প্রতিবাদের ‘শাস্তি’ মৃত্যু! মহিলাকে পিষল পিকআপ ভ্যান, গ্রেপ্তার চালক

কিছুক্ষণের বচসা-ধস্তাধস্তি। গালিগালাজের প্রতিবাদ করার ‘শাস্তি’ হিসেবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হল এক মহিলাকে। মাঝ রাস্তায় মহিলাকে পিষে দিয়ে বেরিয়ে গেল পিকআপ ভ্যান। রবিবার রাতে নদিয়ার তাহেরপুর থানা এলাকার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই ঘাতক গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাড়িটিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, তাহেরপুর থানা এলাকার শ্যামনগর কামগাছি এলাকার বাসিন্দা সুজন বিশ্বাস। তিনি পেশায় ওষুধ ব্যবসায়ী। কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার জালালখালিতে তাঁর ওষুধের দোকান। প্রতিদিনের মতো রবিবার রাতেও দোকান বন্ধ করে স্ত্রী তন্দ্রা বিশ্বাসকে নিয়ে বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। খামার শিমুলিয়া এলাকা পার হওয়ার পরই রাস্তা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় বাইক থামিয়ে চশমা পরিষ্কার করছিলেন তন্দ্রা বিশ্বাস। আচমকাই হাত ফসকে চশমাটি পড়ে যায়। স্বামী-স্ত্রী মিলেই চশমা খুঁজছিলেন।

সেই সময়ই ওই রাস্তা দিয়ে একটি ইঞ্জিন ভ্যান যাচ্ছিল। বাইকটি রাস্তার মাঝে রাখা থাকায় সেই নিয়ে ভ্যান চালকের সঙ্গে সুজন বিশ্বাসের বচসা শুরু হয়। স্ত্রী তন্দ্রা বিশ্বাসকেও গালিগালাজের অভিযোগ ওঠে চালকের বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদ করতেই দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়।


এরই মাঝে কাউকে একটা ফোন করেন ভ্যান চালক। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখানে পৌঁছয় একটি পিকআপ ভ্যান। সেই গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে সুজন বিশ্বাসকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষের পরিচিতদের মধ্যেও শুরু হয় ধস্তাধস্তি। বেশ কিছুক্ষণ পর তা মিটে গেলে রানাঘাটের দিকে চলে যায় পিকআপ ভ্যানটি। অন্যদিকে কৃষ্ণনগরের দিকে রওনা দেন দম্পতি।

দম্পতি ভেবেছিলেন হয়তো ঝামেলা মিটে গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ দিক পরিবর্তন করে গতি বাড়িয়ে দম্পতির দিকে ছুটে আসে পিকআপ ভ্যানটি। সেই সময় রাস্তায় অনেক লোক ছিল। ভিড়ের তোয়াক্কা না করেই তন্দ্রা বিশ্বাসকে লক্ষ্য করে এগিয়ে আসে গাড়িটি। নিমেষের মধ্যে মহিলাকে পিষে দেয়। গাড়ির তলায় পিষ্ট হন আরও ২ জন। পিকআপ ভ্যানটি ফেলে রেখেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় চালক। স্থানীয়রা ৩ জনকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তন্দ্রা বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

রবিবার রাতেই গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী সুজন বিশ্বাস। পুলিশ জানিয়েছে, পিকআপ ভ্যানের চালকের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িয়ে আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।