কোচবিহারের কালজানি এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের পুকুরে পড়ে গেল একটি গাড়ি। মর্মান্তিক এই পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের ৪ জনের। মৃতদের মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছে। রবিবার রাতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জিত রায় ও বিপাশা সরকার রায় হলেন স্বামী–স্ত্রী। তাঁদের দুই সন্তান। দুই শিশুর মধ্যে একজনের নাম ইভান (২) আর একজনের নাম ইশশ্রী (৫)। তাঁদের বাড়ি কোচবিহারের বাণেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাওয়ারগঞ্জ এলাকায়। সঞ্জিত ও বিপাশা দু’জনেই পেশায় স্কুলের শিক্ষক–শিক্ষিকা। রবিবার তাঁরা সপরিবারে তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লক এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। গাড়িটি সঞ্জিত নিজেই চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
রবিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে কালজানি হেরিটেজ এলাকা দিয়ে গাড়িটি যাওয়ার সময় আচমকাই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের পুকুরে পড়ে যায়। গাড়ির ভিতরেই আটকে যান পরিবারের ৪ জন সদস্যই। স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজে হাত লাগান। তাঁরাই কাচ ভেঙে গাড়ির ভিতর থেকে চারজনকে উদ্ধার করেন। তড়িঘড়ি তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ হাসপাতালে। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসার পর পরিবারের ৪ সদস্যকেই মৃত বলে ঘোষণা করে দেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
পরিবার সূত্রে খবর, সঞ্জিত ঘোষ নাটাবাড়ি হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। অপরদিকে বিপাশা সরকার রায় ছিলেন নাটাবাড়ি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুন্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। রবিবার রাতেই পুকুর থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটিকে তোলা হয়। গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
মৃত শিক্ষক সঞ্জিতের ভাই শুভম রায় বলেন, ‘রবিবার সন্ধ্যায় দাদা-বৌদি তুফানগঞ্জের একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে গিয়েছিলেন। তারপর রাতে ফোনে দুর্ঘটনার খবর পাই। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে ছুটে যাই আমরা। ততক্ষণে দাদা-বৌদির মৃত্যু হয়েছে। বাচ্চা দুটোকেও চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিন মাস আগেই দাদা নতুন গাড়ি কিনেছিল। কোথা থেকে কী হয়ে গেল বুঝে উঠতে পারছি না।’