প্রেমের সেতার ও সঙ্গীতসন্ধ্যা

নিজস্ব চিত্র

সৌমী ও’ শ্রুতি-কলকাতা সংগীতমহলে এ সময়ের জনপ্রিয় দুটি নাম। শান্তিনিকেতনে বড়ো হয়ে ওঠা দুই বোন সেখানকার আলোহাওয়ায় শৈশব থেকেই পেয়েছিল জীবনের পাঠ। তাই সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সংগীতের আনন্দধারায় শুরু হয়েছিল তাদের পথচলা। সম্প্রতি ‘ভাবনা’ আয়োজিত এক সংগীতানুষ্ঠান হলো রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অব কালচার (গোলপার্ক)-এ। অপূর্ব সংগীত-অর্ঘ্য সাজিয়ে দুই শিল্পী বোন এক মনোমুগ্ধকর সংগীতসন্ধ্যা উপহার দেন শ্রোতাদের।
সৌমী ও শ্রুতির দ্বৈতকণ্ঠে মাতৃবন্দনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন। তারই রেশ ধরে ঝাঁপতালে নিবদ্ধ ‘তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা’ ও কীর্তনাঙ্গের ‘তোমার আনন্দ ওই এলো দ্বারে’ গানের আবেশে মুগ্ধতা ছড়িয়ে গেল শ্রোতাদের মনে।

একক ভাবে সৌমীর কণ্ঠে ‘প্রচণ্ড গর্জনে’, ‘তোমরা যা বলো তাই বলো’ এবং শ্রুতির গাওয়া ‘একি লাবেণ্যে পূর্ণ প্রাণ, ‘আমর বেলা যে যায়’ গানগুলোর পরিবেশনা ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। দ্বৈতকণ্ঠে ‘খাঁচার পাখি ছিল’ ও ‘আমাদের শান্তিনিকেতন’ গানদুটির গায়নশৈলী এককথায় ছিল অসাধারণ। এরপর শিল্পীরা অন্য এক আবহ নিয়ে এলেন বাউল, রামপ্রসাদী ও প্রচলিত লোকগীতির নিবেদনে। পাশাপাশি ওই সুরের প্রভাবে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি ভাঙাগানও গেয়েছেন তাঁরা অপূর্ব দক্ষতায়। যুগলবন্দীতে সৌমী ও শ্রুতির সাবলীল ও আন্তরিক নিবেদন শ্রোতাদের বিশেষ ভাবে আপ্লুত করেছে। শিল্পীদের অত্যন্ত মনোগ্রাহী এই পরিবেশনা শেষ হলেও সেই সুরের অনুরণন চলতে থাকে অগণিত সংগীতপ্রেমীর মনের গভীরে। তালবাদ্যে পণ্ডিত বিপ্লব মণ্ডল ও কীবোর্ডে সৌরভ চক্রবর্তীর সহযোগিতা প্রশংসনীয়। পূজা, প্রেম, প্রকৃতি, বিচিত্র ইত্যাদি বিভিন্ন পর্যায়ের সহজ-আনন্দে গাওয়া প্রতিটি গানই তাঁদের কণ্ঠমাধুর্যে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই স্বকীয় বৈশিষ্ট্য নিয়েই সৌমী ও শ্রুতির সংগীতজীবন অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে বলে সবাই আশাবাদী।