• facebook
  • twitter
Thursday, 12 December, 2024

আবাস যোজনার টাকা পেতে উপভোক্তাদের নথি যাচাইয়ের তোড়জোড় পূর্ব বর্ধমানে

প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম নথি যাচাই এর আওতায় আনা হয়েছে ৭৯ হাজার ২৬৬ জন উপভোক্তাকে।

গ্রাম সভার বৈঠকে আবাস যোজনার উপভোক্তারা। নিজস্ব চিত্র।

যোগ্যতা ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই আবাস যোজনায় টাকা মিলবে চলতি ডিসেম্বর মাসেই। আর এর জন্য অন্যান্য জেলার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু করলেন প্রশাসনের কর্তারা। তালিকা চূড়ান্ত হবার পর ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ব্লকে শুরু হয়েছে গ্রাম সভার বৈঠক। আরও একধাপ এগিয়ে এবার আবাস যোজনায় যোগ্য উপভোক্তাদের নথি যাচাই এর কাজ শুরু হলো। এর জন্য বেশ কয়েকটি পদ্ধতিতে কাজ হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে প্রকাশ্যে হওয়া গ্রাম সভা গুলো থেকে যে সব ক্ষোভ বিক্ষোভ উঠে এসেছে বা অভিযোগ পাওয়া গেছে সে গুলো ফের একবার যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৭ নভেম্বর জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তারপর জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে লিঙ্ক করে দেওয়া হয়। যাতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা যায়, তার জন্য জেলা জুড়ে তালিকা প্রকাশ্যে টাঙানোর নির্দেশ আছে। যদিও, দুয়েক জায়গায় ব্লক এবং পঞ্চায়েত দপ্তরে তালিকা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে কেতুগ্রাম ১ ও ২ নং ব্লকে এই নিয়ে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘যেগুলোতে এখনও তালিকা টাঙানো নেই একদিনের মধ্যেই টাঙিয়ে দেওয়া হবে।’

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন যখন নথি যাচাই এর তোড়জোড় শুরু করেছে। ঠিক তার আগে পর্যন্ত কয়েকটি গ্রাম সভাতে ক্ষোভও দেখিয়েছেন উপভোক্তারা। ভাতার, পূর্বস্থলীতে বৈঠকে একাধিক অভিযোগ শুনতে হয় আধিকারিকদের। আবার জামালপুর, খণ্ডঘোষ সহ কয়েকটি গ্রাম সভার বৈঠকে বিরোধীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। খণ্ডঘোষ ব্লকের জনপ্রতিনিধি তথা জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ অপার্থিব ইসলাম বলেন, ‘সে ভাবে কোন অভিযোগ নেই, তবুও ব্লকের আধিকারিক দের নিয়ে শেষবারের মতো আলাপ আলোচনা চলছে।’

অন্যদিকে বর্ধমান- ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানস ভট্টাচার্য জানান, ব্লকে প্রকৃত গরিব মানুষের যাতে ঘর হয় সে ব্যাপারে সব রকমের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। কোন অভিযোগ নেই। এমনকি রায়ান- ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কার্তিক বাগের মাটির বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ঘর নেননি। যা সবার কাছে দৃষ্টান্ত হয়েছে। আর জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, এর পরের অভিযোগ গুলো খতিয়ে দেখার কাজ চলছে।

আবাস যোজনার প্রকল্পে পূর্ব বর্ধমানে ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৬০৭ জন উপভোক্তার নাম ছিল আবেদনের পর সমীক্ষাতে। পরে সেটা আরও যাচাই করা হয়। উঠে আসে ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৯৯৮ জনের নাম। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম নথি যাচাই এর আওতায় আনা হয়েছে ৭৯ হাজার ২৬৬ জন উপভোক্তাকে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে এর জন্য বেশ কয়েকটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে। প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হবে ষোলআনা। এই কাজ চলাকালে প্রতি জায়গায় বসানো হচ্ছে সিসিটিভি। জেলাশাসক আয়েষা রানী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এ কাজে সব রকমের কঠোর ব্যবস্থা নিতেই এই সিদ্ধান্ত। জানা গিয়েছে, প্রতিটি গ্রাম সংসদ ধরে ধরে নথি যাচাই করার জন্য কাউন্টার করা হবে। কাউন্টারে যাবার আগে আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করা আছে এ রকম মোবাইল নিয়ে যেতে হবে। নথি যাচাই করার পর ওটিপি যাবে। তার সূত্রে অনলাইনে উপভোক্তা দের মুচলেকা দিতে হবে। আর যাদের কাছে ওই ধরনের মোবাইল নেই তাঁদের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নথি যাচাই করে নেবেন ব্লকের কর্মীরা। এই কাজ গুলো চলাকালেই সমস্তটাই সিসি ক্যামেরায় নজরদারি চালানো হবে বলে জেলাশাসক জানিয়ে দিয়েছেন। যাতে অযথা কোন অভিযোগ আর না হয়। নথি যাচাই এর জন্য সবচেয়ে বেশি ডাক পাচ্ছেন জামালপুর ব্লকের উপভোক্তারা। এখানকার এই তালিকায় রয়েছেন ৬৩৮৫ জনের নাম। এর পর আছে বর্ধমান ১ ব্লকের ৫৩৪১, ভাতারের ৭০২৫ জনের নাম।