হাইড্রেনে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে সদ্যোজাত একটি শিশু। মাছি ঘুরছে চারপাশে। সকাল সকাল এমন দৃশ্য দেখে রীতিমতো চমকে উঠেছিলেন বাঁকুড়া শহরের সতীঘাট এলাকার এক দোকানদার। ঘটনায় হইচই শুরু হয়ে যায় এলাকায়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয়েছিল থানায়। বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ এসে সদ্যোজাতের দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার সতীঘাট খুবই ব্যস্ত এলাকা। শনিবার সকালে এলাকারই এক দোকানদার লক্ষ্য করেন সামনের নিকাশি নালায় পড়ে রয়েছে ছোট্ট একটি প্রাণহীন দেহ। শিশুটির বয়স হবে আনুমানিক সাত-আট মাস। তার পিঠে রয়েছে ঘষা দাগ। কিন্তু হাইড্রেনে কিভাবে এল এই শিশু? এলাকাবাসীদের অনুমান, কেউ ফেলে দিয়ে গিয়েছে অথবা জলে ভেসেও দেহটি চলে আসতে পারে। হাইড্রেনটি সামনের গন্ধেশ্বরী নদীর সঙ্গে যুক্ত। ফলে ভেসে আসার সম্ভাবনাও এড়ানো যাচ্ছে না। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেরই ধারণা, শিশুটি একটি কন্যার। এক্ষেত্রে কন্যাসন্তান হত্যার বিষয়টিও তাঁদের মাথায় আসছে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
কন্যাসন্তান বা কন্যাভ্রূণ হত্যার ঘটনা নতুন নয়। এটি রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্যের পক্ষ থেকে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এখনও বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এর আগে বাঁকুড়ার সোনামুখী, বিষ্ণুপুরেও ভ্রূণহত্যার অভিযোগ এসেছিল। অবৈধ গর্ভপাতচক্র চলারও অভিযোগ আসে। এই সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনা ফের একবার সেই সম্ভাবনাকেই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করছে পুলিশ।
একবিংশ শতাব্দীতে যখন মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে, তখন এমন কন্যাসন্তান হত্যার ঘটনা সত্যিই লজ্জাজনক। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। খুন নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু সেই বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।