বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিধবার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক

বিয়ে ও স্থায়ী চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক বিধবার সঙ্গে দীর্ঘ ন’বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক রাখার পরেও, ওই বিধবার স্থায়ী চাকরি যেমন হয়নি তেমনি, তাঁকে বিয়েও করেননি এক প্রধান শিক্ষক। শেষ পর্যন্ত ওই বিধবা পুলিশের কাছে ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে’ বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরই ওই প্রধান শিক্ষক বেপাত্তা হয়ে গিয়েছেন। অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষক মহম্মদ শহিদুল্লাহ বীরভূমের পাইকর থানার মুরারই-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায়, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলাও শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই প্রধান শিক্ষক যদি এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁর কঠোর শাস্তি হওয়া দরকার।

বছর নয়েক আগে ওই মহিলার স্বামী মারা যাওয়ার পরই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা ওই বিধবাকে বিয়ে করার এবং শিক্ষিকার চাকরিতে স্থায়ী করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করতে থাকেন। ওই পার্শ্বশিক্ষিকার বাড়িতেই নিয়মিত যেতেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মহম্মদ শহিদুল্লাহ। ওই বিধবা এক সময় গর্ভবতী হলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তাঁর গর্ভপাতও করান বলে অভিযোগ। অথচ তাঁর স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা হয়নি। এনিয়ে ওই বিধবা বিরক্তি প্রকাশ করে এক সময় ওই প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে চাইলে ওই প্রধান শিক্ষক জানান, সে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলেও ভয় দেখান। কিন্তু একটা সময় তিনি বুঝতে পারেন, ওই প্রধান শিক্ষক তাঁকে বিয়ে করবেন না এবং তাঁর স্থায়ী চাকরিও হবে না।

এরপরই তিনি ওই প্রধান শিক্ষক তৃণমূল কংগ্রেসের মুরারই-২ ব্লক সাধারণ সম্পাদক হওয়ায়, লিখিতভাবে বিষয়টি তাঁদেরও জানান। কিন্তু সেখান থেকে তেমন কোনও সাড়া না মেলায় তিনি ২১ নভেম্বর পাইকর থানায় ওই প্রধান শিক্ষক মহম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে বিয়ে ও চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং তাঁকে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই পাইকর থানার পুলিশ ওই বিধবা মহিলার গোপন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে। আর এই বিষয়টি জানতে পারার পরই ওই প্রধান শিক্ষক বেপাত্তা হয়ে যান।


এরপরই পাইকর থানার পুলিশ ওই মহিলার গোপন জবানবন্দি রামপুরহাট আদালতে পাঠায়। শুক্রবার ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওই মহিলাকে আনা হয় রামপুরহাট আদালতে। সেখানে রামপুরহাট মহকুমা আদালতের বিচারকের উপস্থিতিতে তাঁর গোপন জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করা হয়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা সোচ্চার হয়েছেন।