অশোকনগরে এক বাড়ি থেকে মিলল দম্পতি সহ সন্তানের ঝুলন্ত দেহ! হতবাক প্রতিবেশীরা

প্রতীকী ছবি (File Photo: iStock)

দিল্লির বুরারি কাণ্ডের ছায়া উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে! সন্তান সহ স্বামী, স্ত্রীর দেহ উদ্ধার হল ঘর থেকে। শুক্রবার দুপুর নাগাদ ঝুলন্ত অবস্থায় তিনজনের দেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো অশোকনগরের নবপল্লি এলাকায়। প্রাথমিক অনুমান, মেয়েকে নিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। এবার প্রশ্ন হলো, যদি আত্মহত্যাই করে থাকে ওই পরিবার তাহলে কী কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা? পাড়া-পড়শিদের একই বক্তব্য, পরিবারে কোনও অশান্তিই ছিল না। তাহলে আত্মহত্যার নেপথ্যে কি অন্য কোনও কারণ?

যদিও একটি সুইসাইড নোট মিলেছে ওই ঘর থেকে। দিল্লির বুরারি কান্ড যেন জ্বলজ্বল করছে চোখের সামনে। যেখানে এক পরিবারের ছ’জন একসঙ্গে আত্মহত্যা করেছিলেন। ঠিক তেমনই ঘটনা ঘটলো অশোকনগরে। এবার ওই পরিবারের পরিচয় দেওয়া যাক। অশোকনগরের নবপল্লিতে প্রায় ৬ বছর ধরে বাস করেন দীপক রায়ের পরিবারের। বছর তেতাল্লিশের দীপক রায় একটি প্লাইউড কারখানায় কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী প্রিয়া ও ১০ বছরের মেয়ে মিষ্টিকে নিয়েই ছিল তাঁদের সংসার। প্রতিবেশীদের দাবি, মোটের উপর ভালোই কাটছিল তাঁদের দিন। পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু শুক্রবার সকালে তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হল তিনজনেরই ঝুলন্ত দেহ। গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তিনজনকে দেখতে পান প্রতিবেশীরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করেছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মেয়েকে মেরে দম্পতি আত্মঘাতী হয়েছেন।

পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনটি দেহ উদ্ধার করে। সেগুলি ময়নাতদন্তের জন্য অশোকনগর হাসপাতালে পাঠায়। পরে সেখানে যান হাবরা এসডিপিও প্রসেনজিৎ দাস, সিআই সন্দীপ ঘোষ, অশোকনগর থানা ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চিন্তামণি নস্কর সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোটও। সেখান থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঋণের বোঝার জন্য আত্মঘাতী হয়েছেন। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, সন্তানকে মারার পরে দম্পতি আত্মঘাতী হন। প্রতিবেশী ভবতোষ পাণ্ডে, বলাই দে-রা বলছেন, এই পরিবার খুব মিশুকে। কোনও অশান্তি ছিল না।


তবে তাঁদের উচ্চ অংকের ঋণ ছিল। যদিও তা মাসে মাসে শোধ করে দিতেন দীপক। এমনই জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু এই ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত বলে জানাচ্ছেন সকলে। এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, সকালে দীর্ঘক্ষণ বাড়ির দরজা বন্ধ দেখে তাঁরা ডাকতে গিয়েছিলেন। দেখেন, ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। দরজা ভেঙে ঢোকার পর তিনজনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে আঁতকে ওঠেন সকলে। খবর পেয়ে অশোকনগর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে। গোটা পরিবার এভাবে শেষ হয়ে যাওয়ায় মর্মাহত প্রতিবেশীরা। উল্লেখ্য, সুইসাইড নোটের সাথে প্রতিবেশীদের বয়ান মিলে গিয়েছে।