‘মহাশিবরাত্রি’ থেকে শিবের গাজন

প্রদীপ মারিক:  তিনি একটা বেলপাতাতেই তুষ্ট, তিনিই ত্রিলোকের অধীশ্বর, তাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ কেউ নেই৷ বেদব্যাসের ‘বৃহৎ শিবপুরাণ’এ রয়েছে, ‘শিব হতে শ্রেষ্ঠতর কিছুমাত্র নাই, শিবশম্ভু সবার শ্রেষ্ঠ জানিবে সবাই৷’ দেবাদিদেব মহাদেব হলেন স্বয়ম্ভু, তাঁকে কেউ সৃষ্টি করেননি৷ তিনি নিজে নিজেই উদ্ভূত হয়েছিলেন৷ তিনি যেমন শান্ত তেমন রুদ্র নটরাজ৷ মহাশিবরাত্রি হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবাদিদেব মহাদেবের ‘মহা রাত্রি’৷ শিব পুরাণ অনুসারে, এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহাতাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন৷ অন্ধকার আর অজ্ঞতা দূর করার জন্য এই ব্রত পালিত হয়৷ বেশ কয়েকটি পুরাণে মহাশিবরাত্রির উল্লেখ রয়েছে৷ বিশেষ করে স্কন্দপুরাণ, লিঙ্গপুরাণ এবং পদ্মপুরাণে৷ এই মধ্যযুগীয় শৈব গ্রন্থগুলিতে উপবাস ও লিঙ্গরূপের শিবের পুজোর কথা উল্লেখ রয়েছে৷ বিভিন্ন কিংবদন্তী মহাশিবরাত্রির তাৎপর্য বর্ণনা করে৷ একটি কিংবদন্তি অনুসারে, এই মহা দিবারাত্রির রাতে শিব সৃষ্টি, সংরক্ষণ এবং ধ্বংসের স্বর্গীয় তাণ্ডব নৃত্য করেন৷ ভক্তেরা তাই এই রাতে মহাদেবের স্তোত্রের জপ, শিব ধর্মগ্রন্থ পাঠ এবং ভক্তদের ঐক্যতান সংগীত এই মহাজাগতিক নৃত্যে যোগ দেয় এবং সর্বত্র শিবের উপস্থিতি স্মরণ করে৷ মহা শিবরাত্রি হিন্দু লুনি-সৌর ক্যালেন্ডারের উপর ভিত্তি করে তিন বা দশ দিন ধরে পালিত হয়৷ প্রতি চন্দ্র মাসে একটি শিবরাত্রি হয়৷

প্রধান উৎসবকে বলা হয় মহা মহান শিবরাত্রি, যা ১৩তম রাতে অর্থাৎ অস্তমিত চাঁদ এর অবস্থানকালে ফাল্গুন মাসে অনুষ্ঠিত হয়৷ গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জিতে দিনটি ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে পড়ে৷ শিবপুরাণে ১২টি সংহিতায় এক লক্ষ শ্লোক রয়েছে৷ প্রতি বছর ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহা শিবরাত্রি পালিত হয়৷ উপবাস রেখে শিবের পুজো করেন সকলে৷ প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, এদিন শিব ও পার্বতীর বিবাহ হয়েছিল৷ এই উপলক্ষে মহাশিবরাত্রি পালিত হয়৷ এখানে পুরাণে বর্ণিত শিব-পার্বতীর বিবাহের কাহিনি সম্পর্কে জানা যায়৷ পার্বতী শিবের বিবার শুধু সময়ের অপেক্ষায় ছিল৷ হরগৌরীর মিলন হবেই এটাই নিশ্চিত৷ পাশাপাশি সমস্ত দেবতাও শিব-পার্বতীর বিবাহে ইচ্ছুক ছিলেন৷ পার্বতীর কাছ থেকে বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে দেবতারা কন্দর্পকে শিবের কাছে পাঠিয়েছিলেন৷ শিব সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ও তৃতীয় নেত্র দিয়ে তাঁকে ভষ্ম করে দেন৷ কিন্ত্ত শিবকে নিজের স্বামী রূপে মেনে নিয়েছিলেন পার্বতী৷

