ফের পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করলেন ১০ জন কাউন্সিলর। রীতিমত সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে একের পর এক কাগজ দেখিয়ে আর্থিক তছরুপ ও স্বজন পোষণের অভিযোগ তুললেন ১০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। নদিয়ার গয়েশপুর পৌরসভার ঘটনা।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। গয়েশপুর পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ফুটপাথ তৈরিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পৌরসভার উন্নয়নের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ওই ওয়ার্ডের এক মহিলা তৃণমূল কাউন্সিলরকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে পৌর প্রধানের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। যদিও ওই মহিলা কাউন্সিলরের দাবি ছিল, ওয়ার্ক অর্ডার ছাড়াই অবৈধভাবে ফুটপাথের কাজ করছেন পৌর প্রধান। এরপরই শনিবার পৌর প্রধানের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ ও স্বজন পোষণের অভিযোগ তুলে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন গয়েশপুর পৌরসভার ১০ জন তৃণমূল কাউন্সিলর।
এই প্রসঙ্গে গয়েশপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মরণ কুমার দে অভিযোগ করে বলেন, ৬ মাস কোনো বোর্ড মিটিং হয়নি। মোট ৪ কোটি ১২ লাখ টাকার কাজ একই সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে ওয়ার্ক অর্ডার। যা পুরোটাই বেআইনি। সবটাই করেছেন পৌরপ্রধান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যেখানে বোর্ড মিটিং হয়নি, সেখানে টেন্ডার হল কী করে?
বোর্ড মিটিং ছাড়া টেন্ডার পাশ হতে পারে না।
একই অভিযোগ তোলেন গয়েশপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মানিক পাল ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কৌশিক ঘোষ।
কৌশিক ঘোষ অভিযোগ তুলে বলেন, যে ওয়ার্ক অর্ডার পৌরপ্রধান দিয়েছেন সেটিতে কোনো ল্যান্ডমার্ক নেই। এমনকি পৌর আইন অনুযায়ী যে ওয়ার্ডে কাজ হবে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে বিষয়টি জানানো এবং ওয়ার্ক অর্ডার দেখানো বাধ্যতামূলক। পৌর প্রধান সেটি করেননি। সরকারি টাকা তছরুপ করছেন পৌর প্রধান। মহিলা কাউন্সিলরকে হেনস্থা যথেষ্ট নিন্দনীয় ঘটনা। পৌরপ্রধান দলের ভালো চান না। কোনো দায়বদ্ধতা নেই। দলকে জানানো হয়েছে। দল হস্তক্ষেপ করবে বলে কৌশিক জানান।
যদিও শুক্রবার রাত থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভর্তি রয়েছেন গয়েশপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সুকান্ত চ্যাটার্জি। তাই তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে এই প্রসঙ্গে রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি দেবাশীষ গাঙ্গুলি জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় না। পৌর আইন অনুযায়ী কাজ হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। পরবর্তীতে দলের উচ্চতর নেতৃত্ব সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে গয়েশপুর পৌরসভার পৌরপ্রধান সুকান্ত চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তুলে অনাস্থা এনেছিলেন এই কাউন্সিলররাই। এই মুহূর্তে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার গয়েশপুর পৌরসভা।