মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আত্মজীবনী’ থেকে

পূর্ব প্রকাশিতের পর

আমি তাহাদের ভাল বাসিয়া কিছু চাুল হাতে করিয়া লইয়া তাহাদিগকে খাওয়াইতে যাইতাম। তাহারা ভয় পাইয়া কেকা শব্দ করিয়া কে কোথায় উড়িয়া যাইত। একজন একদিন আমাকে বারণ করিল,— ‘অমন করিবেন না, উহারা বড় দুষ্টু। যদি ঠোকর মারে তো একেবারে চোখে ঠোকর মারিবে।’ একদিন মেঘ উঠিল, আর দেখি যে, ময়ূরেরা মাথার উপরে পাখা উঠাইয়া নৃত্য করিতে লাগিল। এ কি আশ্চর্য্য দৃশ্য! আমি যদি বীণা বাজাইতে জানিতাম, তবে তাহাদের নৃত্যের তালে তালে বাজাইতাম। দেখিলাম যে কবিরা ঠিক বলিয়া গিয়াছেন, মেঘ উঠিলেই ময়ূরেরা আনন্দে নৃত্য করিতে থাকে, ‘নৃত্যন্দি শিখিনো মুদা।’ এ তাঁহাদের কেবল মনের কল্পনা মাত্র নহে।

ফাল্গুন মাস চলিয়া গেল, চৈত্র মাস মধুমাসের সমাগমে বসন্তের দ্বার উদ্ঘাটিত হইল, এবং অবসর পাইয়া দক্ষিণ বায়ু আম্র-মুকুলের গন্ধে সদ্য প্রস্ফূটিত লেবু ফুলের গন্ধ মিশ্রিত করিয়া কোমল সুগন্ধের হিল্লোলে দিগ্বিদিক্ আমোদিত করিয়া তুলিল।


(ক্রমশ)