আশিতে আশিস ভট্টাচার্য
সঙ্গীতাচার্য আশিস ভট্টাচার্যের ৮০ তম জন্মদিবস ও চয়ন সংস্থার ৩০ তম বর্ষ উপলক্ষে এক আনন্দানুষ্ঠান আয়োজিত হতে চলেছে আগামী ২৩ সে এপ্রিল, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫.৪৫ মিনিটে, রবীন্দ্রসদন প্রেক্ষাগৃহে৷ রবীন্দ্রসঙ্গীত জগতের এক প্রথিতযশা শিল্পী, আদর্শ শিক্ষক ও বিশেষজ্ঞ রূপে আশিস ভট্টাচার্য দেশে ও বিদেশে বিশেষভাবে পরিচিত৷
সাঙ্গীতিক পরিবেশের মধ্যেই তাঁর বড় হওয়া৷ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রাম আনোয়ারাতে মায়ের গান শুনে অনুপ্রাণিত হন, ছোটবেলা থেকেই সুন্দর গানের সাথে তবলাও বাজাতেন৷ কলকাতায় এসে সব থেকে প্রাচীন শিক্ষায়তন ‘গীতবিতানে’ প্রথাগত শিক্ষা নেন৷ চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে এসে আচার্য শৈলজারঞ্জন মজুমদার মুগ্ধ হন তাঁর গানে৷ জহুরি তখনই জহর চিনতে ভুল করেননি৷ আজীবন মন্ত্রশিষ্য করে নেন আশিস ভট্টাচার্যকে৷ ক্রমে তিনি গীতবিতান-এর শিক্ষক ও পরবর্তী সময়ে অধ্যক্ষ রূপে নিযুক্ত হন৷ অসাধারণ শিল্পীর স্মরণ ক্ষমতা৷ তাঁকে স্বরলিপির এনসাইক্লোপিডিয়া অর্থাৎ চলন্ত স্বরলিপিকার বলা যায়৷ তিনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান৷
পাঁচটি সঙ্গীতশিক্ষায়তনে তিনি শিক্ষাদান করেন৷ প্রাচীন প্রবাহিনী, দক্ষিণ কলকাতা নান্দনিকী, রবিরঞ্জনী, মেধাবী ও ক্ষণিকা৷ বর্তমানে তিনিই একমাত্র শিক্ষক যিনি এসরাজ বাজিয়ে আজও গান শিখিয়ে যাচ্ছেন৷ বহু পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রবীন্দ্র চর্চা ভবন প্রদত্ত পুরস্কার, চয়নিকা (ঢাকা বাংলাদেশ) প্রদত্ত শৈলজারঞ্জন মজুমদার স্মারক পুরস্কার, দক্ষিণী প্রদত্ত শুভ গুহঠাকুরতা স্মৃতি পুরস্কার, আনন্দধারা প্রদত্ত কাবেরী দাশগুপ্ত স্মৃতি পুরস্কার, অ্যাসোসিয়েশন অফ প্রফেশনাল পারফর্মিং সিঙ্গার্স প্রদত্ত সম্মাননা, সারস্বত প্রদত্ত সম্মাননা, চয়ন প্রদত্ত সম্মাননা, সাংস্কৃতিকী প্রদত্ত সম্মাননা৷ এছাড়াও দেশে এবং বিদেশে বহু পুরস্কার ও সম্মানে তিনি বিভূষিত৷
উন্মেষ নাট্য উৎসব
উন্মেষ কালিকাপুর দীর্ঘদিনের নাট্যদল৷ এবার ৩৩ বছরে পদার্পণ করল তাদের দল৷ সম্প্রতি তিনদিন ধরে উন্মেষ কালিকাপুর-এর এবারের এই নাট্য-উৎসব অনুষ্ঠিত হল চড়কডাঙায়৷ এই উৎসব উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী দেবারতি চক্রবর্তী, অভিনেয় হাওড়া-এর পরিচালক সৌমেন্দু ঘোষ, রানীকুঠি জীয়নকাঠি-এর নির্দেশক কল্লোল মুখার্জি এবং কালিকাপুর উন্মেষ-এর সভাপতি তুলসী ঘোষ৷ উপস্থিত সকলেই এই উৎসবের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন৷
