• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

স্ত্রীকে ‘খুন’, মৃত্যুর ‘ভুয়ো’ শংসাপত্র জোগাড় স্বামীর!

অভিযোগ, ময়নাতদন্ত না করেই শনিবার সকালে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল জান্নাতুনের দেহ। তাতেই বাধা দেন জান্নাতুনের বাপের বাড়ির সদস্যরা। এরপরই ইংরেজবাজার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা।

স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জেনে গিয়েছিলেন স্ত্রী। সেই কারণেই কি স্বামীর হাতে খুন হতে হল? মালদহের ইংরেজবাজারের ঘটনা এই প্রশ্নই তুলে দিচ্ছে। জামাইয়ের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে ইতিমধ্যেই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যরা। যদিও তাদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁদের দাবি, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে বধূর। অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগের মাঝে সত্য উদঘাটন করতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ঘটনাটি মালদহের ইংরেজবাজার থানার চণ্ডীপুর এলাকায়। মৃতার নাম জান্নাতুন খাতুন। শনিবার তাঁরই দেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁর বাপের বাড়ির সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, সম্পত্তির লোভ এবং পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই স্ত্রী জান্নাতুনকে খুন করেছেন শেখ চিকু। শুধু তাই নয়, অপরাধ আড়াল করতে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভুয়ো রিপোর্টও বের করেছেন তিনি। রিপোর্ট অনুযায়ী, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে জান্নাতুনের। কিন্তু এই দাবি মানতে নারাজ জান্নাতুনের বাপের বাড়ির সদস্যরা। তাই সঠিক তদন্ত এবং জামাইয়ের শাস্তির দাবিতে ইংরেজবাজার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, আজ থেকে ৯ বছর আগে জান্নাতুন এবং শেখ চিকুর বিয়ে হয়। চিকু শ্রমিকের কাজ করেন এবং জান্নাতুন গৃহবধূ ছিলেন। তাঁদের ৪ বছরের এক কন্যাসন্তানও রয়েছে। কিন্তু জান্নাতুনের বাপের বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের পর থেকেই সম্পত্তির জন্য স্ত্রীর উপর শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার শুরু করেন চিকু। এর পাশাপাশি সম্প্রতি অন্য মহিলার সঙ্গেও তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের কথা জানতে পেরেই প্রতিবাদ করেছিলেন জান্নাতুন। যার জেরে স্বামী-স্ত্রীর বিবাদ আরও বেড়ে যায়।
গত ১৮ জুলাই স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে রাজস্থানের জয়পুর থেকে ঘুরে আসার পরেও অশান্তি কমেনি। পরকীয়া সম্পর্কের পথ থেকে স্ত্রীকে সরাতেই জান্নাতুনকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন চিকু। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য আরও বড় পরিকল্পনা করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভুয়ো রিপোর্ট তৈরি করেন চিকু। সেই রিপোর্টেই জান্নাতুনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গুর কথা উল্লেখ ছিল।
অভিযোগ, ময়নাতদন্ত না করেই শনিবার সকালে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল জান্নাতুনের দেহ। তাতেই বাধা দেন জান্নাতুনের বাপের বাড়ির সদস্যরা। এরপরই ইংরেজবাজার থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। তোলেন ময়নাতদন্তের দাবি। খবর পেয়ে দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য দেহ মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। জান্নাতুনের বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ।