ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব ২৪

নিশীথ সিংহ রায়: সম্প্রতি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির রথীন্দ্র মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসব ও গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এশিয়ান বিজনেস পার্টনারশিপ সামিট ও ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটির উদ্যোগে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ৭১ মুক্তিযুদ্ধকে মননে-স্মরণে ধরে রেখে ভারত-বাংলাদেশ সম্প্রীতি উৎসবের এই অনুষ্ঠানে দুই দেশের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনৈতিক, ব্যবসায়িক বা সমাজের বিভিন্ন আঙ্গিকের কয়েক শতাধিক উৎসাহি গুণিজনের সমাবেশে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির রথীন্দ্র মঞ্চ বাস্তবিক অর্থেই নক্ষত্রের মিলন মেলায় পরিচিত হয়েছিল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে দুই দেশের ইন্দো বাংলা খোলা জানলার শিল্পীদের কন্ঠে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত অনুষ্ঠানটিকে এক উচ্চাসনে নিয়ে যায়। এরপর বর্তমান বাংলাদেশ যে এক ভয়ঙ্কর অপ্রীতিকর ঘটনার মধ্যে দিয়ে চলছে তা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করা হয় এবং এটা খুব দুঃখের ব্যাপার যে সেখানে অনেক মানুষের অকালে প্রাণ গেছে। যা মোটেই কাম্য নয়। আশা করা যায় সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ একসাথে রসে এর একটা আশু সুষ্ট সমাধান করবে। আমরা প্রার্থনা করি এই সমস্যা মিটে সেখানে শান্তি নেমে আসবে। বাংলাদেশ বিজনেস পার্টনার সামিটের কর্ণধার গুলাম ফারুক এই শান্তির বার্তা সংস্থার তরফে জানান। ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটির চেয়ারম্যান মিঃ. মজনু বলেন, ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী আরও দৃঢ় হোক এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মলগ্নে ভারতের অবদান আমরা কোনোদিন ভুলেও না।

অনুষ্ঠানে দুই দেশের গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মাননীয় মন্ত্রী অরূপ রায়, নগর পিতা মাননীয় দেবাশীষ কুমার, কলকাতার স্টেটসম্যান গ্রুপের আধিকারিক মাননীয় গোবিন্দ মুখার্জী, অধ্যাপক বাসুদেব ভট্টাচার্য বিশিষ্ট চিত্র শিল্পী অলোক রায়, নৃত্যশিল্পী মেঘমিতা মিত্র, সুপর্ণা মুখার্জী প্রমূখ। বাংলাদেশ থেকে এডভোকেট মায়া রায়, মানব সেবক এডভোকেট খায়রুল আলম, প্রমূখ। স্টেটসম্যান আধিকারিক গোবিন্দ বাবু তাঁর ছোট্ট বক্তব্যে বলেন, ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসবে আসতে পেরে আমি খুব গর্বিত বোধ কবছি কারণ আমরা আজ যেখানে দাঁড়িয়ে এই অনুষ্ঠান করছি তা ভারত বাংলাদেশ দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান এবং যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই অনুষ্ঠান করছি তা রথীন্দ্র নাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত। আর যাঁর নামাঙ্কিত ‘শান্তি’ পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে তিনি আমাদের জাতির পিতা মাহাত্মা গান্ধী। সঞ্চালনায় ছিলেন মৌ ভট্টাচার্য ও নিমাই মন্ডল।


সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ও নজরুল গবেষক ডঃ দীপা দাস। বাংলাদেশের এরকম অগ্নিগর্ব পরিস্থিতির মধ্যে দু’দেশের বিশেষত বাংলাদেশের এত মানুষের সমাবেশ কি করে সম্ভব? এই প্রশ্নের জবাবে সম্পর্কে তিনি জানান, আত্মার টানে। আমি নিজেও একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিবারের সদস্যা। তাই জানি ‘স্বাধীনতা’ শব্দটির কি অন্তর্নিহিত কি অর্থ। যেকারনে স্বাধীনতার প্রশ্নে ভারত-বাংলাদেশ যেখানেই থাকুক না কেন তারা সর্বদা এক। আর সঙ্গীত শিল্পী এবং নজরুল গবেষক হিসেবে একটি কবিতার লাইনই এই আবেগঘন মুহুর্তে মনে পড়ছে যা হলো :

ভারতের দুই নয়ন তারা হিন্দু – মুসলমান
দেশ জননীর সমান প্রিয় যুগল সন্তান।।

আমরা আশা করবো এশিয়ান বিজনেস পার্টনারশিপ সামিট ও ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সোসাইটি আগামীদিনেও এরকম ভাবে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে যেমন তাদের শিক্ষা সংস্কৃতির উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাবে তেমনই দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ করবে।