পুজোর কেনাকাটার মুখে হাত পুড়ছে সোনা-রূপার বাজারে

সামনেই দুর্গা পুজো। হাতে আর মাত্র পঁচিশ দিন বাকি। কিন্তু এবার মানুষের মনে পুজোর আনন্দের সেই রেশ আর নেই। গত ৯ আগস্ট আরজি কর হাসপাতাল থেকে তিলোত্তমার ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধারের পর শহরের মুখ ভার। মানুষ আর আগের মতো পুজোর কেনাকাটায় মেতে উঠছেন না। তাই বলে একেবারে যে কেনাকাটা হচ্ছে না, এমন নয়। জৌলুশ কিছুটা কমলেও বাড়ির কচি কাঁচা থেকে শুরু করে অন্যান্য সদস্যদের হাসি-খুশি রাখতে পুজোর কেনাকাটা চলছে প্রায় সমানতালে। জামা-কাপড়, জুতো থেকে শুরু করে অলঙ্কার– সব জায়গাতেই কেনাকাটার ভিড়। যার ফলে এবার প্রভাব পড়েছে সোনা-রূপার বাজার দরেও। সেজন্য শুক্রবার এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়ল সোনার বাজার দর।

পুজোর কেনাকাটার মুখে একদিনেই সোনার দাম বাড়ল প্রায় ১৩০০ টাকা। বৃহস্পতিবার বাজার বন্ধকালীন প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম ছিল ৭১ হাজার ৯০০ টাকা। আজ শুক্রবার সেটা বেড়ে হল ৭৩ হাজার ২০০ টাকা। ফলে স্বাভাবিকভাবে গহনা সোনার দামও সমান অনুপাতে বেড়েছে। গতকাল প্রতি ১০ গ্রাম গহনা সোনার দাম ছিল ৭২ হাজার ৩০০ টাকা। আজ, বাজার বন্ধকালীন সময়ে সেই সোনার দাম আরও ১২৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শুক্রবার প্রতি ১০ গ্রাম গহনা সোনার বর্ধিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৫৫০ টাকা। একইভাবে হলমার্ক গহনার মূল্যও সমানতালে বেড়েছে। বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট বেঙ্গল বুলিয়ান মার্চেন্টস এন্ড জুয়েলার্স এসোসিয়েশন ঘোষিত বাজার বন্ধকালীন প্রতি ১০ গ্রাম হলমার্ক গহনার মূল্য ছিল ৬৮ হাজার ৭৫০ টাকা। আজ সেটা প্রতি দশ গ্রামে আরও ১১৫০ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছে এই সংস্থা। ফলে শুক্রবার বাজার বন্ধকালীন সময়ে প্রতি ১০ গ্রাম হলমার্ক গহনার বর্ধিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৯ হাজার ৯০০ টাকা।

তবে শুধু যে সোনার বাজার দরেই এই কোপ পড়েছে, এমন নয়। একদিনে অনেকটাই বেড়েছে রুপোর বাজারদর। বৃহস্পতিবার যে রুপোর বাট কেজি প্রতি ৮৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিল, শুক্রবার একধাক্কায় তা বেড়েছে ২৮৫০ টাকা। ফলে শুক্রবার প্রতি কেজি রুপোর বাটের বর্ধিত মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৬ হাজার ৫৫০ টাকা। একইভাবে রুপোর খুচরো মূল্যও কেজি প্রতি একধাক্কায় বেড়েছে ২৮৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার বাজার বন্ধকালীন খুচরো রুপোর প্রতি কেজি মূল্য ছিল ৮৩ হাজার ৮০০ টাকা। শুক্রবার তা বেড়ে হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৫০ টাকা।


এদিকে পুজোর মরশুম যেতে না যেতেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আসবে অগ্রহায়ণ মাস। তখন ভরা বিয়ের মরশুম শুরু হয়ে যাবে। পুজোর কেনাকাটার সঙ্গে সঙ্গে বিয়ের আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেকে। যদিও ভাদ্র মাস মলমাস হওয়ার কারণে অনেকে এই মাসে কেনাকাটা করেন না। ফলে আর কিছুদিন পরেই ছেলের আশীর্বাদী আংটি ও সোনার চেন থেকে শুরু করে মেয়ের দেহের একাধিক অলঙ্কার কেনাকাটা শুরু হয়ে যাবে। আবার বরপক্ষও নতুন বধূর আশীর্বাদী অলঙ্কার থেকে শুরু করে ছেলের বিয়ের আংটি,  চেন ও পোশাক সহ অন্যান্য জরুরি কেনাকাটা সেরে রাখবেন। ফলে সোনার বাজারে যে আগামী কয়েকমাসে আরও কোপ পড়তে পারে, এরকম আশঙ্কা অনেকেই করছেন।