নিজস্ব প্রতিনিধি— ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় রোটারি সদনে একটি বর্ণময় ও মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের মধ্যে প্রকাশিত হল দৈনিক স্টেটসম্যানের ‘নববর্ষ ১৪৩১’ পত্রিকা এবং সেই সঙ্গে সেখানে বসেছিল বিশিষ্টজনেদের নিয়ে বৈঠকী আড্ডার আসর৷
মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়৷ প্রদীপ প্রজ্বলন করেন শিক্ষাবিদ ড. পবিত্র সরকার, বাচিকশিল্পী ঊর্মিমালা বসু, কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী, কবি-সাহিত্যিক সৈয়দ হাসমত জালাল, দৈনিক স্টেটসম্যানের সম্পাদক শেখর সেনগুপ্ত ও স্টেটসম্যান গ্রুপের কলকাতা শাখার প্রধান গোবিন্দ মুখার্জি৷ স্বাগত ভাষণ দেন শেখর সেনগুপ্ত ও অনুষ্ঠানের প্রাক্-কথন করেন গোবিন্দ মুখার্জি৷
অনুষ্ঠানের শুরুতে আটখানি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীতশিল্পী মহুয়া সুর৷ রবীন্দ্রনাথের বসন্ত ঋতুর গান, প্রেম ও পূজা পর্যায়ের গান, বাউলাঙ্গের গান এবং সবশেষে আসন্ন নববর্ষের প্রার্থনা হিসেবে ‘বরিষ ধরামাঝে শান্তির বারি’ পরিবেশন করেন তিনি৷ এই গানের মধ্যে দিয়ে একটি মধুর ভাব গম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়৷
এরপর বরণ করে নেওয়া হয় বিশিষ্ট অতিথিদের৷ তাঁরা হলেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, ড. পবিত্র সরকার, ঊর্মিমালা বসু, অরুণ কুমার চক্রবর্তী, অভিনেতা-নাট্য পরিচালক গৌতম হালদার, অভিনেত্রী-পরিচালক সুদেষ্ণা রায় ও সৈয়দ হাসমত জালালকে৷
এঁদের নিয়েই বসে এদিনের বৈঠকী আড্ডার আসর৷ হাসমত জালালের সুচারু সঞ্চালনায় অতিথিরা প্রত্যেকে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদরে অনুভূতি, অভিজ্ঞতা ও স্মৃতির কথা বলেন৷ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তাঁর কাব্যগ্রন্থ থেকে দুটি কবিতা পড়ে শোনান৷ তাঁর গান গাওয়া, নাটক করা, বক্সিং খেলার কথাও উঠে আসে তাঁর স্মৃতিচারণায়৷ তিনি বলেন, তাঁর শ্বশুরালয় চাইবাসার কথাও৷ এদিন একেবারেই ভিন্ন মেজাজে পাওয়া গেল মন্ত্রী শোভনদেবকে৷
শৈশবের বাংলাদেশের মধুর বন্ধুত্বের স্মৃতিকথা শোনালেন ড. পবিত্র সরকার৷ সেখানকার ধর্মনিরপেক্ষ বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের দিকটিও তুলে ধরেন তিনি৷
অন্যান্য অতিথিরাও সরস বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে, তাঁদের সাংস্কৃতিক জীবনের মজার ঘটনা শুনিয়ে শ্রোতাদের মন জয় করে নেন৷ ঊর্মিমালা বসু তাঁর এক ছাত্রীকে নিয়ে চমৎকার একটি শ্রুতিনাটক পরিবেশন করেন৷
এরপর অনুষ্ঠানে আগত অন্যান্য অতিথিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ফুলের স্তবক ও দৈনিক স্টেটসম্যানের ‘নববর্ষ ১৪৩১’ সংখ্যাটি৷ মাননীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এই সংখ্যার অতিথি সম্পাদক নিশীথ সিংহরায়ের হাতে তুলে দেন ফুল ও স্মারক৷ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন দৈনিক স্টেটসম্যানের চিফ রিপোর্টার দেবাশিস দাস৷
সমগ্র অনুষ্ঠানটিকে দক্ষ সঞ্চালনায় এগিয়ে নিয়ে যান আবৃত্তিকার ও দূরদর্শনের সংবাদ পাঠিকা স্বপ্না দে৷
এই নির্বাচনের তপ্ত আবহাওয়ার মধ্যেও একটি অরাজনৈতিক, সম্প্রীতিময় সাংস্কৃতিক সম্মিলনের সাক্ষী হয়ে রইল স্টেটসম্যান গ্রুপ আয়োজিত এই সুন্দর সন্ধ্যাটি৷