এইদিন মঞ্চস্থ হয় প্রসেনজিৎ কুণ্ডু’র পরিচালনায় নাটক ‘বিকলাঙ্গ কে’? নাট্যদল বাঁশবেড়িয়া, সন্ধ্যাভারতী থিয়েটার গ্রুপ, হুগলী৷ পরের নাটকটি হলো দিনলিপি৷ দলের নাম অভিনেয় হুগলী৷
এইদিন এর শেষ নাটকটি মঞ্চস্থ হয় ‘ক্রান্তিকালের সোনাটা’, রাণীকুঠি জীয়নকাঠি, কলকাতার নাট্যদলের নাটক৷ দ্বিতীয়দিন সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় কালীদাস পাইক এর নির্দেশনায় নাটক ‘কেমন আছেন’৷ দল শিল্পী সংসদ দঃ ২৪ পরগনা৷ পরের নাটকটি মঞ্চস্থ হয় মনীষ ভট্টাচার্যপরিচালিত টাকী নাট্যম উঃ ২৪ পরগনা-এর নাটক ‘রং’৷ এই দিনের শেষ নাটকটি হল ‘ঘূর্ণি’৷ উন্মেষ কালিকাপুর দঃ ২৪ পরগনার নাট্য দল৷ এই নাটকটি নির্দেশনায় ছিলেন অপু সর্দার৷
উৎসবের শেষদিন মঞ্চস্থ হয় সমীরণ সমাদ্দার এর নির্দেশনায় নাটক ‘হাজার মাইল অন্ধকার’৷ পরিবেশনায় ছিল ব্যান্ডেল নান্দনিক হুগলীর নাট্য দল৷ পরের নাটক মঞ্চস্থ হয় ‘বসুষেন’৷ এই নাটকটি পরিবেশন করে মহিষাদল শিল্পকৃতি, পূর্ব মেদিনীপুর৷ নির্দেশনায় ছিলেন সুরজিৎ সিনহা৷ এই উৎসবের শেষ নাটক মঞ্চস্থ হয় উন্মেষ কালিকাপুর দক্ষিণ ২৪ পরগনা-এর নাটক ‘মিটিং চলছে’৷ পরিচালক রমেশ মন্ডল৷ সব মিলিয়ে সাড়ম্বরে উদযাপিত হল তিনদিনের নাট্য উৎসব৷
অঙ্কুরিত প্রতিভা
মার্গ সঙ্গীতের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক সঞ্জয় মিত্রর কুইনস্ পার্ক বাসভবনে নতুন প্রজন্মের দুই প্রতিভাবান কিশোর-কিশোরীকে নিয়ে হয়ে গেল এক সুন্দর বৈঠকী সন্ধ্যা৷ সঙ্গীতে বিশেষ বু্যৎপত্তি সম্পন্ন ভবিষ্যতের সম্ভাবনাদের উৎসাহ দেওয়া ও তাদের পাদপ্রদীপের আলোয় আনার জন্যই তিনি এই ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন৷ প্রথমে ছিল প্রান্তিকা নস্করের সঙ্গীত পরিবেশন৷ মায়ের (কাবেরী) কাছে সুতালিমপ্রাপ্ত প্রান্তিকা প্রথমে শোনাল রাগ পটদীপ-বিলম্বিত (রহসন গাও) ও দ্রুত একতাল (রঙ্গ রঙ্গিলা)৷সুরেলা কন্ঠে রাগটির ‘বড়হত’-এ বন্দীশের ‘কহন’ নিয়ে আলাপে রয়েছে মুনশীয়ানা৷জড়তাহীন, আত্মবিশ্বাসপূর্ণ গায়নশৈলীতে বিভিন্ন স্থানে স্বরগুলির মোচড়, অনায়াস সরগম তান, পরিষ্কার আ-কারান্ত তান উল্লেখযোগ্য৷ দ্রুত একতালে গাওয়ার ভঙ্গি এবং কহন ও স্বরক্ষেপণের মোচডে় পাওয়া গেল স্বকীয়তা৷ এরপর সুপরিবেশিত চৈতী এবং পরে দাদরা যেটি প্রান্তিকা শোনাল ঠুমরির চালে৷ নমনীয় রেওয়াজি কন্ঠে সূক্ষ্ম কাজগুলিতে স্বরক্ষেপণ শৈলীতে প্রান্তিকা দেখিয়েছে তার তালিমগত সক্ষমতা৷ সমগ্র পরিবেশনে কিন্ত্ত সর্বক্ষেত্রেই তার গাওয়ার ভঙ্গি ছিল গজল আঙ্গিকে৷ তবলায় যথাযথ সঙ্গত করেছেন পিতা অরূপ নস্কর এবং হারমোনিয়মে রতন ভট্টাচার্য, যাঁর বাজনাও ছিল গজলের আঙ্গিকে৷
