৫৬ বছরে পা দিল কেশপুরের প্রয়াত প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক রজনীকান্ত দলুই-এর শুরু করা দুর্গাপুজো। এ বারের থিম ‘পরিবেশ বাঁচাও’। ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে মণ্ডপ। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
১৯৬৯ সালে প্রথম পুজো শুরু করেন রজনীকান্ত দলুই। তখন ভালো মণ্ডপ, প্রতিমা, আলোকসজ্জা দেখতে গ্রামের মানুষকে বহু দূরে যেতে হত। তাই নিজের উদ্যোগে দাসপুরের লঙ্কাগড়ে বাড়ির সামনেই দুর্গাপুজো শুরু করেন তিনি।
১৯৭২ সাল থেকে টানা ৪ বারের কংগ্রেস বিধায়ক রজনীকান্ত। বরাবরই দাপুটে কংগ্রেস নেতা হিসেবে তাঁর পরিচিতি। তাই তাঁর পুজো জনপ্রিয়তা পেতে খুব বেশি সময় নেয়নি। পুজো শুরুর বছর থেকেই তিনি কুমারটুলি থেকে প্রতিমা, চন্দননগরের আলোকসজ্জা, কাঁথি থেকে মণ্ডপ কারিগর, কলকাতা থেকে যাত্রার দল আনতেন। থাকত আতসবাজির রোশনাই। পুজোর সব খরচও একাই বহন করতেন তিনি। আর অষ্টমীর দুপুরে থাকত এলাহি খাবারের ব্যবস্থা। ১০ থেকে ১২টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ আসতেন রজনীকান্ত দলুইয়ের পুজো দেখতে।
৪ বছর আগে রজনীকান্ত দলুইয়ের প্রয়াণের পর দাসপুরের লঙ্কাগড়, নাড়াজোল, জলহরি, বাছড়াকুণ্ডু, রামদাসপুর, বালিপোতা সহ ১২টি গ্রামের মানুষের পুজো হয়ে উঠেছে লঙ্কাগড় সর্বজনীন দুর্গাপুজো। বর্তমান পুজো কমিটির সম্পাদক সত্যব্রত দলুই জানান, এই পুজোকে ঘিরে মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনা অটুট রয়েছে। পুজো উপলক্ষে ১২টি গ্রামের মানুষ সারা বছর ধরে সঞ্চয় করে রাখেন। পুজোর আগে কেউ ধান, কেউ চাল, কেউ সবজি-ফল আবার কেউ অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন।
এ বারের পুজোতেও একই ছবি। ৬০ ফুট উচ্চতার উল্টানো ধুনুচির আদলে মণ্ডপ। সঙ্গে পরিবেশ রক্ষার বার্তা। সাবেকি প্রতিমা আসছে মেদিনীপুর থেকে। আলোকসজ্জা চন্দননগরের। পুজোর ৫ দিন নাটক, যাত্রা, লোকসঙ্গীত, পুতুল নাচ হয়, মেলা বসে। থাকছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। তাই দাসপুর ১ ব্লকের লঙ্কাগড়ের দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তুঙ্গে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে দূরে সরিয়ে রেখেি লঙ্কাগড়ে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি চলছে জোর কদমে।