• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

অসমে আবার বিজেপি

বিপক্ষ হিসেবে কংগ্রেস দল শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতিকে ভাওতা এবং রাজ্যের জনবিরােধী বলে প্রচার করার কসুর করেনি।

বিজেপি (File Photo: IANS)

অসমের মানুষের রায় আবার পূর্ববর্তী শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টির অনুকূলেই গেছে। যদিও অসমে এনআরসি নিয়ে অসমের বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টির কথা সংবাদ মাধ্যমে লাগাতারভাবে প্রচারিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও সেখানকার মানুষ কোন যাদুমন্ত্রে আবার দেশ ছাড়ার আতঙ্কসৃষ্টিকারী দলকে ক্ষমতা দখলে সাহায্য করল তার কোনও ব্যাখ্যা কারও কাছে নেই।

বিপক্ষ হিসেবে কংগ্রেস দল শাসক ভারতীয় জনতা পার্টির যাবতীয় উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতিকে ভাওতা এবং রাজ্যের জনবিরােধী বলে প্রচার করার কসুর করেনি। কিন্তু ১২৬ আসনের বিধান সভায় বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে ৭২ আসন পেয়ে।

সিএএ’র প্রয়ােগেও যে মানুষ বিজেপির ওপর আস্থা রেখে আবার তাদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে ভােট দিয়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর। কারণ অসমে লাগাতার অনুপ্রবেশ চলছে। তাই মানুষ তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণ না দিতে পারলেও বিজেপির ওপরই ভরসা করেছে রাজ্যে কংগ্রেস জোটের চেয়ে।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সােনেয়াল বিজেপির পরপর জয়কে মানুষের জয় আখ্যা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মাজুলি আসনে আবার জয়লাভ করেছেন। বিজেপির জয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হতেই রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজগুলি যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সম্পূর্ণ করার নির্দেশ তিনি জারি করেছেন।

উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণে কোনও বাদবিচার যেন না করা একথা জানতেও তিনি কসুর করেননি। কংগ্রেসের নেতৃত্বের অভাবেই আবারও বিজেপিকেই রাজ্যের মানুষ ভােট দিতে বাধ্য হয়েছেন সেটা বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কংগ্রেস সবথেকে ভুল করেছে।

এআইইউডিই এর সঙ্গে জোট করে। বিজেপি এআইইউডিই কে অনুপ্রবেশে ইন্ধন যােগানাে দল হিসেবে প্রচার করে এসেছে। ফলে মানুষ আরও বিভ্রান্ত হয়ে বিজেপিকেই বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। ভােট যুদ্ধের প্রচারে বিজেপি বরাবরই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন মহাজোটের পক্ষে ভোেট মানে যে এআইইউডিইকেই মদত করা সেটা বারবার তুলে ধরেছে।

এআইইউডিই’র নেতা বদরুদ্দিন আজমল যে লাগাতার অনুপ্রবেশকারীদের জন্যই কাজ করছে তা বিজেপি তাদের নির্বাচনী প্রচারের আগে থেকেই রাজ্যের মানুষকে সচেতন করে এসেছে। আর কংগ্রেস নির্বচনী প্রচারেই নেমেছে ফেব্রুয়ারির শেষ থেকে।

কিন্তু শাসক বিজেপি কংগ্রেসের গােষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযােগ নিয়ে ঠিক সময়ে মানুষের আস্থা অর্জনের প্রচেষ্টা চালিয়েছে সময়ােচিত প্রচারের মাধ্যমে। কংগ্রেস থেকে জনপ্রিয় নেতানেত্রীদের বিজেপিতে যােগদান, গােষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং এআইইউডিএফ’র সঙ্গে জোট বিরােধী জোটকে একেবারে কোনঠাসা করে ফেলে।

এছাড়া কংগ্রেস জোটের কোনও গ্রহণযােগ্য নেতাই ছিল না। অসম কংগ্রেস প্রধান রিপুন বােরা পরাজিত হয়েছেন। একই সঙ্গে অসম জাতীয় পরিষদ প্রধান লুরিনজ্যোতি গাইও পরাজিত হন। এআইইউডিএফ এর সঙ্গে জোট করার ফলেই এমন শােচনীয় ফল কংগ্রেসকে পেতে হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

এআইইউডিএফের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেস তার পায়ে গুলি করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপি সিএএ নিয়ে কোনও হাইভােল্টেজ প্রচারে গুরুত্ব দেয়নি। ফলে তার আতঙ্ক মানুষের মন থেকে সাময়িক হলেও মুছে গিয়েছিল।