ভরকে দেখা যায় না৷ বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ভরকে শক্তির সঙ্গে তুলনা করেছেন তার বিখ্যাত সূত্র E= mc2 এর মাধ্যমে৷ এখানে E হল এনার্জি বা শক্তি, m হল mass বা ভর৷ আর c হল আলোর গতিবেগ যেটাকে ধ্রুবক হিসেবে ধরা হয়৷ আবার আধ্যাত্মিকতাবাদে ঈশ্বর অথবা স্রষ্টাকে শক্তি হিসেবে ধারণা করা হয়৷ তাই আমরা শক্তির আরাধনা করি৷ তাহলে দু ক্ষেত্রেই শক্তি হলো ব্রহ্মাণ্ড রহস্যের মূল কথা৷

বিজ্ঞানীরা এবার শুরু করলেন গবেষণা যেখানে তারা হাতেনাতে এই শক্তিটাকে দেখতে চান তাদের গবেষণাগারে৷ মহাবিশ্বের সৃষ্টি আর অস্তিত্বটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে কণা আর বলের মধ্যে৷ এই দুটোই প্রধান স্তম্ভের ওপর দাঁডি়য়ে আছে সমগ্র বিশ্বজগত৷ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম বস্তুখানা থেকে শুরু করে বৃহৎ আকারের গ্যালাক্সি, মিল্কি ওয়ে সবই কণার সমষ্টি৷ এই কণাগুলির মধ্যে একটা বল কাজ করে যেটা সমগ্র বিশ্ব জগতকে স্থিতিশীল করে রেখেছে৷
কণা বলতে আমরা মৌলিক কণাগুলোকেই বুঝি৷ মৌলিক কণাগুলি হল সেই সব কণা যাকে আর ভাঙ্গা যায় না৷ যেমন ইলেকট্রন৷ কিন্ত্ত প্রোটন আর নিউট্রন মৌলিক কণা নয়৷ এরা অনেকগুলি কোয়ার্ক দিয়ে তৈরি৷ এখনও অব্দি জানা গেছে কোয়ার্ক হল মৌলিক কণা৷ এই বিশাল জগতকে সাধারণভাবে বোঝার জন্য কণা পদার্থ বিজ্ঞানীরা একটা মডেল তৈরি করেন৷ এই মডেলটি স্ট্যান্ডার্ড মডেল অফ এলিমেন্টারি পার্টিক্যালস (Standard model of elementary particles) হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত৷ মৌলিক কণাগুলোর প্রকৃতি আর তাদের মধ্যে যেসব গুন কাজ করছে সেটি এই মডেলের সাহায্যে খুব সহজেই বোঝা যায়৷

মৌলিক কণাগুলোর যে মডেল তৈরি করা হয় তার ওপর ভিত্তি করে মৌলিক কণাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়৷ একটি হল ‘ফার্মিওন ‘আর অপরটি হলো ‘বোসন’৷ ফার্মিওন হল মহাবিশ্বের ‘বিল্ডিং ব্লক’৷ এরাই পরস্পরের সাথে একসঙ্গে একত্রিত হয়ে বস্তু (Marrer) তৈরি করে৷ আর বোসন কণা হল মৌলিক বলবাহী কণা৷ এরা মৌলিক বলগুলিকে বহন করে আর বলগুলো কিভাবে কোথায় কাজ করবে তা নিয়ন্ত্রণ করে৷

বোসনের মধ্যে আছে – গ্র্যাভিটন, ফোটোন, গেলেওন আর ডাবলু -জেড বোসন৷ প্রকৃতিতে আছে চারটি মৌলিক বল – মহাকর্ষ বল, তডি়ৎ চুম্বকের বল, সবল পারমাণবিক বল আর দুর্বল পারমানবিক বল৷ গ্র্যাভিটনকে মহাকাশ বলের বাহক হিসেবে ধরা হয়, যদিও এখন অব্দি এই কণার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ এই কণাটি এখনো আবিষ্কৃত না হলেও কোন একদিন হবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা৷ ফোটন তডি়ৎ চুম্বকীয় শক্তি বহন করে, gleon সবল পারমাণবিক বল বহন করে যা নিউট্রন আর প্রোটনকে একসঙ্গে নিউক্লিয়াসের মধ্যে ধরে রাখে৷ W আর Z বোসন দুর্বল পারমানবিক বলের জন্য দায়ী৷ এগুলি ছাড়াও আরও এক ধরনের বোসন কণা আছে, যা হিগস – বোসন নামে পরিচিত৷

বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে এই হিগস কণা সম্পর্কে প্রথম ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন পিটার হিগস সহ আরও কয়েকজন পদার্থবিজ্ঞানী৷ কণা আর বল সম্বন্ধে একটা মোটামুটি ধারণা হওয়ার পর বোঝা যায় মহাবিশ্বের অস্তিত্বের প্রধান কারণই হল ভর৷ বস্তু তৈরি হয় কণা দিয়ে আবার মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয় অসংখ্য বস্তু দিয়ে৷ সুতরাং বস্তু বা কনার যদি ভর না থাকে তাহলে মহাবিশ্বের বৃহৎ অথবা ক্ষুদ্র কোন বস্তুই তৈরি হওয়া সম্ভব নয়৷ যেসব মৌলিক কণা দিয়ে বস্তু তৈরি হয় অর্থাৎ যে কণাগুলো আর ভাঙা যায় না – তাদের ভর কিভাবে তৈরি হবে? আবার সব মৌলিক কণার যে ভর আছে সেটাও সত্যি নয়৷ যেমন ফোটনের ভর নেই৷ বিজ্ঞানীরা কিছুতেই বুঝতে পারছিলেন না, কেন কিছু সাব অ্যাটোমিক কণা ভরের সঙ্গে জডি়ত আবার কিছু কণা ভরহীন৷

বিশিষ্ট ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী পিটার হিগস ১৯৬৪ সালে এক বিশেষ ধরনের হাইপোথেটিক্যাল ক্ষেত্র আবিষ্কার করলেন যা মহাবিশ্বের অস্তিত্বের সঙ্গে জডি়ত – তার নাম হল হিগস ফিল্ড বা হিগস ক্ষেত্র৷ এই ধারণা অনুযায়ী সারা মহাবিশ্ব হিগস ক্ষেত্র দ্বারা আবৃত৷ এই ক্ষেত্র দিয়ে যাওয়ার সময় যেসব মৌলিক কণাগুলি বেশি মাত্রায় এই ক্ষেত্রের মধ্যে জডি়য়ে পডে় তখন তারা ভর লাভ করে৷ আবার কিছু কণা যখন খুব কম মাত্রায় এই ক্ষেত্রের সঙ্গে জডি়য়ে পডে় তখন তুলনামূলকভাবে কম ভর লাভ করে৷ একটু সহজভাবে বললে বুঝতে সুবিধা হবে৷ যদি একটা পুকুরকে হিগসক্ষেত্র হিসেবে কল্পনা করা হয় আর তাতে যদি একটা ছোট মাছ ছেডে় দেওয়া হয়, দেখা যাবে খুব সহজে ছোট মাছটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে৷ কারণ তার আকার ছোট হওয়ার জন্যে জলের সঙ্গে কম সংস্পর্শ হচ্ছে আর বাধাও কম পাচ্ছে৷ কিন্ত্ত যদি ওই পুকুরে একটা মানুষকে সাঁতার কেটে এগিয়ে যেতে বলা হয় তার পক্ষে ব্যাপারটা অত সোজা হবে না৷ কারণ মানুষের আকার বেশি হওয়ার দরুন শরীরটা বেশি পরিমাণে জলের সংস্পর্শে আসবে আর বাধার পরিমাণটাও বেশি হবে৷ হিগস ক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করলে বলতে হয় মানুষটি বেশি ভর লাভ করবে৷ আবার আকারে বড় হলেই যে বেশি ভর লাভ করবে তা কিন্ত্ত নয়৷ এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে বস্তুর কণাগুলি হিগস ক্ষেত্রের সঙ্গে কতটা ওতপ্রোতভাবে নিজেদের জডি়য়ে ফেলেছে৷ যেমন ফোটন কণা হিগস ক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় কোনোভাবেই নিজেকে জড়ায় না তারফলে ফোটোন কোন ভর লাভ করে না৷ আবার আরেক দিকে কোয়ার্কগুলি এই হিগস ক্ষেত্রের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় হিগসক্ষেত্রের মধ্যে নিজেদের ওতপ্রোতভাবে এমন করে জডি়য়ে পডে় তার ফলে ভর লাভ করে৷

