অমিতাভ সরকার
১৯৮৭ থেকে ২০২৪। মাঝে ৩৭ বছর পার হয়ে গেলেও কিশোরকুমারের গান আজও আগের মতোই। এমন একটা দরাজ গলা, তেমনই সুর আর ভাবের মিশেল – যা গেয়েছেন, যত ধরনের গেয়েছেন, যেভাবে গেয়েছেন -সবই অসাধারণ। কোনো গানের সঙ্গে কোনোটার তুলনা চলে না। অভিনেতা, গায়ক, সুরকার, গল্পকার, চলচ্চিত্রকার, প্রযোজক, গীতিকার, চিত্রনাট্য রচয়িতা -একটা মানুষ এতকিছু। এক একটা সত্তা সবসময়ই আরেকটাকে ছাপিয়ে গিয়েছে, অবাক করে ছেড়েছে আপামর জনসাধারণকে। অভিনয়টা বেশ ভালোই পারতেন। এসেছিলেন নায়ক হতে, হয়ে গেলেন গায়ক। তখন বিষয়টা মোটেও সহজ ছিল না। তাছাড়া প্রথাগতভাবে কারোর কাছে গান না শিখেও এমন সব কীর্তি রেখে গেছেন, যা এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আজও দেশ-বিদেশ, পাড়া, কলেজের যে কোনো অনুষ্ঠান জমিয়ে তুলতে অন্য সবার গানের সঙ্গে কিশোরকুমারের দু-একটা গানই যথেষ্ট।
এখনকার প্রজন্মের শিল্পীরা সবাই তাঁকে অনেকখানি শ্রদ্ধা দিয়েই স্মরণ করেন। মানুষটির ভাগ্যে নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে আটটি ফিল্মফেয়ার ছাড়া (ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারের একই বিভাগে সর্বাধিক পুরস্কৃত হওয়ার টানা রেকর্ড করেছিলেন) ভারত সরকার থেকে ভারতরত্ন, পদ্মভূষণ ইত্যাদি কোনো পুরস্কার জোটেনি এটাও যেমন পৃথিবীর একটা অন্যতম আশ্চর্য, তেমনি তাঁকে নিয়ে এখনো এত উন্মাদনা- সত্যিই সারা পৃথিবীতে এমন বর্ণময় ব্যক্তিত্ব খুব একটা নেই বললেই চলে। কিশোরকুমারকে নিয়ে নানারকম গল্প প্রচলিত আছে, কিন্তু তার বাইরে গিয়ে তিনি যে কত মানুষকে ভালবেসেছেন, ভালোবেসে কষ্ট পেয়েছেন, নীরবে কত মানুষের উপকার করেছেন, সেগুলো নিয়ে কিন্তু কোনো চর্চা হয় না, আর সবটুকু তিনিও বলে যাননি, বা তার সুযোগ পাননি। সব মিলিয়ে ওঁকে নিয়ে বাঙালির আগ্রহ চিরকালীন। তবে কিশোরকুমার আগে ভারতীয়, পরে বাঙালি। বাংলা বলতে পারলেও লিখতে, পড়তে পারতেন না। বাড়িতেও কথা বলতেন হিন্দি-বাংলা মিশিয়ে। বাংলা গানও হিন্দিতে লিখে নিয়ে গাইতেন। তবে বাঙালি খাবার পছন্দ করতেন। আলুর দম, লুচি, মাংস, বেগুন ভাজা আর মাছ তো খুবই প্রিয় ছিল। ইলিশ মাছও খেতে পছন্দ করতেন।
মারাঠি, কন্নড়, ভোজপুরী,উর্দু, মালয়ালম, তেলেগু অনেক ভারতীয় ভাষাতেই কণ্ঠদান করেছেন। জন্মসূত্রে মধ্যপ্রদেশের খান্দোওয়ার প্রবাসী বাঙালি হলেও বাংলার থেকে হিন্দির চল ওখানে বেশি। বলিউডে পপ স্টাইল, এমনকি রক অ্যান্ড রোল ধরনের গান কিশোরকুমারের গায়কীতেই জনপ্রিয় হয়। আগে ফাংশন বলতে শুধু এমনি গান গাওয়াকেই বোঝাতো। কিন্তু গানের সঙ্গে পারফর্ম করার নতুন ধারা যা আজকে বহুল প্রচলিত, সেটা কিশোরকুমারই সেই যুগে চালু করেছিলেন। গানের সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহার, অভিনয়, অ্যাকশন- সব মিলিয়ে ব্যাপারগুলো বেশ মনোগ্রাহী ও আকর্ষণীয় ছিল। আজ যেগুলো সহজেই চিন্তা করা যায়, সেইসব যুগে ব্যাপারগুলো কীভাবে হতো ভাবতে পাচ্ছেন! মাইকেল জ্যাকসন, এলভিস প্রেসলি, জন লেনন প্রভৃতির সুরস্রষ্টার মতো কিশোরকুমার ছিলেন গানের জগতে এই ধারার পথপ্রদর্শক। প্রচণ্ড ভালো অনুকরণ ক্ষমতার পাশাপাশি গানের মেলোডি ও তার বিভিন্ন এফেক্ট নিয়েও নানান অদ্ভুত সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার উদ্ভাবনী ক্ষমতা এই অদ্বিতীয় স্রষ্টার ছিল।
