দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষেরা যখন ক্ষয়ক্ষতির হিসাবনিকাশে বসল, তখন দেখা গেল সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে মানবাধিকার। এর আগে গঠিত হয়েছে বিশ্ব রাষ্ট্রসংঘ। রাষ্ট্রসংঘ মানুষের মানবাধিকার রক্ষার জন্য ১৯৪৮ সালের ১০ ই ডিসেম্বর ঘােষণা করে ৩০ দফা দাবি সম্বলিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদ।
এই সনদের ১ নং ধারাতেই বলা হল- বাঁচার অধিকার ও স্বাস্থ্যের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। ভারত অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ হলেও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে আমাদের দেশে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, যা আজও চলছে। সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ১৯৬৭-১৯৭৭, অসংখ্য মানুষ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ বিনা কারণে জেল খেটেছে।
আজও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরাম নেই, মানুষ নিজের অধিকারের কথা বলতে গেলে রক্তাক্ত হচ্ছে। বিগত সাত মাস ধরে মানুষের স্বাস্থ্যের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। করােনায় আক্রান্ত হয়ে শয়ে শয়ে মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। সরকারি হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে যাবার পথে রাস্তায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। অ্যাম্বুলেন্স দশ হাজার / বারাে হাজার টাকা ভাড়া চেয়েছে। যারা দিতে পারেনি বিনা চিকিৎসায় বাড়িতে মারা গেছে।
সরকার অনেক বড় বড় কথা বললেও কোনাে অ্যাম্বুলেন্স চালকের বিরুদ্ধে কোনাে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ঘােষণা করেছিলেন নার্সিং হােম, বেসরকারি হাসপাতাল বিনা পয়সায় চিকিৎসা করবে কেউ করেনি।
উল্টে যারা গেছে তাদেরকে অন্য হাসপাতালে রেফার করে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছে। যাদের ভর্তি করেছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল করেছে। সংবিধানের ২১ নং দারা অনুযায়ী বাঁচার অধিকার ও স্বাস্থ্যের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। বিগত সাত মাস ধরে ব্যাপক হারে মানুষের এই অধিকার হরণ হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এত বড় মানবাধিকার লঙঘন আর হয়নি। আমরা ইনসাফ চাই, সামাজিক ন্যায় বিচার চাই।