• facebook
  • twitter
Thursday, 21 November, 2024

বাঁশিতে ফু দিলেই  সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে যায় আইপিএস ইন্দ্রজিৎয়ের।

ময়ূরাক্ষী দাস: ছেলেবেলায় মায়ের হাত ধরে বাঁশি কিনতে যাওয়া।  সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর বাঁশির প্রতি অদম্য টান।  যদিও বড় হয়ে এখন তিনি একজন দুঁদে পুলিশ অফিসার।  তবু ছোটবেলা থেকে  বাঁশির প্রতি সেই অনুরাগ তাঁর একটুও কমেনি।  নিজের কাজ সামলিয়ে  একের পর এক অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন তিনি।  বাঁশির প্রতি তাঁর সেই  ভালোবাসা ও অনুরাগের 

ময়ূরাক্ষী দাস: ছেলেবেলায় মায়ের হাত ধরে বাঁশি কিনতে যাওয়া।  সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল তাঁর বাঁশির প্রতি অদম্য টান।  যদিও বড় হয়ে এখন তিনি একজন দুঁদে পুলিশ অফিসার।  তবু ছোটবেলা থেকে  বাঁশির প্রতি সেই অনুরাগ তাঁর একটুও কমেনি।  নিজের কাজ সামলিয়ে  একের পর এক অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়ে চলেছেন তিনি।  বাঁশির প্রতি তাঁর সেই  ভালোবাসা ও অনুরাগের  কথা অকপটে বললেন  আইপিএস অফিসার ইন্দ্রজিৎ বসু।  বর্তমানে  তিনি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের  স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের  এসপি হিসেবে কর্মরত।  দায়িত্ব প্রচুর,  সময়েরও অভাব।  কিন্তু তারপরেও বাঁশি বাজানোকে ভালোবেসে  তিনি প্রত্যেকদিন  এক ঘন্টা  সময় ‘রেয়াজে’র জন্য  বেছে নেন।  নিজের দপ্তরের কাজ সামলিয়ে  বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান বাঁশি বাজাতে।  কলকাতার সমস্ত বড় মঞ্চে তিনি  ইতিমধ্যেই বাঁশির অনুষ্ঠান করে এসেছেন।   বড় বড় মিউজিক কনফারেন্সে তিনি  অংশগ্রহণ করেছেন।  যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ডোভারলেন  ক্লাসিক্যাল  মিউজিক  কনফারেন্স,  উত্তরপাড়া সঙ্গীত চক্র,  রাজ্য সঙ্গীত একাডেমী,  চৌধুরী মিউজিক কনফারেন্স,  দক্ষিণী সংগীত সম্মিলনী  ইত্যাদি। বিখ্যাত তবলা বাদকদের সঙ্গেও তিনি মঞ্চে অনুসঙ্গ দিয়েছেন।  হাততালিও পেয়েছেন, পেয়েছেন বাহাবাও।  কিন্তু  এর ফলে তাঁর মধ্যে আসেনি কোন অহম।  বরং ইন্দ্রজিৎবাবুর কথায়,  “আমি সর্বদা ভাবি, আমি কিছুই জানি না। আরও জানার দরকার আছে।” প্রথমে তিনি চন্দ্রকান্ত নন্দীর কাছে  কিছুদিন বাঁশি বাজানো শেখেন। তারপর  তিনি যখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন,  সেই সময় পন্ডিত নিখিলেশ রায়ের কাছে  বাঁশি শেখা শুরু। ইন্দ্রজিৎবাবুর কথায়,  পন্ডিত  নিখিলেশ রায়ের  শিক্ষাকে পাথেয় করেই  তিনি এগিয়ে চলেছেন। আজও তিনি  পন্ডিজির  বলা কথাগুলিকে বা শেখানো জিনিসকে  অনুসরণ করে চলেন।  ইন্দ্রজিৎ বাবুর পছন্দের রাগের  তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে  বিলাসখানি তোরি,  মালকোস,  মিয়াকি মাল্লার,  ইমন কল্যাণ,  দুর্গা রাগ।  ইন্দ্রজিৎ বাবু জানালেন,  প্রত্যেকটির রাগেরই একটি নিজস্ব সময়,  রূপ,  রং, গন্ধ রয়েছে।  তাই সময় অনুযায়ী রাগের প্রতি এই ভালোলাগাও  পরিবর্তিত হয়।  ইন্দ্রজিৎ বাবু, এও জানাতে ভুললেন না,  কোন নির্দিষ্ট রাগের কথা মাথায় রেখে তিনি  মঞ্চে ওঠেন না।  বরং বাঁশিতে ফু দেওয়ার পর  তাঁর মন যে রাগ বাজাতে চায়,  সেটাই তিনি বাজান।  এই বিষয়ের স্বাধীনতা তিনি খুব উপভোগ করেন।  কিন্তু দপ্তর সামলে ক্লান্ত হয়ে  কোনও অনুষ্ঠানে বাজাতে কষ্ট হয় না?  এই প্রশ্ন করাতেই  ইন্দ্রজিৎবাবু  জানালেন,  “অনেক সময়ই প্রচুর ক্লান্তি নিয়ে অনুষ্ঠানে  বাঁশি বাজাতে গিয়েছি।  কিন্তু  বাঁশির প্রতি আমার এত বেশি প্রীতি,  মঞ্চে উঠে সেই ক্লান্তি  ম্যাজিকের মত উধাও হয়ে গিয়েছে। ”  তিনি আরও জানালেন,”   বাঁশির প্রতি আমার  অনুরাগ অনেক বেশি। তাই কোনও বাঁধাকে বাঁধা বলে মনে হয় না। আসলে সময়ের অভাব থাকলেও, সবকিছু ছাপিয়ে গিয়েছে আমার  বাঁশির প্রতি ভালবাসা। ”  বর্তমানে তিনি এসপি পদমর্যাদায় কাজ করলেও,  পদোন্নতিতে আরও বড় পদ পাবেন তিনি  । কিন্তু এতদিন  যখন কাজ সামলে  বাঁশিকে সঙ্গে নিয়ে চলতে পেরেছেন,  তাই ভবিষ্যতেও  এই বাঁশির জন্য তাঁর আর কোনও অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন তিনি।