সালটা ১৭৯১, হুগলির কোন্নগর থেকে শহর কলকাতায় এসেছিলেন মুর্শিদাবাদের নবাবের দেওয়ান রামনাম মিত্র। প্রতিষ্ঠা করেছিলেন চোরবাগান মিত্র বাড়ির। দেওয়ানি থেকে প্রচুর অর্থ উপার্জন করে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। নাম,যশ, খ্যাতির শীর্ষে উঠে তৎকালীন সমাজের বাবুয়ানার সঙ্গে পাল্লা দিয়েছিলেন তিনি। শুরু করেছিলেন দুর্গোৎসব।
তারপর ১৯২৮ সালে, রামনাথ মিত্রের বংশধর নরেন্দ্রনাথ মিত্রের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ঝুলনযাত্রা। সেই সময় সাতদিন ধরে বাড়ির দালানে চলত অনুষ্ঠান। তবে কালের নিয়মে হারিয়েছে জৌলুস। ফিকে হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। তবে একই রকম রয়েছে ঐতিহ্য। আর সেই ঐতিহ্য মেনে এখনও প্রতিবছর পালিত হয় ঝুলনযাত্রা। যদিও এখন সাতদিনের বদলে অনুষ্ঠান হয় চারদিনের।
বর্তমানে মিত্র বাড়ির পঞ্চম পুরুষ অঞ্জন কুমার মিত্র থাকেন সল্টলেকে। ১৯৮৬ সালে পুরনো পৈতৃক বাড়ি ছেড়ে সেল্টলেকের বাসিন্দা হয়েছেন তিনি। সেই ১৯৮৬ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সল্টলেকের বাড়িতেই প্রতিবছর পালিত হয় ঝুলনযাত্রা অনুষ্ঠান। নাচ-গান, কীর্ত্তনের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে চারদিন ধরে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন অঞ্জন জায়া সাগরিকা মিত্রের প্রতিষ্ঠান ‘তাথৈ একাডেমি’র কচিকাঁচারা। ২০১১ সালে মাত্র একজনকে নিয়ে শুরু হয়েছিল ‘তাথৈ’র পথচলা। বর্তমানে সেখানে সদস্য সংখ্যা আড়াইশো ছাড়িয়েছে। নাচ, গান, তবলা, আবৃত্তি চর্চার পাশাপাশি চলে বিশেষভাবে সক্ষম শিশুদের প্রশিক্ষণ। এবারও ঠিক নিয়ম মেনে বাড়ির কর্ত্রী সাগরিকা মিত্রের প্রতিষ্ঠান ‘তাথৈ একাডেমি’ অংশগ্রহণ করল রাধাগোবিন্দ জিউয়ের ঝুলনযাত্রা অনুষ্ঠানে।