তবুও এই আশ্চর্য প্রতিভাসম্পন্ন মানুষটিকে আজও নির্দিষ্ট কিছু বাঁধা গৎ-য়ের বাইরে আমরা খুব একটা ভাবতে পারিনা। ভাবতে অবাক লাগে, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে যথেষ্ট ব্যূৎপত্তি না থেকেও মৃত্যুর এত পরেও কী করে এভাবে বেঁচে থাকা যায়? উনি নাকি গানের ব্যাকরণ জানতেন না, হারমোনিয়াম বাজাতে পারতেন না, স্বরলিপি, স্টাফ নোটেশন বুঝতেন না, সিঙ্কোপেইটেড নোটে গাইতে অসুবিধা হতো, তালজ্ঞান ততোটা ভালো ছিল না- কই রেকর্ড শুনলে তো কিছু বোঝা যায় না? যদি এসব সত্যিই হয়ে থাকে, তাহলে এত অনায়াসে হিন্দি, বাংলা সমস্ত গান কিভাবে গাইলেন? শুধুই কি ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতা? না, কিশোরকুমার নামের আড়ালে লুকিয়ে আছে আরও অনেক কিছু। পরিশ্রম, কষ্ট, অবহেলা, অসম্মান -এসবগুলোকে ঢাকতেই কি এইরকম জিনিয়াসরা নিজেদেরকে পাগলামির ছদ্ম আবরণে ঢেকে রাখেন?
কিশোরকুমার চলে যাওয়ার পর তাঁর ধারেকাছেও কোনো কিশোরকুমার পৌঁছতে পেরেছেন? নামটিই যেখানে ‘কিশোর’, সেখানে পথও অনেক। তাঁর গান গেয়ে অনেক শিল্পীই আজও রুজি রোজগার করে থাকেন। রফি, মুকেশ, মান্না দে -প্রভৃতি নামগুলোর পাশে কিশোরকুমার কখনও আলাদা একটা হুল্লোড়ে বাতাস, আবার ঠিক তার পাশাপাশি হয়তো খুব সিরিয়াস গানে- শ্রোতাকে বুঁদ করে রাখেন; চিরচেনা মধুর কণ্ঠে গমগম করে চলে সেই সব গানের কলি, যা স্নায়ুকে পরম আরাম দেয়, ডুবে যেতে হয় অনুভবের অতল সাগরে৷ নিজেকে হারিয়ে ফেলতে হয়, ওখান থেকে মনকে ফিরিয়ে আনতে ইচ্ছে করে না, ভেসে যেতে হয় -পারের ওকূলে গিয়ে ফেরার আভাসও পাওয়া যায় না। কিশোরকুমার নিজেই একটা প্রশ্ন? কী করে করে দেখালেন এত সব?
সেদিনও মেলেনি, আজও তাই। ‘ম্যায় হুম ঝুমরু’, ‘চিল চিল চিল্কাকে’,’এক লড়কি ভিগি’,’আঁচল কে তুছে’,‘খাইকে পান বেনারসওয়ালা’,’পগমে খুমরু বাঁধকর’,’ও শাম কুছ অজীব থি’,’আনেওয়ালা পল’,’জিন্দেগী কে সফর মে’,’মেরা জীবন’, ‘দে দে প্যার দে’, ‘কাভি বেকাসিনে মারা’,’জানে ক্যায়া সোচকার’,’রুপ তেরা মস্তানা’, ’গাতা রহে মেরা দিল’,’ফুল কে রংসে’ -এ তালিকা শেষ হওয়ার নয়। আবার, ‘সে যেন আমার পাশে’,’আমার পূজার ফুল’, ’আমার দীপ নেভানো রাত’,’হাওয়ায় মেঘ সরায়ে’,’আমার মনের এই ময়ূরমহলের’,’সেদিনও আকাশে ছিল’,’সেই রাতে রাত ছিল’- এমনকি ‘সিং নেই তবু নাম তার সিংহ’,’সরস্বতীর সেবা করি’,’এ কী হলো’, ’ওপারে থাকবো আমি’,’হয়তো আমাকে কারো মনে নেই’ – বা অন্যান্য সহশিল্পীদের সঙ্গে ‘ছোড় দো আঁচল’,’এক চাতুর নার’,’সারা প্যার তুমহারা’,’তেরে মেরে মিলন কি’-প্রভৃতি সব গানেই তিনি অননুকরণীয়, নিপাট স্বচ্ছন্দ্য। প্রায় সব সুরকারদের (যদিও রাহুল দেব বর্মন, বাপী লাহিড়ীর সঙ্গে জুটি বেঁধে তাঁর গানই বেশি) সুরে কিশোরকুমার গান গেয়েছেন, বোম্বে, বাংলায় সব নায়কদের ঠোঁটে কিশোরকুমার গান গেয়েছেন। শচীন দেববর্মনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ মধুর ছিল। প্রথমদিকে কুন্দনলাল সায়গলকে অনুকরণ করলেও শচীনদেবের নির্দেশে নিজের স্বতন্ত্র গায়কী তৈরি করেন। খেমচাঁদ প্রকাশ কিশোরকুমারের গায়ক প্রতিভাকে বুঝতে পেরে তাঁর ‘জিদ্দি’ সিনেমায় গান গাওয়ার সুযোগ দিয়েছিলেন।
