ঘাটালে ত্রাণ বিলি করলেন দেব

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। তার মধ্যে অন্যতম ঘাটাল। রবিবার বন্যাকবলিত এলাকায় যান সাংসদ দীপক অধিকারী অর্থাৎ দেব। নিজের হাতেই বিলি করেন ত্রাণ। অল্প অল্প করে উন্নতি হচ্ছে বাংলার বানভাসি এলাকাগুলির। ঘাটাল, চন্দ্রকোনা সর্বত্রই জলস্তর কমছে। এখনো বুক সমান জলের তলায় বহু এলাকা। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘাটালই। রবিবার সেখানকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন সাংসদ দেব। সেখান থেকে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে আবারও মুখ খোলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি জানান, ওই প্রকল্পের জন্যই তৃতীয় বার ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন। সেই কাজ হবেই। কিন্তু তাঁর বক্তব্য, এ বার যে বন্যা হয়েছে, তা মাস্টারপ্ল্যান থাকলেও রুখতে পারত কি না সন্দেহ। তিনি বলেন, ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলেও এই বন্যা পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যেত কি না, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। এদিন দেবকে নৌকায় চেপে লাইফ জ্যাকেট পরে মুখ্য সচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে বন্যাকবলিত এলাকায় যেতে দেখা যায়। সেখানে গিয়ে তিনি নিজের হাতে স্থানীয়দের হাতে ত্রাণ তুলে দেন।

দেবের সঙ্গে আজ ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্য সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি জানান, ‘প্রয়োজনমতো বোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে’। দেব ও জাভেদ খানের সঙ্গে তাঁর দপ্তরের আরও আধিকারিকরা আসছেন বলে জানিয়েছেন জাভেদ খান। এই পরিস্থিতিতে মানুষের যা যা প্রয়োজন তা পূরণের চেষ্টা করা হবে, তিনি বলেন।

তবে এদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান প্রসঙ্গে দেব বলেন,’আমার মনে হয় না দু’বছরের মধ্যে এই প্ল্যান শেষ হবে। ‘ প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘ডিপিআর তৈরি হয়ে গিয়েছে। দেড় হাজার কোটি টাকা লাগবে। বছর দুয়েকের মধ্যেই মাস্টার প্ল্যান করে দেব।’ এই প্রসঙ্গে দেব বলেন, ‘প্রথমে বুঝতে হবে এই প্ল্যান কী। ৩ মাসের মধ্যে এই মাস্টার প্ল্যান করা সম্ভব নয়। ১৯৫৯ সালে যখন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছিল তখন নদীগুলি বড় করার কথা বলা হয়েছিল। এখন নদীর পাশে বড় বড় বিল্ডিং, বাজার, স্কুল, হাসপাতাল তৈরি হয়েছে। এরপর একটি প্ল্যান বেরিয়েছিল, দু’টি নদীকে সংযোগ করা। কিন্তু এখন পলি পড়ে গিয়েছে। আছে অনেক চাষের জমি। এই জমি জোর করে নেওয়া যাবে না। জমির মালিকদের সঙ্গে কথা চলছে। অনেক বাজার ভাঙতে হবে। অনেকগুলি বিভাগ এর সঙ্গে যুক্ত। এটা এক সহজ প্রকল্প নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নিজে এসে বলেছেন, ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান দুবছরের মধ্যে হবে। কিন্তু আমার মনে হয় এটা অনেক বড় প্রসেস। আমি রাজনীতিতে ফিরে এসেছি এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে হবে বলে। আমার বিশ্বাস এই সরকার ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবে। শুনেছি জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু হবে।’


জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান বলেন, ‘ঘাটাল, চন্দ্রকোনা, কেশপুর, দাসপুর, ডেবরা-সহ বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে’। জেলাশাসক খুরশিদ কাদরী বলেন, ‘বানভাসি এলাকায় পৌঁছে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের কাজ চলছে। ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজও জারি থাকছে। জল কমলে বেশ কিছু এলাকায় বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়ে যাবে’।