• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

নাবালিকাকে গণধর্ষণে মামা-ভাগ্নের সশ্রম কারাদণ্ড

এই রায়ে খুশি নির্যাতিতার পরিবার-পরিজন সহ তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহপাঠীরা। বর্তমানে ওই নাবালিকা সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে এবং একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি (File Photo: thestatesman.com)

নাবালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় দুই অভিযুক্তের কঠিন সাজা। অভিযুক্তদের ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা (অনাদায়ে আরও ৬ মাসের জেল) ঘোষণা করলেন মেদিনীপুর জেলা আদালতের পকসো কোর্টের বিচারক আশুতোষ সরকার। অপরাধীরা সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর দু’জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাজা ঘোষণা করা হয়।

২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনি থানা এলাকায়। সেদিন দুপুরে মামা-ভাগ্নে মিলে গিয়েছিল এক আত্মীয়ের বাড়িতে। শালবনি থানার অধীনে ওই এলাকায় চলছিল গ্রামীণ মেলা। সম্পর্কে পিসতুতো বোনকে মেলা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সন্ধেয় বাড়ি থেকে বেরোয় সুশান্ত মানা (২৮)। সঙ্গে ছিল তার ভাগ্নে ললিত মানা (২২)। এর পরই খাওয়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে তারা নির্যাতিতাকে বাইকে চাপিয়ে একটি খালের ধারে নিয়ে যায়। সেখানেই ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করে মামা-ভাগ্নে। শুধু তাই নয়, বাড়িতে কাউকে বললে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়।

ঘটনার পরের দিন থেকেই মেয়েটি অসুস্থ হয়ে পড়ে। এভাবে প্রায় ৩-৪ মাস ধরে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ত নির্যাতিতা। পরে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং বাড়ির লোকজন বার বার প্রশ্ন করায় অবশেষে ২০২২ সালের ১৬ জুন বাবা-মাকে সাহস করে সব কিছু বলে দেয় নাবালিকা ছাত্রী। ওই দিনই নির্যাতিতার বাবা-মা শালবনী থানায় এফআইআর দায়ের করেন।

নাবালিকাকে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টাসহ একাধিক পকসো ধারায় মামলা রুজু হয় সুশান্ত মানা এবং ললিত মানার বিরুদ্ধে। অভিযোগ পাওয়ার পরের দিনই অর্থাৎ ১৭ জুন এই মামলার আইও তথা পিড়াকাটা পুলিশ পোস্টের তৎকালীন ইনচার্জ সুদীপ করের নেতৃত্বে পুলিশকর্মীরা শালবনি থানারই একটি এলাকা থেকে নির্যাতিতার মামাতো দাদা তথা মূল অভিযুক্ত সুশান্তকে গ্রেপ্তার করেন। ১৮ জুন ঝাড়গ্রাম জেলার মানিকপাড়া থানার একটি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ললিত মানাকে। জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত প্রক্রিয়ায় আইও-র কাছে সব কিছুই স্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করেন। ওই খালের ধার থেকে অভিযুক্তদের জুতোও পাওয়া যায় বলে জানান এসআই সুদীপ কর। মেডিক্যাল রিপোর্টও অপরাধীদের বিপক্ষে যায়।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই মামলার চার্জ গঠন হয়। অবশেষে প্রায় ২ বছরের মাথায় অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বৃহস্পতিবার দু’জনেরই ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেয় পকসো আদালতের বিচারক আশুতোষ সরকার। এই রায়ে খুশি নির্যাতিতার পরিবার-পরিজন সহ তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং সহপাঠীরা। বর্তমানে ওই নাবালিকা সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে এবং একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে বলে জানা গিয়েছে।