তবে এসডি বর্মনের গাওয়া গান খুব পছন্দ করতেন, পরবর্তীকালে তাঁর সুরেও প্রচুর গান গেয়েছেন, তবে যে কোনো কারণেই হোক, কিংবদন্তী সলিল চৌধুরীর সুরে কিশোরকুমারের গান তুলনায় বেশ কম। যদিও যেগুলো গেয়েছিলেন সেগুলো বেশ হিট করেছিল। তাছাড়া, সেই আমলে তাবড় তাবড় শিল্পী থাকতে সত্যজিৎ রায় তাঁর নিজের সিনেমায় রবীন্দ্রসঙ্গীতের জন্য কিশোরকুমারকেই পছন্দ করেছিলেন। অনাবশ্যক রক্ষণশীলতা বাদ দিয়ে সুন্দরভাবে অমন খোলা গলায় কবিগুরুর গানগুলো যে কতটা জনপ্রিয় আজ তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। রবীন্দ্রসঙ্গীত যে ওইভাবেই গাওয়া সম্ভব, সে ব্যাপারে দেবব্রত বিশ্বাসের পাশাপাশি কিশোরকুমারও যথেষ্ট কৃতিত্বের দাবিদার।
১৯৮১ সালে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ‘এই কথাটি মনে রেখো’ নামে বারোটা এবং ১৯৮৬ সালে হেমন্ত- সহকারী সমরেশ রায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘দিনের শেষে ঘুমের দেশে’ নামে বারোটি – অর্থাৎ মোট চব্বিশটি রবীন্দ্রসঙ্গীত (‘ঘরে বাইরে’ সিনেমায় কিশোরকুমারের খালি গলায় গাওয়া ‘বিধির বাঁধন কাটবে তুমি’ -ধরলে আরও একটি) বড়ো কম মনে হয়। গানগুলো সঠিকভাবে গাইবার জন্য যথেষ্ট কসরৎ করেছিলেন, অনেকগুলো গানের রেকর্ড বাতিল করেছিলেন, তাতে আর্থিক লোকসানও হয়েছিল। এগুলো হয়তো অনেকেই জানেন না। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ওঁরই পছন্দসই রবীন্দ্রগানের একটা সংকলন করার ইচ্ছাপ্রকাশও নাকি কিশোরকুমার করেছিলেন। আবার মেগাফোন কোম্পানি থেকে ১৯৮৭ সালেই কিশোরকুমারের বারোটি নজরুলগীতি রেকর্ড করার কথাও ছিল। কিন্তু তাঁর অকস্মাৎ অকাল মৃত্যুর কারণে এ-সবকিছুই অসম্পূর্ণ রয়ে গেল।
শিল্পীর মৃত্যু হয় না। কাজই তাঁকে বাঁচিয়ে রাখে। মাত্র আটান্ন বছরের আয়ুষ্কাল, যার মধ্যে দীর্ঘ একচল্লিশ বছরের সঙ্গীত জীবন এই ক্ষণজন্মা শিল্পীর। তাতেও প্রচুর ওঠাপড়া। সবটা বুঝে ওঠা যায় না। নিজেও বেশ মুডি ছিলেন, তাঁর মেজাজ বুঝে চলতে গিয়ে অন্যান্যরাও বেশ নাস্তানাবুদ হয়েছে, কিন্তু কোথাও যেন বাঙালি কিশোরকুমারকে, মানুষ কিশোরকুমারকে ঠিকমতো বোঝার ক্ষেত্রে একটা বিস্তর দূরত্ব থেকে গেছে।
আপাত ছটফটে, প্রাণচঞ্চল, আনন্দপ্রাণ মানুষটির ভিতরের যন্ত্রণাটা কেউ তলিয়ে ভাবেনি। এমনিতেই কিশোরকুমাররা সহজে কারোর কাছে ধরা দেন না, এর ফলে বাস্তবের কিশোরকুমারও মানুষের মধ্যে থাকলেও স্বার্থপর দুনিয়া থেকে
নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে গাছগাছালির মধ্যেও প্রাণের আনন্দ খুঁজে পেতে চাইতেন। বাড়ির গাছেদেরও বিভিন্ন নাম দিয়েছিলেন। এগুলো নিছকই আপনভোলা খেয়ালী মনের পরিচয় বলে মনে হয় না। কাজের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অভিনেতা হয়ে প্রতিষ্ঠা পেলেও গায়ক হিসাবে তালাত মাহমুদ, রফি, মুকেশদের তুলনায় আভাস কুমার গাঙ্গুলী প্রথমে কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। ‘আরাধনা’ সিনেমার সময় থেকেই রাতারাতি সুপারহিট হয়ে গেলেন। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আপ কি কসম, শোলে, কালিয়া, শরাবি, লাওয়ারিস, প্রচুর হিন্দি সিনেমায় গান গেয়েছেন সাফল্যের সঙ্গে।
তবে হিন্দির তুলনায় বাংলা গানে কিশোরকুমারকে আমরা কমই পেয়েছি। নিজে বেশকিছু বাংলা গানে সুর করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে এইচএমভির পুজোর গানে কিশোরকুমার, লতা মঙ্গেশকর দুজনেই পরস্পরের গানে সুর দিয়ে একে অপরকে দিয়ে গাইয়েছিলেন, গানগুলো খুবই জনপ্রিয় হয়। সেবার কিশোরকুমারের সুরে লতা গেয়েছিলেন,’প্রিয়তম, কী লিখি তোমায়’, ‘ভালোবাসার আগুন জ্বেলে’, আর লতার সুরে কিশোরকুমার গেয়েছিলেন,’তারে আমি চোখে দেখিনি’,’আমি নেই ভাবতেই ব্যথায়’।
সুরের বিষয়ে নাকি তেমন দক্ষ ছিলেন না কিশোরকুমার! যেসব কালজয়ী সুরসৃষ্টি কিশোরকুমার করে গেছেন, তা চিরকালের সম্পদ, সঙ্গীতজ্ঞানী মানুষও অমন করতে বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে পড়বেন।
কিশোরকুমারের গাওয়া তিন হাজার মতো গানের মধ্যে দেড়শো বাংলা চলচ্চিত্রে আর হাজার খানেক হিন্দি সিনেমাতে গাওয়া। মৃত্যুর আগের দিনও গান রেকর্ড করেছিলেন। গানের মধ্যেই মনের আনন্দ খুঁজে নিতেন। কোথাও যেন মনে হয়, জীবিত থাকাকালীন ওঁর প্রাপ্য সম্মান ওঁকে ঠিকমতো দেওয়া হয়নি।
সামগ্রিক পর্যালোচনা করতে গিয়ে কোনো একাংশে মনে হয়েছে, সলিল চৌধুরী যদি কিশোরকুমারের জন্য তাঁর সুরে আরও বেশিসংখ্যক গান তৈরি করতেন তাহলে যেমন ভালো হতো, তেমনই কিশোরকণ্ঠে আরও রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনতে পেলে, বা নজরুলগীতি, বা অন্যান্য বাংলা গানের শিল্পী হিসাবে কিশোরকুমারকে বেশি করে পাওয়া গেলে বাংলা সংস্কৃতি আরও সমৃদ্ধ হতে পারতো। ভীষণ জানতে ইচ্ছে করে, সত্যজিৎ রায় ছাড়া কিশোরকুমারকে বাংলা সিনেমায় আর কোনো পরিচালক রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়ালেন না কেন? তপন সিনহা, তরুণ মজুমদার প্রভৃতি স্বনামধন্য পরিচালকরা তো তাঁদের সিনেমায় বিভিন্ন শিল্পীদের কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করেছেন। এঁদের মধ্যে কিশোরকুমারের নামটি অনুপস্থিত কেন? সেই সময়ে অনেক অবাঙালি শিল্পীও তো রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছেন। একটা সময় কিশোরকুমার রবীন্দ্রনাথের গানের মধ্যে প্রাণের শান্তিও খুঁজে পেতেন।
তখন অবশ্য প্রচারমাধ্যম আজকের মতো এত উন্নত ছিল না। মুম্বাই, কলকাতার দূরত্ব, কিশোরকুমারের স্টারডম, পারিশ্রমিক এগুলোই কি কারণ, নাকি অন্য কিছু! আবার হয়তো কিশোরকুমারের হঠাৎ করে জীবনাবসানই এসবের জন্য দায়ী। সময়ের বড়ো আগেই তিনি চলে গেছেন। এ আক্ষেপ যাওয়ার নয়। কোনোদিনই নয়।