পাকা নর্দমা করা নিয়ে বিবাদ। বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের পিয়ারবেড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকাই গ্রামে চলল গুলি। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠী সংঘর্ষে জখম হয়েছেন দলেরই বুথ সভাপতি। জখম তৃণমূল নেতার নাম নাসিম শেখ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ভর্তি রয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে সোনামুখী থানার পুলিশ খালি কার্তুজ ও একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল থেকে এলাকায় ড্রেন তৈরির কাজ চলছিল। সেই সময় একদল দুষ্কৃতী কাজে বাধা দেয়। প্রশাসনের তরফে ড্রেন তৈরির কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। বিকেলে আচমকাই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কার্যত সংঘর্ষ বেঁধে যায়। অভিযোগ, স্থানীয় এক ব্যক্তি বন্দুক বার করে গুলি ছুড়তে শুরু করেন। মোট দুই রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। এর মধ্যে একটি গুলি লাগে তৃণমূলের চকাই গ্রামের বুথ সভাপতি নাসিম শেখের পেটে।
গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে সোনামুখি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। গুলিবিদ্ধ বুথ সভাপতি নাসিম শেখ বলেন, একটি ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছিল। ওরা বেআইনিভাবে করতে চেয়েছিল। আমি বাধা দিই। তাহিমুদ্দিন হাজারি ওরফে ডেয়ার হাজারির নেতৃত্বে কয়েকজন হামলা চালায়। আগেও আমাকে অনেকবার প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
গুলিবিদ্ধ তৃণমূল বুথ সভাপতির ছেলে বলেন, নর্দমা করা ঝামেলা হয়। আমার বাবাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জন্যেই এটা হয়েছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, চকাই গ্রামে ড্রেন কাটাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে একটা ঝামেলা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দু’পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। একজনের শরীরে গুলি লেগেছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি।
সোনামুখির বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেন, গোটা রাজ্য জুড়েই এসব হচ্ছে। আজকে সোনামুখীর ঘটনা আবারও প্রমাণ করল রাজ্যে অরাজকতা চলছে। তৃণমূলের লোক নিজেদের মধ্যেই ঝামেলা করছে। বিষ্ণুপুর এসডিপিও সুপ্রকাশ দাস বলেন, চকাই গ্ৰামে মারপিটের ঘটনা ঘটে। একজন জখম হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক বিজেপির মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, তৃণমূল মানেই কাটমানি, দুর্নীতি। ওদের সবসময় লক্ষ্য থাকে, কীভাবে নিম্নমানের কাজ করে টাকা লুট করা যায়। আর এসব নিয়েই তাঁদের মধ্যেই অশান্তি। গুলি চালানোর বিষয়টি নতুন কিছু নয়। পুলিশ ঠিকঠাক ভাবে যদি কাজ করে তাহলে ওদের কাছ থেকে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র পাবে।