চলবে না বুলডোজার, ভাঙবে না মন্দারমণির ১৪৪টি ‘বেআইনি’ভাবে নির্মিত হোটেল! এমনটাই নির্দেশ এলো খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে।
গত ১১ নভেম্বর কোস্টাল রেগুলেটেড জোন(সিআরজেড) ম্যানেজমেন্ট অথরিটির জেলা কমিটি ওই ১৪৪টি হোটেল, রিসর্ট, লজ, হোমস্টে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে ওগুলো ভেঙে ফেলার কথা ছিল। বলা হয়েছিল, ওই ১৪৪টি হোটেল-রিসর্ট মূলত বেআইনিভাবে কোস্টাল রেগুলেশন জোনে গড়ে তোলা হয়েছিল। উপকূলবিধি না মেনে তৈরি হওয়ার জেরে ২০২২ সালে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনাল ওই হোটেলগুলো ভেঙে ফেলার আদেশ দেয়। ভেঙে ফেলার নির্দেশ পাওয়া হোটেলের তালিকার মধ্যে ছিল দাদনপাত্রবাড়ের ৫০টি হোটেল, সোনামুইয়ের ৩৬টি হোটেল, মন্দারমণির ৩০টি হোটেল, সিলামপুরের ২৭টি হোটেল এবং দক্ষিণ পুরুষোত্তমপুরের একটি লজ।
ব্যাপারটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে যাওয়ায় তিনি যারপরনাই বিস্মিত এবং ক্ষুব্ধ হন। তিনি অবিলম্বে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনকে বুলডোজার চালিয়ে হোটেল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেন। তিনি জানান, ‘বুলডোজার কোনও সমাধানের পথ নয়। কোনওরকম বুলডোজার চলবে না।’
নবান্ন সূত্রে খবর, মুখ্যসচিব বা মুখ্যমন্ত্রীকে এত্তালা না দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। রাজ্য প্রশাসনের কোনও শীর্ষ আধিকারিকের কাছেও এই ব্যাপারে কোনও খবর ছিল না। এই কারণে ভীষণই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, প্রতিটি হোটেলে যদি অন্তত ১০ জন করেও চাকরি করে, তবে কমপক্ষে ১৪০০টি পরিবারের ভবিষ্যৎ এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত। এই ভাবে আচমকাই সবাইকে পথে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বরদাস্ত করবেন না তিনি, তা স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
দিঘার পাশাপাশি বর্তমানে মন্দারমণিও পর্যটকদের কাছে এখন একটা ‘হট ফেভারিট’ ডেস্টিনেশন। সপ্তাহান্তের ছুটি কাটাতে অনেকেই চলে যান মন্দারমণি। ফলে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে ওখানে। জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে তাই বিপদের মুখে পড়তেন অনেকেই। ‘মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি মীর মমরেজ আলি জানান, ‘সরকার পক্ষের কাছে আমাদের আবেদন, এত লক্ষ লক্ষ মানুষের রোজগার যাতে না হারায়, তা পুনর্বিবেচনা করে দেখা হোক।’
হোটেল ভাঙার ‘তুঘলকি’ সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ পড়ায় তাই স্বস্তিতে হোটেল ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা, সেই সঙ্গে পর্যটকরাও।