• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

শিষ্যের মাধ্যমে গুরুর ঈশ্বরদর্শন

গুরু শিষ্যকে কিংবা শিষ্য গুরুকে কেহই পরিত্যাগ করতে পারবে না , এটা স্বামী - স্ত্রী বন্ধনের মতো। শরীরের সঙ্গে আমরা যেমন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকি

শিবশঙ্কর দাস সতী স্ত্রী যেমন স্বামীর অনুগত হয় , সর্ব কার্যেই স্বামীকে সামনে রেখে অগ্রসর হয় তেমনি পরমার্থ লাভ করতে গেলে শিষ্যকে গুরুগতপ্রাণ হয়ে থাকতে হবে। আমাদের ঠাকুর সীতারাম ওঙ্কারনাথ ছিলেন গুরুগত প্রাণ।

গুরু শিষ্যকে কিংবা শিষ্য গুরুকে কেহই পরিত্যাগ করতে পারবে না , এটা স্বামী – স্ত্রী বন্ধনের মতো। শরীরের সঙ্গে আমরা যেমন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত থাকি , শ্রীগুরুদেবের সঙ্গেও যোগাযোগ সেইরূপ হওয়া প্রয়োজন।

শ্রীগুরুদেব যা আদেশ করেন তা ভালমন্দ বিচার না করে নির্বিচারে তাঁর আদেশ পালন করতে হবে। এইভাবে শ্রীগুরুদেবের সমস্ত আদেশ শিরোধার্য করে জীবনের পথে চলতে হবে তবেই তিনি সঠিক রাস্তার সন্ধান দেখিয়ে দেবেন।

পরমার্থ লাভ করতে হলে সদগুরুর অবশ্যই প্রয়োজন , তিনি ধর্মের সিঁড়িতে ক্রম ধরে উঠিয়ে দেবেন। তখনই আমরা সঠিক জ্ঞান ও সঠিক রাস্তার সন্ধান পাব। এটাই হল শ্রীগুরুদেবের সঙ্গে শিষ্যের সম্পর্ক।

ঠাকুর সীতারাম দাস ওঙ্কারনাথ দেব তাঁর গুরুদেব শ্রী শ্রী তুলসীদাস দাশরথিদেব যোগেশ্বরের নিকট ৬ বছর বয়সে দিগসুই গ্রামের গুরুর নিকট টোলে পাঠগ্রহণ ও নিত্য গুরুসেবা ও তাঁর নিকট দীক্ষান্তে সাধনভজনে দিন অতিবাহিত করতেন।

এই প্রকার চলার পর যখন ঠাকুর সীতারাম দাস ওঙ্কারনাথ দেবের ২৬ বছর বয়সে একদিন দোলপূর্ণিমার দিন ডুমুরদহে সাধনকালে বহু প্রকার নাদ জ্যোতির মধ্যে তাঁর পূর্ণতাপ্রাপ্তি অবস্থা হয় এবং ভগবৎ সত্ত্বায় তিনি সব সময় মগ্ন থাকতেন।

এমতাবস্থায় তিনি কিছুদিন পর ঠাকুর ওঁঙ্কারনাথ দেব দিগসুই গুরুবাড়ি গেলে সেখানে তিনি তাঁর গুরুদেব দাশরথিদেব যোগেশ্বরকে এবং তাঁর পত্নীকে ইষ্টদর্শন করান । কেবলমাত্র ইষ্টশনে শ্রীগুরুদেব সন্তুষ্ট না থাকতে পেরে শিষ্যকে বিশ্বরূপ দর্শন করাতে বলেন।

ঠাকুর ওঁঙ্কারনাথ দেব তাঁর গুরু ও গুরুপত্নীকে বিশ্বরূপ দর্শন করান। শ্রী শ্রী ঠাকুরের প্রকটকালে এই বিশ্বরূপ দর্শনের ঘটনা প্রকাশ করা নিষিদ্ধ ছিল , তাই সে সময় শ্রী শ্রী ঠাকুরের কোনও জীবনীতেই এই ঘটনার কথা উল্লেখ নেই।

দ্বাপরের শেষ ভাগে শ্রী ভগবান তিনবার বিশ্বরূপ দর্শন করান , প্রথমে মা যশোদাকে মুখাভ্যন্তরে খেয়ে ফেলা মাটি দেখানোর ছলে , দ্বিতীয় কুরুসভায় দুর্যোধন , ধৃতরাষ্ট্র , ভীষ্ম , দ্রোণ , বিদুরের সম্মুখে শান্তিরক্ষার দৌত্যকর্মে উপস্থিত থাকা কালে , আর তৃতীয় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময়ে অর্জুনের রথে গীতোক্ত স্বরূপ উপদেশকালে এরপর সুদীর্ঘ পঞ্চসহ অধিক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।

ভারতে বহু উচ্চকোটির সাধক অবতার লীলা করেছেন। তাঁদের জীবন আলোচনা করলে শ্রী ভগবানের বিশ্বরূপ দর্শনের কথা শোনা যায় না। ঠাকুর ওঙ্কারনাথ দেবের গুরুদেবকে বিশ্বরূপ দর্শন কলির সর্বপ্রথম একমাত্র অনন্য অনবদ্য ঘটনা।