বংশীবাদনের মিষ্টত্ব ও সার্বিক পারদর্শিতায় অবাক করল অনির্বাণ রায়৷ তার শিক্ষাগুরু পিতা লোকনাথ রায় ও পরে তালিম তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদারের কাছে৷ তবলায় নবোদয় ভট্টাচার্যর যথার্থ সহযোগিতায় প্রথমে দ্রুত ত্রিতালে ছোট করে অনির্বাণ শোনাল ইমন৷ বংশীবাদনের কৌশলে অনায়াস, নমনীয় স্বর ক্ষেপণ ও নিয়ন্ত্রণ, বোল বাণীর সুচারুতাপূর্ণ স্বচ্ছন্দ চলন এবং তানকারী ছিল শ্রুতিনন্দন৷ ভাল লাগে স্বল্প পরিসরে কাফি ও ভৈরবীর বন্দীশ দুটিও৷ কাফির মাধুর্যময় বোলবাণী এবং ভৈরবীর ধুনে ছিল লালিত্যের প্রকাশ৷ আশা রইল ভবিষ্যতে আরো সমৃদ্ধ হয়ে পরিপূর্ণ শিল্পী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে প্রান্তিকা ও অনির্বাণ৷
অমিয়রঞ্জনের জন্মদিনে
বিষ্ণুপুর ঘরানার কিংবদন্তী কন্ঠসংগীত শিল্পী ও গুরু সঙ্গীতাচার্য পন্ডিত অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় আটানব্বই পূর্ণ করলেন, ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখে৷ তবে বেশ কয়েক সপ্তাহ পরে এই উদযাপন অনুষ্ঠানটি হলো সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা মঞ্চে৷ এক বিশিষ্ট শাস্ত্রীয় সন্ধ্যার মাধ্যমে৷
অনুষ্ঠান শুরু হয় আচার্য পুত্র ও কন্ঠশিল্পী শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাগত সম্ভাষণ এবং শুভকামনা মাধ্যমে৷ তিনি উপস্থিত দর্শকদের প্রতি অনুষ্ঠান বিষয়ে বার্তা দিলেন আর কামনা করলেন পণ্ডিত অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের শতবর্ষ উদযাপনের আগাম ঘোষণা করে৷ যেটি আগামী ২০২৬ সালে করা হবে৷
গানপর্বের সূচনা হলো শিষ্য সমুদ্ধ চট্টোপাধ্যায়ের গুরুবন্দনাতে৷ এরপর শ্রী রাগে আধারিত ও নিজ রচিত বন্দিশ (ত্রিতালে) শোনান৷ তবলায় সুসঙ্গত করেন নবারুণ কুমার দত্ত৷ বর্তমানে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ও সঙ্গীতাচার্যের কাছে চল্লিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তালিম প্রাপক সংগ্রামী লাহিডি়র পরের নিবেদন ছিল রাগ পুরিয়া ধানেশ্রী৷ দুটি সুপরিচিত বন্দিশ নিবেদনের পর চয়ন করেন রাগ হিন্দোল৷ তবলা ও হারমোনিয়ামে সহযোগ প্রদান করেন— গোবিন্দ চক্রবর্তী ও হিরন্ময় মিত্র৷
তাঁর জন্মদিন উদযাপন, আর তিনি গাইবেন না সেটা যেন অকল্পনীয়! তবে বিভিন্ন অভ্যাগত ও ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে তাঁকে নানাবিধ উপহার প্রদান পর্বটি ছিল প্রথমে৷ এরপর তিনি শোনালেন রাগ বেহাগ আধারিত দুখানি বন্দিশ (বিলম্বিত— ‘ক্যায়সে সুখ সোবে’, দ্রুত- ‘ইতনি অরজ মোরি’)৷ অসম্ভব ভালোলাগা এই পরিবেশনের পর গাইলেন রাগ যোগ বন্দিশ ‘সাজন মোরে ঘর আয়ে’৷ উপভোগ্য এই পর্বের সহযোগতায় ছিলেন সৌমেন নন্দী (তবলা) ও শুভ্রকান্তি চ্যাটার্জি (হারমোনিয়াম)৷ এই সান্ধ্য অনুষ্ঠানের সমাপন ঘটান বেনারস ঘরের বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত সমর সাহা৷ প্রথামাফিক বেনারসী স্টাইলে শুরু করেন৷ তারপর একে একে বেশ কয়েক প্রকারের কায়দা, রেলা, টুকরা, চক্রাদার ইত্যাদি পরিবেশন করেন৷ শেষ করলেন একটা চলন বাজিয়ে৷ মনোমুগ্ধকর এই পর্বের নগমা সহযোগে ছিলেন হিরণ্ময় মিত্র৷ অনুষ্ঠানের বিন্যাস ও সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন— মেঘনা নন্দী৷
শান্তি ও সংহতি
রামকৃষ্ণ মিশনের বিবেকানন্দ হলে অনুষ্ঠিত হলো ‘পিস্ অ্যান্ড হারমনি’ শীর্ষক গানের অনুষ্ঠান৷ ভক্তিগীতি ও কাজী নজরুল ইসলামের গান পরিবেশন করেন আশিস চ্যাটার্জি৷ তাঁর কন্ঠের পরিবেশিত— ‘শ্মশানে জাগিছে শ্যামা মা’, ‘হে গোবিন্দ রাখো চরণে’, ‘মহাবিদ্যা আদ্যাশক্তি’ ইত্যাদি পরিবেশনাগুলি ছিল মনোগ্রাহী৷ এরপর ছিল বিশিষ্টজন সংবর্ধনা পর্ব৷ এবার আবার গান-বাজনার অনুষ্ঠানে ফেরত আসা৷ গিমা পুরস্কার বিজয়ী ও বিশিষ্ট তবলাবাদক পণ্ডিত প্রদু্যত মুখার্জি এককে তবলাতে বাদন উপস্থাপন করেন৷ ট্রেনের ট্র্যাকে দুটি ট্রেন পাশাপশি চলার শব্দ, নাকাড়া ঢাকের আওয়াজ বের করা ইত্যাদি পরিবেশন করলেন৷ শেষ লগ্নে ছিল মাইহার ঘরের বিশিষ্ট বাজিয়ে পণ্ডিত পার্থ বোসের সেতার পরিবেশনা পর্ব৷ তিনি শান্তিধ্বনি আশ্রিত রাগ গাওতি চয়ন করেন৷ প্রথমে ছিল আলাপ— জোড় ও ঝালা৷ পরে যথারীতি ছিল গতকারি৷ বিলম্বিত গত(ত্রিতাল, মধ্যলয়ে গত (একতাল) ও দ্রুতে গত (ত্রিতাল)৷ এরপর শৃঙ্গার ধুন আশ্রিত মিশ্র পিলু রাগ নির্বাচন করেন৷ আওচার ও পরে দাদরাতে অনন্য ধুন৷ উপভোগ্য এই পর্বে তবলায় মনোজ্ঞ সহযোগ প্রদান করেন পন্ডিত প্রদু্যত মুখার্জি৷ সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা ও বিন্যাসে ছিলেন সুদীপ্ত মিত্র ও শুভদীপ চক্রবর্তী৷
এই সন্ধ্যার যৌথভাবে আয়োজন করেছিল রিদম এক্সপ্রেস গ্লোবাল আর্ট প্রেসেন্টার (কলকাতা) ও কল্যাণী রায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট৷
পঞ্চ কবি স্মরণ
গত ১৫ ই এপ্রিল বহরমপুর রবীন্দ্র সদনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল কথায় ও গানে পঞ্চকবি স্মরণ৷ আয়োজনে প্রাইস বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সহযোগিতায় ‘আমরা মন ভাসি’৷
মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৭২ জন এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন৷পঞ্চকবি-এর পাঁচটা গানের মাধ্যমে বাংলা শুভ নববর্ষকে স্বাগত জানানো হয়, এই অনুষ্ঠানটি মুর্শিদাবাদ জেলার জনমানসে বিপুল সাড়া ফেলে৷ মুর্শিদাবাদ জেলায় অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এই পঞ্চকবি -এর গান মানুষের মনে আনন্দ সঞ্চার করে৷
পরবর্তী অনুষ্ঠানটি হয় বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের নৃত্যানুষ্ঠান দিয়ে, অত্যন্ত সুন্দর ভাবে এরা নৃত্য পরিবেশন করেন৷ এরপর সেই বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের এক অভিভাবিকা প্রাইস এর পক্ষ থেকে বহরমপুর রবীন্দ্র সদনকে একটি হুইল চেয়ার প্রদান করেন কারণ বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের সুবিধার জন্য৷ অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্ব শুরু হয় বাংলাদেশের শিল্পীদের সংগীতের মাধ্যমে৷বাংলাদেশ থেকে উপস্থিত থাকেন শিল্পী সুরাইয়া পারভিন ও মাএশা সুলতানা উরবি৷ সুন্দর তাঁদের পরিবেশনা বিশেষত মাএশা অত্যন্ত প্রতিভাময়ী উদীয়মান শিল্পী৷ তাঁর সুললিত কন্ঠ দর্শকদের মন জয় করে৷
প্রথম পার্থ
আগামী সাতাশ এপ্রিল, বিড়লা অ্যাকাদেমি প্রেক্ষাগৃহে মঞ্চস্থ হতে চলেছে শৌভিক মজুমদার সম্পাদিত, আবহ পরিচালিত বুদ্ধদেব বসুর কাহিনি অবলম্বনে নাটক ‘প্রথম পার্থ’৷পাঠাভিনয়ে কর্ণর চরিত্রে শৌভ্কি মজুমদার, দ্রৌপদীর চরিত্রে ইনা বাগচীসহ সুপ্রিয় দাস, সুমনা সেন গুঁই, বিকাশ মিত্র৷ এছাড়াও গান, আবৃত্তি এবং নাচের মাধ্যমে ‘কুশীলব’ সংস্থাটি তাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপিত করবে৷
অপূর্ব কবির জন্মদিনে
কবি শ্যামলকান্তি দাশ তাঁর সমকালীন কবির সম্পর্কে লিখেছেন ‘কী করে লিখলে এত মজাদার লেখা/ কীভাবে আঁকলে এত মনকাড়া ছবি / তুমি ছিলে এক বিচিত্র কারিগর–/ স্বপ্নে রঙিন অপূর্ব এক কবি!’ তিনি অপূর্ব দত্ত৷ প্রয়াত প্রাবন্ধিক ড. অরুণ কুমার বসু লিখেছিলেন ‘যোগীন্দ্রনাথ সরকার থেকে সুনির্মল বসুর বনেদি এক্সপ্রেস ট্রেনের সর্বশেষ বড় স্টেশনের নাম অপূর্ব দত্ত৷’ ছোটদের লেখাতেই বেশি পরিচিত, লিখেছেন বড়দের জন্যও৷ শিশু সাহিত্যের জন্য পেয়েছেন বাংলা আকাদেমির ‘অভিজ্ঞান স্মৃতি পুরস্কার’৷ প্রয়াত এই কবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে কথাশিল্প আবৃত্তি চর্চাকেন্দ্র এক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল নদিয়ার ধুবুলিয়াতে৷ কবির সম্পর্কিত আলোচনায় ছিলেন পীতম ভট্টাচার্য৷ ‘কথাশিল্প’-এর প্রায় কুডি়জন শিক্ষার্থী তাঁর কবিতার আবৃত্তি করে শোনায়৷
তাঁর জন্মদিনে তাহেরপুরের খোলাচিঠি পত্রিকা তাঁদের ফেসবুক পেজ থেকে অপূর্ব দত্তর কবিতার আবৃত্তির ভিডিও পরিবেশন করে৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের আবৃত্তিশিল্পীরা এই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন৷
বিশ্ব শিল্পকলা দিবস
