মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে উধাও বাংলা

রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক ভবনের ১৪ তলায় জ্বলজ্বল করছে বাংলায় লেখা ‘নবান্ন’ । অথচ খড়গপুর শহরে মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সমস্ত সাইনবোর্ড থেকে উধাও বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলা। পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক কার্যালয় থেকে মাতৃভাষা বাংলার উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন শহরের বিদ্বজনেরা। বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। অথচ বাংলার মাটিতেই উপেক্ষিত এবং অবহেলিত বাংলা ভাষা, এর চেয়ে আশ্চর্যের আর কিছু হতে পারে না।

বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী কৃশানু আচার্য বলেন, মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধের সমান এটা প্রবাদ বাক্য হয়েই থেকে গিয়েছে । প্রয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসনের আগ্রহ নেই। ফলে সাধারণ মানুষও আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।  তিনি বলেন, এই শহরে রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকারের তরফে বাংলা ভুলিয়ে দেওয়ার একটা চক্রান্ত শুরু হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসন দুয়ে মিলে একটা জাতিসত্তা তৈরি হয় । কৃশানুবাবু বলেন, কয়েকদিন আগেই কেন্দ্র সরকার বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে । সারা বিশ্বের ভাষাগুলির মধ্যে ইউনেস্কো বাংলা ভাষাকে পঞ্চম ঐশ্বর্যশালী ভাষা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। অথচ সেই বাংলার মাটিতে বাংলা ভাষা আজ অবহেলিত।

বিশিষ্ট সাহিত্যিক এবং বাংলা ভাষার ইতিহাসের গবেষক কামরুজ্জামান বলেন, রাজ্য সরকার সরকারি কাজকর্ম বাংলায় করতে চাইছেন অথচ সাইনবোর্ড শুধুমাত্র ইংরেজিতে লেখা, এটা রাজ্য সরকারের দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়। এটা বাংলা ভাষা, বাঙালির পক্ষে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের ব্যাপার। সরকারকে সদিচ্ছা দেখাতে হবে।


বাংলা পক্ষের তরফে সন্দীপ সরকার বলেন, প্রশাসনিক কার্যালয়ের সাইনবোর্ডে বাংলার ব্যবহার করার জন্য আমরা খড়্গপুরের মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দেব। বাংলা ভাষা এবং বাঙালির অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আমাদের লড়াই চলবে। এই বিষয়ে খড়্গপুরের মহকুমা শাসক পাতিল যোগেশ অশোকরাওয়ের প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।