সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকে নির্দেশ মুখ্যসচিবের

বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির পসরা। ফাইল চিত্র

সবজির বাজারে দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া, বিশেষত আলুর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। এই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির পরিস্থিতি সামাল দিতে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমঘরে রাখা আলুর মেয়াদ বাড়ানো হবে না বলে জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার নবান্নে খাদ্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে টাস্ক ফোর্সের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না এবং পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার–সহ নানা দপ্তরের অফিসার, পুলিশ কর্তারা ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

জেলাশাসকরাও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে অংশ নেন। ওই বৈঠকে অবিলম্বে আলুর দাম কমানোর জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। খুচরো বাজারে নিয়মিত সবজির দামের উপর নজর রাখবে প্রশাসন।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে হিমঘরে আর আলু রাখা যাবে না। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, জ্যোতি আলুর দাম কেজি প্রতি ২৫ টাকা নির্ধারণ করতে হবে, যেখানে বর্তমানে কলকাতার খুচরা বাজারে এর দাম ৩৫ টাকা। কিছুদিন আগেই এই দাম ছিল ৩২ টাকা। দাম বাড়ার কারণে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতায় প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে উৎসবের সময়। কালীপুজো, দীপাবলি এবং ভাইফোঁটাকে সামনে রেখে আলুর এই লাগামছাড়া দাম মানুষের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।


এছাড়াও কালীপুজো ও ভাইফোঁটার সময় প্রতিটি বাজারে টাস্ক ফোর্সকে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। দুর্গাপুজোর পর ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবেও শাকসবজির দাম বেড়েছে। এই অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে বলা হয়েছে। ৩০ নভেম্বরের পর হিমঘরের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না, এই সময়সীমার মধ্যেই সব আলু বের করে নিতে হবে বলে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে আলু ব্যবসায়ীদের দাবি, অতিবৃষ্টির কারণে হিমঘর থেকে কম আলু সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি, তাই দাম বেড়ে গেছে। তবে তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন, দাম শীঘ্রই কমে আসবে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় জানান, ‘হিমঘরে আলুর দাম কেজি প্রতি মাত্র ১ টাকা বেড়েছে, তবুও খুচরা বাজারে ৩৫ টাকা দর হওয়া অস্বাভাবিক।’ বৈঠকে টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে রিপোর্ট প্রদান করা হবে। মুখ্যসচিব কালোবাজারি হলে কড়া ব্যবস্থা নিতে রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।