তাই শিবকে পাওয়ার জন্য কঠোর তপস্যা শুরু করেছিলেন তিনি৷ তাঁর তপস্যার জোরে সমস্ত স্থানে হাহাকার শুরু হয়েছিল৷ বড় বড় পর্বতের ভিতও নড়ে গিয়েছিল৷ তখন শিব নিজের ধ্যান থেকে উঠেছিলেন এবং পার্বতীকে বলেন, তিনি যেন কোনও যুবরাজের সঙ্গে বিয়ে করে নেন৷ কারণ শিবের সঙ্গে বসবাস করা সহজ কথা নয়৷ কিন্ত্ত হিমালয়কন্যা পার্বতী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি শিব ছাড়া কাউকে বিবাহ করবেন না৷ পার্বতীর ভালোবাসা দেখে মহাদেব তাঁকে বিবাহ করতে প্রস্ত্তত হয়েছিলেন৷ শিব যখন পার্বতীর সঙ্গে বিবাহ করতে যান, তখন তাঁর সঙ্গে ডাকিনি, ভূত-প্রেত, পেত্নীরাও ছিল৷ ডাকিনি ও পেত্নীরা শিবকে ভষ্ম দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছিলেন এবং হাড়ের মালা পরিয়েছিলেন৷ শিবের এই আশ্চর্যজনক বরযাত্রী পার্বতীর গৃহে পেঁৗছলে সমস্ত দেবতা চমকে ও ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন৷ এই বিচিত্র রূপে শিবকে মেনে নিতে পারেননি পার্বতী মা৷ তখন তিনি শিবের সঙ্গে নিজের মেয়ের বিবাহ দিতে অসম্মত হয়েছিলেন৷ পরিস্থিতি খারাপ দিকে এগোতে দেখে পার্বতী শিবকে বিবাহের জন্য নিয়মনীতি অনুযায়ী তৈরি হয়ে আসতে প্রার্থনা করেছিলেন৷ শিব তাঁর প্রার্থনা স্বীকার করেছিলেন৷ সমস্ত দেবী-দেবতা তাঁকে সুন্দরভাবে বরবেশে সাজিয়েছিলেন৷ ঐশ্বরিক জল দিয়ে মহাদেবকে স্নান করানো হয়, রেশমের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল৷ শিবের এই দিব্য রূপ দেখে পার্বতীর মা বিবাহে রাজি হয়েছিলেন৷ ব্রহ্মার উপস্থিতিতে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল৷ গোটা দেশে মহা ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয় মহাশিবরাত্রি৷ শিবরাত্রি আসলে হল শিব ও পার্বতীর মিলন উৎসব৷ ধ্বংসের দেবতা শিবের সঙ্গে এই রাতে মিলন ঘটে প্রেম, সৌন্দর্য ও ক্ষমতার দেবী পার্বতীর৷ দেবী পার্বতীর অন্য নাম শক্তি৷ শিব ও শক্তির মিলনের উৎসবই হল শিবরাত্রি৷ পুরাণ অনুসারে মহাদেব ও পার্বতীর বিয়ের রাতে অনেক দেব, দেবী, পশু ও রাক্ষস মিলে শিবকে পার্বতীর ঘরে নিয়ে যান৷


শিব ও পার্বতী হলেন মিলন, প্রেম ও শক্তির আধার৷ মহাশিবরাত্রির উৎসব তাঁদের এই মিলন ও আত্মিক বন্ধনকে উদযাপন করে৷ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদিন সকাল থেকেই শিবমন্দিরগুলিতে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে৷ ওম নমঃ শিবায় এবং হর হর মহাদেব মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে ভোর থেকেই মন্দিরগুলির বাইরে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন পুণ্যার্থীরা৷ শিব মন্দিরগুলিতে গোটা রাত ধরে এদিন চলে বিশেষ পূজার্চ্চনা৷ মহাশিবরাত্রি অনুষ্ঠানে ভারতবর্ষের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ তথা সোমনাথ, মল্লিকার্জুন, মহাকালেশ্বর, ওঁকারেশ্বর, কেদারনাথ, ভীমশঙ্কর, বিশ্বেশ্বর, ত্র্যয়ম্বকেশ্বর, বৈদ্যনাথ, নাগেশ্বর, রামেশ্বর ও ঘুশ্মেশ্বর-এ বহু মানুষের সমাগম হয় ও সবার হাতে এই জ্যোতির্লিঙ্গের পুজো ও পবিত্র স্পর্শলাভ ঘটে৷ সোমনাথ মন্দিরের আরাধ্য দেবতা শিব সোমেশ্বর মহাদেব নামে পরিচিত৷ পুরাণ অনুসারে, সত্যযুগে সোমেশ্বর মহাদেব ভৈরবেশ্বর, ত্রেতাযুগে শ্রাবণিকেশ্বর ও দ্বাপর যুগে শ্রীগলেশ্বর নামে পরিচিত ছিলেন৷ সোমনাথ মন্দির ভারতের একটি প্রসিদ্ধ শিব মন্দির৷ গুজরাত রাজ্যের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের বেরাবলের নিকটস্থ প্রভাস ক্ষেত্রে এই মন্দির অবস্থিত৷ এটি হিন্দু দেবতা শিবের দ্বাদশ লিঙ্গের মধ্য পবিত্রতম৷ সোমনাথ শব্দের অর্থ ‘চন্দ্র দেবতার রক্ষাকর্তা’৷