তাহলে হিগস ফিল্ডের হিগস বদনের সঙ্গে সম্পর্কটা কি? কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যায় মৌলিক কণাগুলিকে কণা বা তরঙ্গ হিসেবে বিবেচনা না করে একটা ক্ষেত্রে হিসেবে কল্পনা করা হয়৷ অর্থাৎ প্রতিটি মৌলিক কণার আলাদা আলাদা ক্ষেত্র আছে৷ এই ধরনের ক্ষেত্র দিয়ে মহাকাশ আবৃত৷ এই ক্ষেত্রগুলি একে অপরের সঙ্গে এক বিশেষ বল দ্বারা একত্রিত৷ এই ক্ষেত্রগুলিকে উত্তেজিত করলে এই ক্ষেত্রগুলোর সঙ্গে জডি়ত কণা বা তরঙ্গ বেরিয়ে আসে৷ যেমন তডি়ৎ চুম্বকীয় ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করলে ফোটন কণা বেরিয়ে আসে৷ ঠিক সেরকম হিগস ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করলে হিগস বোসন কণা বেরিয়ে আসে৷ একটি হিগস ফিল্ডের ক্ষুদ্রতম কণা৷ হিগস ফিল্ডকে যদি জলের সঙ্গে তুলনা করা হয় যে জল যেমন একটা নিরবিচ্ছিন্ন মাধ্যম তেমন হিগস ফিল্ডও একটা নিরবিচ্ছিন্ন মাধ্যম৷ জল যেমন অসংখ্য অণু দিয়ে তৈরি তেমন হিগস ক্ষেত্রটি অসংখ্য হিগস বোসন কণা দিয়ে তৈরি৷

গাণিতিক পদ্ধতিতে হিগস এই ধরণের একটা ক্ষেত্র যখন প্রথম আবিষ্কার করেন তখন সেরকম স্বীকৃতি বিজ্ঞানীমহলে পাননি৷ গবেষণাগারে হিগস বোসন কিভাবে দেখা যেতে পারে তার ওপর শুরু হল আবার গবেষণা৷ কোন ক্ষেত্রকে উত্তেজিত করতে কতটা শক্তির প্রয়োজন নির্ভর করে সেই ক্ষেত্রের সাথে সম্পৃক্ত কণার ভরের উপর৷ ফোটোনের তুলনায় হিগস বোসন কণার ভর ১৩৫ গুন বেশি৷ হিগস বোসন কণা উৎপন্ন হয়েই অন্য কণায় পরিবর্তিত হয়৷ কারণ এর স্থায়িত্ব হল ১.৬x১০-২২ সেকেন্ড৷

হিগস বোসন কণার সন্ধানে ইউরোপিয়ান অর্গানাইজেশন অব নিকলে রিসার্চ (CERN) গবেষণাগারে ২৭ কিলোমিটার লম্বা একটা পার্টিকেল এক্সিলারেটর যন্ত্র – LHC (Large Hardon Collidor) ৪.৭৫ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি করা হয়৷ এর ভেতর হাজার হাজার শক্তিশালী চুম্বকের সাহায্যে দুটো বিপরীতমুখী চারজিত প্রোটন বিমকে প্রায় আলোর সমান (৯৯.৯%)গতিতে সংঘর্ষ ঘটানো হয়৷ এই সংঘর্ষের ফলে ঠিক বিগব্যাংয়ের মত একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়, যার ফলে সাব অ্যাটমিক কণাগুলো বেরিয়ে আসতে শুরু করে৷ যেহেতু হিগস ক্ষেত্রটি একটি অদৃশ্য ক্ষেত্র তাই এখানে সরাসরি পর্যবেক্ষণ সম্ভব নয়৷ তাই এরকম সংঘর্ষের ফলে হিগস ক্ষেত্রে আলোড়ন তৈরি হয় যার ফলে হিগস কণা বেরিয়ে আসে৷ হিগস কণা তৈরি হওয়ার এত অল্প সময়ের মধ্যে অন্যকণায় রূপান্তরিত হয়ে যায়, যার ফলে একে ধরা সম্ভব হচ্ছিল না৷ তাই বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা লব্ধ তথ্যের সমীকরণ থেকে পাওয়া পরিবর্তনের প্যাটার্ন থেকে হিগস কণার সন্ধানের চেষ্টা করেন৷ তাতেও সফলতা এলো না৷

