• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

পাহাড়ে সমাধানের আশায়

অমিত শাহর কাছে পাহাড়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্যবস্থা করার আজি নিয়েই আলােচনা করতে আগ্রহী। এখন দেখার পাহাড়ের মেঘ কেটে নতুন সূর্য দেখা দেয় কিনা।

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

দার্জিলিংয়ের পাহাড়ি এলাকায় মায়াময় মেঘের আনাগােনার মধ্যে সহজিয়া ভাব আপ পাওয়া যায় না। পাহাড়ি মানুষের সরল জীবনচর্যার মধ্যেই কে যেন আতঙ্কের এক পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। লুকিয়ে রয়েছে এক হিংস্র শাপদের আক্রমণের আশঙ্কা। সারল্য গেছে উধাও হয়ে। গােখাল্যান্ডের দাবিতে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন প্রাক্তন সেনাকর্মী সুভাষ ঘিষিং।

১৯৮০ সাল থেকেই পাহাড়ে এমন অস্থিরতা শুরু হয়েছে। তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। তিনি প্রথমে সুভাষ ঘিষিংয়ের দাবিকে কোনও আমলই দেননি। তবে পরে তাকে কলকাতায় ডেকে নিয়ে আলােচনায় বসেন একটা রফা সূত্রের খোঁজে। কিন্তু তিনি পৃথক রাজ্যের দাবিকে আমল দেননি। সংঘাতের শুরু সেখান থেকেই। বহুদিন পাহাড়ে বনধ পালিত হয়েছে। সেখানকার মানুষের রুটিরুজিতে টান পড়ার পর তা প্রত্যাহৃত হয়েছে। আন্দোলনের ব্যাটন পরবর্তীতে ঘিষিংয়ের অনুগামী বিমল গুরুংয়ের হাতে চলে আসে।

বিমল আরও জোরদার করেন পৃথক রাজ্যের দাবিকে। বন্‌ধের মেয়াদ বেড়ে যায়। বিরক্ত পাহাড়ের মানুষ মদন তামাংয়ের নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় উৎসাহ দেখাতে থাকেন। ফলে বিমল গুরুংয়ের কোপে পড়েন তিনি এবং প্রকাশ্য দিবালােকে বহু মানুষের সামনেই তিনি খুন হন। এতে বিমল গুরুংয়ের যােগ থাকার অভিযােগ ওঠে। এছাড়া, বনধের সময়ে সরকারি সম্পত্তি বিনষ্ট করা এবং বিরােধী বহু মানুষকে হত্যা করার সঙ্গে বিমল গুরুংয়ের নাম জড়িয়ে পড়ে।

পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার উদ্যোগ নিতেই বিমল উধাও হয়ে যায়। সুভাষ ঘিসিং ও বিমলের তৎপরতায় পাহাড়ে বিজেপি দলের নির্বাচনী সাফল্য লাভের ধারাবাহিকতা চলে আসছে ষ। বর্তমান শাসকদল বা পূর্বতন জ্যোতি বসুর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট কেউই পৃথক রাজ্য বা গোর্খাল্যান্ডের দাবি মানতে চায়নি। ফলে বিজেপির সাহায্য লাভ করার আশায় সুভাষ থেকে বিমল এমন রাজনৈতিক খেলা শুরু করেন।

পুলিশের তাড়া খেয়ে পালিয়ে বেড়ানাে বিমলের হঠাৎ ফিরে আসা ও তৃণমূলের হয়ে সাফাই গাওয়ার ফলে পাহাড়ে এক নতুন অশান্তির সূচনা হয়েছে। একদিকে বিমল তৃণমূলের গুণগান করছেন, অন্যদিকে পৃথক রাজ্যের দাবিও করছেন। কিন্তু এখন তিনি বিজেপির ঘাের বিরােধী। গাের্খাজনমুক্তি মাের্চার নেতা এখন রাজনৈতিকভাবে অনেকটাই নমনীয়। অন্যদিকে গােখা ন্যাশনাল লিবাশেন ফ্রন্ট এই ঘােলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করবে তা বলাই বাহুল্য।

জিএনএলএফের এক প্রতিনিধি দল দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করার আশায় সেখানে রয়েছে। অমিত শাহর কাছে পাহাড়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য ব্যবস্থা করার আজি নিয়েই আলােচনা করতে আগ্রহী। এখন দেখার পাহাড়ের মেঘ কেটে নতুন সূর্য দেখা দেয় কিনা।