চলতি আর্থিক বছর প্রায় শেষের মুখে, আসছে নতুন বছর। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে গ্রাম উন্নয়ন খাতে পূর্ব বর্ধমানের প্রায় দুশোর বেশি পঞ্চায়েত টাকা খরচ করতে পারেনি। এই রিপোর্ট পাঠানো হলো নবান্নে। টাকা খরচ করতে না পারলে ফেরত চলে যাবার সম্ভাবনা ষোল আনা। বিষয়টি নিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পঞ্চায়েতগুলিকে ‘দুর্বল’ বলে তকমা লাগানো হলো। ইতিমধ্যেই দুর্বল পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে জেলাশাসক আয়েষা রানী জরুরি বৈঠকে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা জারি করলেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলার জন্য চলতি আর্থিক বছরে ২১৫টি পঞ্চায়েতের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ওই টাকা সঠিকভাবে গ্রাম উন্নয়নে কাজে লাগানো যায়নি। এমনটাই জানা গিয়েছে প্রশাসনিক সূত্রে। আর এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলাশাসক আয়েষা রানী। সূত্রের খবর এখনও প্রায় ৩০ কোটি টাকা পড়ে আছে তহবিলে। প্রায় দু’শোর বেশি পঞ্চায়েত তো বটেই চার ভাগের এক ভাগ টাকা পড়ে রয়েছে ২০টির বেশি পঞ্চায়েতে। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অবস্থা সামাল দিতে পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন। বৈঠকে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের টাকা থেকে যাওয়াতে নতুন করে টাকা পেতে পঞ্চায়েত গুলোর ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েতগুলিকে দুর্বল তকমা দেবার পাশাপাশি দ্রুত টাকা খরচের জন্য বলা হয়েছে।
এরই মধ্যে যেসব পঞ্চায়েত টাকা খরচ করতে পারেনি, সেগুলির মধ্যে বর্ধমান-১ ব্লক থেকে শুরু করে কালনা, পূর্বস্থলী, আউশগ্রাম, কেতুগ্রাম, রায়না, গলসি, মেমারি, বর্ধমান-২ ব্লকের একাধিক গ্রাম রয়েছে। বেশিরভাগ পঞ্চায়েত ৩০ লক্ষ থেকে শুরু করে গড়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারেনি। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে জানা গেছে চলতি আর্থিক বছরে পূর্ব বর্ধমান জেলার ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ১৮০ কোটি ১৮ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। সেই টাকার মধ্যে চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত খরচ করা হয়েছে ১৫০ কোটি ৯ লক্ষ টাকা। বাকি টাকা খরচের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। জেলা প্রশাসনের তরফে পূর্ব বর্ধমানের সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, সচিব, নির্মাণ সহায়ক, নির্বাহি সহায়কদের ডাকা হয়েছিল বৈঠকে। তবে টাকা খরচের ক্ষেত্রে সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর অধিকাংশ পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বলা হয় কর্মীর সংখ্যা এতটাই কম যে সঠিক সময়ে টাকা খরচ হয়ে উঠেনি। তবে দুর্বল পঞ্চায়েত গুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে বিডিওদের।