সোমনাথ মন্দিরটি ‘চিরন্তন পীঠ’ নামে পরিচিত৷ মল্লিকার্জুন জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির হল দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের শ্রীশৈলমে অবস্থিত একটি শিবমন্দির৷ শিব মহাপুরাণ অনুসারে, একবার সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা ও রক্ষাকর্তা বিষ্ণুর মধ্যে তাঁদের মধ্যে জগতে কে শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে তর্ক বেঁধেছিল৷ তাঁদের পরীক্ষা করার জন্য শিব ত্রিভুবনকে একটি অনন্ত আলোর লিঙ্গ বা জ্যোতির্লিঙ্গ দ্বারা বিভক্ত করেছিলেন৷ বিষ্ণু ও ব্রহ্মা দুই দিকে সেই লিঙ্গের উৎস খুঁজতে বের হন৷ ব্রহ্মা মিথ্যা বলেন যে, তিনি জ্যোতির্লিঙ্গের অন্ত খুঁজে পেয়েছেন৷ বিষ্ণু পরাজয় স্বীকার করে নেন৷ শিব দ্বিতীয় জ্যোতির্লিঙ্গরূপে আবির্ভূত হয়ে ব্রহ্মাকে অভিশাপ দেন যে কোনও পুজো অনুষ্ঠানে তাঁর স্থান থাকবে না৷ অন্যদিকে তিনি বিষ্ণুকে আশীর্বাদ করেন যে বিষ্ণু প্রলয়কাল অবধি পূজিত হবেন৷ জ্যোতির্লিঙ্গ হল সর্বোচ্চ অখণ্ড সত্য, যাতে শিব আংশিকভাবে আবির্ভূত হন৷ মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির হল হিন্দু দেবতা শিবের একটি মন্দির এবং বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম৷ এই মন্দিরটি ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের উজ্জয়িনী শহরে রুদ্রসাগর হ্রদের তীরে অবস্থিত৷ এই মন্দিরের শিবলিঙ্গটিকে স্বয়ম্ভু বা শিবের সাক্ষাৎ-মূর্তি মনে করা হয়৷

কেদারনাথ মন্দির হিন্দুদের অন্যতম প্রধান তীর্থক্ষেত্র৷ এটি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গাড়োয়াল হিমালয় পর্বতশ্রেণিতে অবস্থিত কেদারনাথ শহরে মন্দাকিনী নদীর তীরে স্থাপিত একটি শিব মন্দির৷ এখানকার তীব্র শীতের জন্য মন্দিরটি কেবল এপ্রিল মাসের শেষ থেকে কার্তিক পূর্ণিমা অবধি খোলা থাকে৷ শীতকালে কেদারনাথ মন্দিরের মূর্তিগুলিকে ছয় মাসের জন্য উখিমঠে নিয়ে গিয়ে পুজো করা হয়৷ হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, রাবণ হল শিবের পরম ভক্তের মধ্যে একজন তাই রাবণের অনুরোধে শিবের কৃপায় কৈলাস পর্বত থেকে রাবণ শিবকে নিয়ে যাচ্ছিল লিঙ্গ রূপে৷ কিন্ত্ত শিবপুত্র গণেশের ছলনাতে রাবণ শিবলিঙ্গ নিয়ে যেতে পারেনি লঙ্কায়৷ সেই শিবলিঙ্গ বৈদ্যনাথ নামে আবির্ভূত হয়৷ শিবের আরাধনায় শিবরাত্রির মাহাত্ম্য সাংঘাতিক৷ সারা দেশজুড়ে পালিত হয় শিবচতুর্দশীর ব্রত৷ হিন্দু ধর্মে বলা হয়, শিবরাত্রি ব্রত পালন করে ভোলা মহেশ্বরকে সন্ত্তষ্ট করা যায়৷ আরও বলা হয়, এই ব্রত পালনকারীদের কারুর মনস্কামনাই ফেরান না মহাদেব৷ ভক্তরা সারাদিন উপবাস রাখেন রাতে চারপ্রহর মহাদেবের মাথায় জল ঢালেন৷ বিশ্বজুড়ে শিব মন্দিরগুলিতে পুজো করা হয়৷ ভক্তরা সাধারণত শিবলিঙ্গে দুধ নিবেদন করে এবং মোক্ষ লাভের প্রার্থনা করে৷ এছাড়াও ভক্তরা সারারাত প্রার্থনা করে এবং ভগবান শিবের প্রশংসায় মন্ত্র উচ্চারণ করে৷ পুরুষ ও মহিলারা একই সঙ্গে এই পুজো করেন৷

