কত্থকের এক সন্ধ্যা

প্রতীকী চিত্র

উত্তম মঞ্চ, কলকাতায় অনুষ্ঠিত ডোভার লেন মিউজিক কনফারেন্স এবং ডোভার লেন মিউজিক একাডেমির আয়োজনে হিন্দুস্তানি ক্লাসিকাল ডান্স ফেস্টিভালে কথক নৃত্যের এক জাদুকরী সন্ধ্যা উপহার দিলেন কত্থকশিল্পী সুলগ্না বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়াত পণ্ডিত বিরজু মহারাজ এবং পণ্ডিত বিজয় শঙ্করের সুযোগ্য শিষ্যা সুলগ্না, তাঁর অদম্য প্রতিভা, নিষ্ঠা

ও আবেগ দিয়ে দর্শকদের মোহিত করলেন। পরিবেশনার শুরুতেই গণেশ স্তুতির মাধ্যমে ভক্তিরসে ভিজিয়ে দেন তিনি। এরপর ‘গণেশ পরণ’ এবং ‘গণেশ বন্দনা’ পরিবেশন করে তাল ধামারে তাঁর নিখুঁত পায়ের কাজ এবং লয়ের জটিলতা দর্শকদের মুগ্ধ করে। ‘গৎনিকাস’-এর মধ্য দিয়ে লখনউ ঘরানার কত্থকের নাজাকাত সুস্পষ্ট হয়, যেখানে নারীর কোমলতা এবং সৌন্দর্য অনবদ্যভাবে ফুটে ওঠে। ‘ঠুমরি’ “মোহে ছেরো না নন্দকে”-তে শিল্পীর অভিব্যক্তিতে রাধার আকুলতা দর্শকদের হৃদয় গভীরভাবে নাড়া দেয়। অতঃপর ‘দ্রুত তিন তাল’-এ তাঁর চমৎকার পায়ের কাজ এবং প্রাণবন্ত ঘূর্ণন নৃত্যে এক বিদ্যুতের প্রবাহ সৃষ্টি করে।

সওয়াল-জবাব অংশটি দর্শকদের সাথে এক অন্তরঙ্গ মেলবন্ধন তৈরি করে, যা তাঁর সৃজনশীলতা এবং সঙ্গীতের গভীর সংযোগ প্রকাশ করে। পরিবেশনার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞরা: ফারুখাবাদ ঘরানার খলিফা উস্তাদ সাবির খান সাহেব তবলার তালে সুলগ্নার নৃত্যকে সম্পূর্ণতা দেন। প্রতীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠ, সন্দীপ নিয়োগীর সেতার এবং আসিফ খানের বোল পড়ন্ত পরিবেশনার মধ্যে অতুলনীয় প্রাণসঞ্চার করেন। এই সন্ধ্যা ছিল এক অনবদ্য শিল্পযজ্ঞ, যা কথকের চিরন্তন মহিমা এবং সুলগ্না বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পসাধনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জাগিয়ে তোলে।