অবশেষে ২০১২ সালের ৪ঠা জুলাই LHC পরীক্ষার ফলাফল থেকে একটা নতুন কণার অস্তিত্ব পাওয়া যায় ভর হিগস কণার ধারণাকৃত ভরের প্রায় সমান৷ তার ফলে সেই বহু কাঙ্খিত হিগস – বোসন কণার অস্তিত্ব প্রমাণ হল৷ সারনের বিজ্ঞানীরা যখন ঘোষণা করলেন যে তারা হিগস বোসন কণা খুঁজে পেয়েছেন তখন তারা আসলে এটাই প্রমাণ করে দিলেন ১৯৬৪ সালে আবিষ্কৃত পিটার হিগেসের প্রস্তাবিত হিগস ক্ষেত্রের অস্তিত্ব আছে৷ এ ধরনের যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য ব্রিটিশ পদার্থ বিজ্ঞানী পিটার হিগস আর বেলজিয়ান পদার্থ বিজ্ঞানী ফ্রান্সয়া ইংলার্টকে ২০১৩ সালে নোবেল পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়৷
এই বোসন শব্দটি নেওয়া হয়েছে গত শতাব্দীর বিশের দশকে এক বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বসু আর বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের নামকরণে৷ সত্যেন্দ্রনাথ বোস এবং আইনস্টাইন, বোস – আইনস্টাইন সংখ্যায়ন নামক একটি কোয়ান্টাম সংখ্যায়নের প্রবর্তন করেন যে সংখ্যায়নের নীতি এই ভাগের কণাগুলো মেনে চলে৷ তাই এই কৃতিত্বস্বরূপ এই শ্রেণীর কণার নাম দেওয়া হয় বোসন৷ হিগস কণাও এই ভাগের বৈশিষ্ট্যগুলো মেনে চলে বলে তার নাম হল হিগস – বোসন৷

হিগস – বোসন কণা তথা হিগস ক্ষেত্রের প্রমাণ পাওয়া সমগ্র পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার৷ হিগস ক্ষেত্র না থাকলে কোন পরমাণুর গঠন সম্ভব হতো না৷ যার অর্থ হল মহাবিশ্বের কোন অস্তিত্বই থাকতো না৷ হিগস ক্ষেত্র অন্য সব বলক্ষেত্র থেকে আলাদা৷ সর্বত্র এই ক্ষেত্রের মান সমান৷ তাই হিগস ক্ষেত্র সম্বন্ধে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারলে বিশ্ব জগতের অনেক রহস্য সমাধান সম্ভব হবে৷ আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো হিগস বোসন কণা অন্য সব মৌলিক কণা থেকে আলাদা৷ এটাই একমাত্র কণা যার মধ্যে স্পিন নেই৷ এর আগে গাণিতিক সমীকরণ ছাড়া এরকম ফলাফল পাওয়া সম্ভব হয়নি৷ এসব কারনে কনা পদার্থ বিজ্ঞানীদের কাছে হিগস বোসন এতটাই গুরুত্বপূর্ণ৷

হিগস বদন কণা আর হিগস ক্ষেত্র এই মহাবিশ্বের অস্তিত্বের একটা বড় কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত করে ঠিকই কিন্ত্ত এটার সাথে ঈশ্বরের কি সম্পর্ক? বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছিলেন যে হিগস ক্ষেত্রের অস্তিত্ব অবশ্যই থাকতে হবে৷ পদার্থ বিজ্ঞানের বিশেষ মডেলটি পূর্ণতা পায় না মৌলিক কণার ভর লাভের কারণ ও ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয় না৷ তাই বিজ্ঞানীরা নিরলস গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন৷ কিন্ত্ত কিছুতেই খুঁজে পাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না৷ উপস্থিতিটা উপলব্ধি করা যাচ্ছে কিন্ত্ত চোখে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না৷ বলতে পারা যায় অনেকটা ঈশ্বরের মতো৷

৯০ এর দশকে শুরুর দিকে এক নোবেল জয়ী পদার্থবিজ্ঞানী লিও লাদেরমান হিগস বোসনের ওপর ভিত্তি করে একটি বই লেখেন যার শিরোনাম হল ‘‘দি গডড্যাম পাটিকেল’’৷ কিন্ত্ত বইটির প্রকাশক ‘ড্যাম’ কথাটি অমার্জিত মনে করে বাদ রেখে বইয়ের নাম রাখেন ‘‘দি গড পার্টিকেল’’৷ ব্যাস সেই থেকে হিগস বোসন বিশ্বের মানুষের কাছে ‘‘গড পার্টিকেল’’ বা ‘‘ঈশ্বর কণা’’ নামে পরিচিত হয়ে গেল৷

৮ই এপ্রিল ২০২৪- কনা পদার্থবিজ্ঞানের এক মহিরুহের সমাপতন হলো৷ ৯৪ বছর বয়সে ঈশ্বর ধামে পাডি় দিলেন ঈশ্বর কণার আবিস্কারক পিটার হিগস৷