রাজ্যের জুটমিল আধুনিকীকরণে চটের বস্তার দাম বৃদ্ধিতে সবুজ সঙ্কেত দিল কেন্দ্র

নিয়ম মেনে চটকলগুলি থেকে চটের বস্তা কেনে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্রের দেওয়া সেই দাম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা আপত্তি ছিল উৎপাদনকারী চটশিল্প মহলে। এজন্য তারা বারবার দাম বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল। এবার সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, চটের বস্তার দাম বৃদ্ধিতে নতুন নিয়ম আনা হচ্ছে। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সেই অনুমোদন দিয়েছে। ফলে বস্তা পিছু বাড়তি দাম পেতে চলেছে চটকলগুলি। তাতে উপকৃত হবে বহু চটক। এই চটকল শ্রমিক ও পাট চাষিদের আর্থিক সুরাহা দেবে। এমনটাই দাবি করা হয়েছে। চটের বস্তার এই পরিবর্তিত মূল্য ২০১৬ সাল থেকে নির্ধারিত হয়ে আছে। কিন্তু এতদিন সেটা কার্যকর হয়নি।  তবে নতুন সিদ্ধান্তে কতটা দাম বাড়াবে কেন্দ্র, তা সরকারিভাবে এখনও জানা যায়নি। শিল্প মহলের ধারণা, দাম বাড়তে পারে বস্তা পিছু ২ থেকে ২.৫ টাকা। কেন্দ্র দাবি করেছে, বিহার, অসম, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও অন্ধ্রপ্রদেশের পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে পশ্চিমবঙ্গ। কারণ, এখানে ৮০টি জুটমিল কয়েক লক্ষ মানুষের রুটিরুজির জোগান দেয়।

প্রসঙ্গত খাদ্যশস্যের প্যাকেজিংয়ের জন্য ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে চটের বস্তা কেনার কথা কেন্দ্রের। চিনির প্যাকেজিংয়ে অন্তত ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম চালু আছে। সরকারের দাবি, প্রতিবছর তারা চটকলগুলি থেকে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বস্তা কেনে। এতে চার লক্ষ শ্রমিক এবং ৪০ লক্ষ কৃষক পরিবার উপকৃত হয়। নতুন পদ্ধতিতে বস্তার দাম স্থির হলে, বিপুল সংখ্যক মানুষ আর্থিকভাবে সুরাহা পাবেন, এমনটাই দাবি করেছে কেন্দ্র।

সূত্রের খবর, চটের বস্তার যে দাম ঠিক হবে, তার প্রভাব ২০১৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। অর্থাৎ ওইসময় থেকে যে দামে চটের বস্তা কিনেছে কেন্দ্রীয় দপ্তরগুলি, তার উপর বাড়তি দাম চোকানোর কথা তাদের। এতে বকেয়া প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা আসতে পারে শিল্প মহলে। তা যদি আসে, তাহলে জুটমিলের আধুনিকীকরণে হাত দেবে একাধিক চটকল, এমনটাই জানা গিয়েছে।


উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে মোট পাটের বস্তা উৎপাদিত হয় প্রায় ৯ লক্ষ মেট্রিক টন। রাজ্যের বারাকপুরেই রয়েছে বহু চটকল। এখানে প্রায় দেড় লক্ষ কর্মী চটকলে কাজ করেন। সম্প্রতি বারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক চটকলগুলির দুর্দশা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিজিরাজ সিংকে চিঠি দিয়েছিলেন। সাংসদের সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে উপকৃত হবেন বারাকপুর সহ দেশের কয়েক লক্ষ চটকল কর্মী।