চিকিৎসায় ‘গাফিলতি’, প্রসূতি মৃত্যুতে দুর্গাপুরে ধুন্ধুমার

ফের চিকিৎসায় গাফিলতি। প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে ধুন্ধুমার। পরিবারের সদস্যদের বিক্ষোভ, হাসপাতালের দরজায় তালা লাগিয়ে প্রতিবাদ। প্রসবের পর মূত্রথলি কেটে ফেলার কারণেই মৃত্যু তরুণীর, অভিযোগ পরিবারের।

জানা গিয়েছে, ২০ সেপ্টেম্বর প্রসবের জন্য শোভাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ২৮ বছরের ইশরত জাহানকে। দুর্গাপুরের বেনাচিতির মসজিদ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা ইশরত ২১ সেপ্টেম্বর সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময়ই প্রসূতির মূত্রথলি কেটে ফেলেন চিকিৎকেরা। এরপরই তরুণীর মৃত্যুর খবর মেলে। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কখনও বলা হয়, ইশরতের কিডনির সমস্যা দেখা দিয়েছে। আবার কখনও জানানো হয়, রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের গাফিলতি আড়াল করতেই একের পর এক অজুহাত দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। এরপর শনিবার সন্ধেয় জানানো হয়, তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।

ইশরতের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। হাসপাতাল চত্বরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গেও মৃতার পরিজনদের ধস্তাধস্তি হয় বলে জানা গিয়েছে। এরপর নামানো হয় কমব্যাট ফোর্সও। পুলিশকে উপেক্ষা করেই বিক্ষোভে অনড় পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসকদের উপযুক্ত শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণ না মেলা পর্যন্ত ধরনা চলবে বলে জানান পরিজনেরা।


মৃতার মায়ের দাবি, ‘সন্তান জন্ম দেওয়ার পরই মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভালো করে কথাও বলতে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসকদের শাস্তি চাই।’ পরিবারের সদস্যদের আরও দাবি, ইশরাতের আরও দুই সন্তান রয়েছে। তাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।

যদিও পরিবারের অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি, চিকিৎসকদের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল না। তরুণীর আরও অনেক রোগ ছিল। যার জেরেই মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি হাসপাতালের চিকিৎসকদের। রবিবার সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা জারি ছিল হাসপাতাল চত্বরে। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। ঠিক কী কারণে মৃত্যু, আদৌ মৃত্যুর নেপথ্যে হাসপাতালের কোনও গাফিলতি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।