ভারতীয় বিদ্যাভবন আয়োজিত নাদ ফেস্টিভ্যাল এবার চতুর্থ বর্ষে পা দিল। মার্চের একুশ, বাইশ ও তেইশ তারিখে প্রতিবারের মতন সেই একই ভেন্যুতে (অর্থাৎ ডি. বিড়লা সভাঘর) অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ‘নাদ ফেস্টিভ্যাল’। এটা ছিল ‘সিজন ৪’। ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছিলেন ভারতীয় বিদ্যাভবন কলকাতা কেন্দ্রের অধিকর্তা ডঃ জি ভি সুব্রমনিয়ণ এবং কিউরেট করেছেন তবলামায়েস্ত্রো পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ। এই ফেস্টিভ্যাল নিয়ে বরাবরের মতন শ্রোতা-দর্শকদের মধ্যে চাহিদা তৈরি হয়েছিল ব্যাপক। আর সেই প্রতিফলন দেখা গেল সবকটি দিনেই দর্শকের উপস্থিতির শতকরা হারে। সভাঘর ছিল কানায় পরিপূর্ণ!
প্রথম সন্ধ্যায় প্রথামাফিক প্রদীপ জ্বালিয়ে উদ্বোধন করেন ডঃ জি. ভি সুব্রমনিয়ণ, পণ্ডিত বিক্রম ঘোষ, পণ্ডিত অনিন্দ্য চ্যাটার্জি, পদ্মশ্রী পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস, প্রত্যুষ ব্যানার্জি এবং এই সন্ধ্যার দুই শিল্পী আমান আলি বাঙ্গাশ ও অনুব্রত চ্যাটার্জি । সংক্ষেপে বক্তব্য শোনা গেল। এরপর প্রথমভাগে ছিল সরোদবাদন। অনন্য তবলাবাদক অনুব্রত চ্যাটার্জিকে সাথে নিয়ে বাজনার উপস্থাপন করেন আমান আলি বাঙ্গাশ। দ্বিতীয়ভাগে ছিল বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী বিদুষী অদিতি মঙ্গলদাসের কত্থক নৃত্য উপস্থাপনা। ঘূর্ণঝড়জনিত কারণে আবহাওয়া খারাপ থাকলেও দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় ‘স্বরা কোয়ার্টেড’ অর্থাৎ চারজন শিল্পীর একযোগ পরিবেশনা শ্রোতা-দর্শকদের মন ভালো করে দেয়। এঁরা ছিলেন—
পণ্ডিত যোগেশ সামসি (তবলা), পণ্ডিত প্রবীণ গোড়খিন্ডি (বাঁশি), ইউ. রাজেশ (ম্যান্ডোলিন) এবং স্বামীনাথন সেলভাগনেশ (কাঞ্জিরা)। দ্বিতীয় ভাগে ছিল পিতা – পুত্রের যুগল উপস্থাপনা। বর্ষীয়ান কণ্ঠশিল্পী পন্ডিত অজয় পোহানকার মঞ্চ আলো করে আসেন পুত্র অভিজিত পোহানকরকে নিয়ে (পিয়ানো)। অন্তিমদিন রবিবার সব আকর্ষণ ছিল তবলামায়েস্ত্রোর নতুন উপস্থাপনাকে ঘিরে! যেটি কলকাতায় প্রথমবার করলেও ইতিমধ্যে বেঙ্গালুরুবাসীর প্রত্যক্ষ করবার অভিজ্ঞতা হয়ে গেছে! তবে এদিন শুরুতে শোনা গেল বিশিষ্ট হারমোনিয়াম বাদক তন্ময় দেওচাকের একক হারমোনিয়াম বাদন। তবলায় ছিলেন সোহম গোড়ানে। আর শেষ ভাগে ছিল সেই অভিনব উপস্থাপনা। ‘ট্রান্সফর্মেশন’ এই শিরোণামে যন্ত্রবাদ্য পরিবেশনা শোনা গেল উপস্থিত বেশ কিছু বিশিষ্ট যন্ত্রের এবং যেটির পরিচালনা করেছিলেন তবলামায়েস্ত্রো নিজেই। অংশ নিয়েছিলেন— অঞ্জনা পদ্মনাভন (কণ্ঠ), মহেশ রাঘবন (জিওশ্রেড), নন্দিনী শংকর রাঘবন (বেহালা), বি.সি. মঞ্জুনাথ (মৃদঙ্গম), প্রনব দাঁতে (ড্রামস) এবং অনয় গ্যাডগিল (কি-বোর্ডস)। সঙ্গে তবলা নিয়ে এবং পরিচালনায় ছিলেন পন্ডিত বিক্রম ঘোষ। সমগ্র অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজনে ছিল— সেনহাটি পন্ডিত শংকর ঘোষ তবলা ফাউন্ডেশন ।