শিবপুজোর অন্যতম অঙ্গ শিবলিঙ্গকে স্নান করানোর জন্য মূলত গঙ্গাজল বা দুধ, ঘি, গঙ্গাজল মেশানো জল ব্যবহার করা হয়৷ আর শিবলিঙ্গের মাথায় অর্পণ করা হয় তিনটি পাতাযুক্ত যৌগিক বেলপাতা৷ ভক্তের বিশ্বাস যে, মহাশিবরাত্রির উপবাস ভক্তদের মনে করিয়ে দেয় যে অহংকার, অহং এবং মিথ্যা শুধু একজনকে পতনের দিকে নিয়ে যায়৷ শিবরাত্রির জন্য প্রচলিত একটি গল্প শোনা যায়— কোনও এক কালে বারাণসীতে এক ভয়ঙ্কর ব্যাধ বাস করত৷ যে কোনও হিংস্র জন্ত্তকেই অনায়াসে ঘায়েল করে ফেলত এই ব্যাধ৷

শিকারের এমন কোনও অস্ত্র ছিল না যা তার কাছে ছিল না৷ প্রায় প্রতিদিনই শিকার করতে যেত সে৷ জঙ্গল থেকে পশুপাখি মেরে কিছুটা বাজারে বিক্রি করত৷ বাকিটা উদরস্থ করত নিজেই৷ এরকমই একদিন জঙ্গলে শিকার করতে গিয়ে অন্যদিনের তুলনায় অনেক বেশি পশু হত্যা করে ফেলে ওই ব্যাধ কিন্ত্ত রাতে হিংস্র পশুর ভয়ে গাছে উঠে পড়ে এবং যে গাছে উঠেছিল সেটা ছিল বেল গাছ৷ সে খিদে তৃষ্ণার জ্বালায় বেল গাছ থেকে একটা করে শিশির মাখা বেলপাতা ছিঁড়তে থাকে আর গাছ থেকে ফেলতে থাকে৷ গাছের নীচে পাতা চাপা একটা শিবলিঙ্গ ছিল, বাড়ি ফিরে ব্যাধ প্রচুর খিদে নিয়ে খেতে বসবে সেই সময় এক ভিক্ষুক আসে৷ সে ভিক্ষুককে নিজের মুখের খাবার তুলে দেয়৷ তার যখন মৃতু্য হয় এত পশুবলি করেও তার বৈকু্ণ্ঠলোক প্রাপ্তি হয় কারণ সে নির্জলা থেকেই তার অজান্তেই শিবচতুর্দশী ব্রত করেছিল৷ বিশ্বাস ও পুরাণ অনুসারে, চতুর্দশী তিথিতে শিবলিঙ্গরূপে মহাদেব আবির্ভূত হন৷ সর্বপ্রথম ভগবান বিষ্ণু ও ব্রহ্মা তাঁকে পুজো করেছিলেন৷ সেই থেকে এই শুভ দিনটিকে ভগবান শিবের জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়৷ বিশ্বাস করা হয় যে এই উপবাস রাখলে ভক্তের জীবন সুখ-শান্তিতে ভরে যায়৷ পাশাপশি রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়৷ মহাশিবরাত্রি পালনে এক স্বর্গীয় সুখ অনুভব করেন সমস্ত ভক্তরা৷