প্রতি বছর পনেরো এপ্রিল বিশ্বজুডে় লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জন্মদিন উপলক্ষে পালিত হয বিশ্বশিল্পকলা দিবস৷এই উপলক্ষে বৃহত্তর সমাজে শিল্পচেতনা এবং নান্দনিক বিকাশ এবং শিল্পচর্চার উন্নত পরিবেশ গঠন করাই এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য৷ বিশ্বশিল্পকলা দিবস পালনের জন্য ঠিক তার আগের দিন অর্থাৎ চোদ্দ এপ্রিল নববর্ষের সকালে গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট -এর সামনে থেকে ললিতকলা আকাদেমি হয়ে দেশপ্রিয় পার্ক পর্যন্ত এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল৷আর্টিস্ট ফোরাম অফ বেঙ্গল -এর পক্ষ থেকে৷এই পদযাত্রায় অংশ নিয়েছিলেন যোগেন চৌধুরী, সমীর আইচ, আদিত্য বসাক, চন্দ্র ভট্টাচার্য, ছত্রপিত দত্তসহ আরও অনেকে৷ সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা লোকশিল্পী, চিত্রগ্রাহক, বিভিন্ন শিল্প শিক্ষাকেন্দ্র এবং শিল্পকলা সংগঠনের সদস্যরা, কুমোরটুলির মৃত্তিকাশিল্পী এবং শিল্পানুরাগী বহু ব্যক্তি৷
আলপনা শিল্প
সম্প্রতি এক আলপনা শিল্পের অভিনবত্ব দেখে মুগ্ধ হলেন কৃষ্ণনগরবাসী৷ যার আয়োজক ছিল কৃষ্ণনগর চারুকলা সোসাইটি৷ বিশ্বশিল্পকলা দিবসে সংস্থার এই উদ্যোগ এবার ষষ্ঠবর্ষে পড়ল৷ এবার শিল্পীরা বেছে নিয়েছিলেন কৃষ্ণনগরের পুতুলপট্টি অর্থাৎ ঘূর্ণি৷ প্রায় সত্তর-আশিজন সমমনস্ক শিল্পীরা আলপনা দিলেন৷ বড়দের সঙ্গে খুদেরাও আলপনার টানে হাত লাগালো৷ হাত লাগালেন অন্দরে থাকা গৃহবধূ, বাডি়র অভিভাবক এমনকী পথচলতি মানুষজনও৷ মোটিফ হিসেবে শিল্পীরা বেছে নিয়েছিলেন মাছ, হাতি, মথ, কাঁকড়াবিছে, ফুল, শামুক, নৌকো ইত্যাদি৷ কৃষ্ণনগরের যেসব বিখ্যাত মৃতি্শল্পীরা সারারাত ধরে এই আলপনাশিল্পীদের উৎসাহ দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন সুবীর পাল, তডি়ৎ পাল, মৃগাঙ্ক পাল, সোনালী মিত্র পাল, সঞ্জয় সরকার প্রমুখ৷ শিল্প ও শিল্পীর স্থান কৃষ্ণনগর৷ কৃষ্ণনগরে এই আলপনা শিল্পের উপস্থাপনা আসলে এখানকার নান্দনিক মুক্তিযাত্রারই অঙ্গ৷ যা আরও সমৃদ্ধ করল কৃষ্ণনগরকে৷
ভোট প্রচার
আমরা আপনার সঙ্গে আছি, ছিলাম এবং থাকব–
আপনারা তো জানেন সবটা, আমরাই ভালো রাখব৷
জল পাচ্ছেন, পোস্টে আলো, রাস্তা পুরো ঢালাই —
আমরা থাকলে উড়বে স্বপ্ন, সবাই খাবেন মালাই৷
মুখে যেটা বলি আমরা, করে দেখাই কাজে —
নিন্দে মন্দে কান দেবেন না, মিডিয়া বকে বাজে৷
বিরোধীরা তো আসে ভোটে, আমরা করি কাজ,
এক্সিট পোল সাজানো মিথ্যে, ভুয়ো নাটুকে সাজ৷
কে কোথায় দেবেন ভোট, পাচ্ছি সবের গন্ধ–
কড়া নজর রাখছি আমরা, ভাববেন না অন্ধ৷
করজোডে় বুঝিয়ে গেলাম, পারলে ভালো বুঝতে–
ভোটের ফলে মাপবো সবটা, বিরোধী হবে খুঁজতে ৷
উপর-নিচ সব আমাদের, জানাই নমস্কারে ৷
ভোটের ফল ফিরিয়ে দেব, ফিরতি পুরস্কারে ৷
— প্রীতম কাঞ্জিলাল