দামোদর নদে বন্যায় বয়ে আসা বালি এবার বেআইনি ভাবে বিক্রির অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানে

কয়েক দিন আগেই প্রবল বৃষ্টি আর তারই সাথে ডিভিসির ছাড়া অতিরিক্ত জলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পূর্ব বর্ধমানের দামোদর সংলগ্ন একাধিক ব্লকের নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোর। কোনও কোনও জায়গায় নদীর দু কূল ছাপিয়ে জল পার্শ্ববর্তী জনবসতি এলাকাতেও ঢুকে পড়ে। এমনকি নদীর মধ্যে থাকা চাষযোগ্য বহু জমি বন্যার ফলে জলের তলায় চলে যায়। ক্ষতিও হয় প্রচুর শাক সবজি, ফসলের। কিন্তু জল কমতে শুরু হওয়ার পর দেখা যায় সেইসমস্ত জমিতে নদী দিয়ে বয়ে আসা বালির মোটা আস্তরণ পড়েছে। এবার নদী গর্ভে থাকা বালির আস্তরন কেটে বেআইনি ভাবে বিক্রিবাটা চলছে। এনিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ তুঙ্গে। তাঁরা বিষয়টি প্রশাসনিক কর্তাদের নজরে এনেছেন। কারণ বাঁধের কাছ বরাবর বালি কেটে নেওয়ার পর ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

সারা বছর নদীর যে অংশগুলোতে জল থাকেই না, নদীগর্ভে এইসমস্ত এলাকায় স্থানীয় কিছু মানুষ চাষাবাদ শুরু করে দেয়। যদিও এইসমস্ত জায়গার কোনও মালিকানা থাকে না। কারণ নদীর কোন অংশই কোন ব্যক্তির এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তবু তারপরেও বর্ধমান থানার অন্তর্গত ফকিরপুর এলাকায় নদী বাঁধের নিচ থেকে বালির আস্তরণ সরিয়ে চাষের জমি পুনরুদ্ধারের নামে চলছে দেদার বালি পাচার। এমনকি নদীর মধ্যে যে জমিতে চাষ করা হতো, সেটি নাকি স্থানীয় কিছু ব্যক্তির বলেও দাবি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। রীতিমত নদীতে জেসিবি মেশিন নামিয়ে নদীর তিন থেকে চার ফুট বালির আস্তরণ কেটে পাড়ে তুলে রাখছে স্থানীয় কিছু বালি মাফিয়া। পরে সেই বালি ট্রাক্টরে করে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে নদীর বালি চুরি করে পাচার চললেও ভূমি দপ্তর কিংবা পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বলেই স্থানীয়দের অভিযোগ। কিছুদিন আগে বর্ধমান থানার পুলিশ এই এলাকায় বালি চুরির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলেও, স্থানীয় বালি কারবারিদের একাংশ পুলিশকে বুঝিয়ে দেয় যে তারা চাষের জমি থেকে বালি সরিয়ে দেওয়ার কাজ করছে। যাতে আবার তারা চাষাবাদ শুরু করতে পারে। কিন্তু তারপর বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে গেলেও স্থানীয়দের অভিযোগ, বালি মাফিয়ারা রাতের অন্ধকারে নদী থেকে বালি কেটে পাচার করে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই, স্থানীয়দের অনেকেই এবিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ হিসেবে তাঁরা অনেকে জানিয়েছেন, নদীর পাড়ের গা ঘেঁষে নিচ থেকে বালি কেটে নেওয়ার ফলে ধ্বসের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এমনকি এর ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তনেরও সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, অবিলম্বে প্রশাসন এই অবৈধ কারবার বন্ধের উদ্যোগ নিক এবং দোষীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।