নজর রাখুন আপনার বিনিয়োগের উপর

প্রতীকী চিত্র

আপনার বিনিয়োগ বাজারে কেমন ফল করছে, তা কিন্তু আপনাকে নিয়মিত নজরে রাখতে হবে। আর তা করতে গেলে প্রথমেই আপনার বিনিয়োগকে ভাগ করতে হবে তিন ভাবে।

#ফান্ডের ধরন
#শ্রেণী
#গঠন

এই ভাগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি-র করা। ভেবে দেখুন, বাজারে বিভিন্ন সংস্থা যদি স্কিমগুলো নিজের মতো করে তৈরি করত, তাহলে কী হতো ? তাই সেবি নির্ধারণ করেছে কোন ধরনের স্কিমে কী থাকবে। এর কারণ একটাই। যাতে বিনিয়োগকারী দুটি ভিন্ন ধরনের স্কিমের থেকে বেছে নিতে পারেন তাঁর পছন্দসই স্কিম।


সেবি-র এই নিয়ম মেনে তাই ইক্যুইটি ফান্ডের জন্য ১০টি, ডেট ফান্ডের জন্য ১৬টি এবং হাইব্রিড ফান্ডের ৬টি শ্রেণি নির্ধারিত হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাগুলোকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের বিভিন্ন স্কিম এই শ্রেণী অনুযায়ীই ভাগ করে দিতে হবে। একটি শ্রেণীতে একটির বেশি ফান্ড বা স্কিম রাখা যাবে না। এছাড়াও সেবি-নির্ধারিত নিয়মে লার্জক্যাপ, মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ স্টক, বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এর আগে বিভিন্ন সংস্থা নিজস্ব নিয়মে নিজেদের মতো লগ্নি সাজিয়ে স্কিম তৈরি করত। তাতে তাদের মধ্যে তুলনা করা কঠিন হয়ে যেত।

এই বিন্যাসের ফলে একদিকে যেমন নতুন লগ্নিকারীদের পক্ষে ফান্ড নির্বাচন সহজ হয়ে গিয়েছে, তেমনই পুরনো বিনিয়োগকারীদের জন্যও তাদের বর্তমান মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিও পুনর্মূল্যায়ন করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারণ বর্তমান নিয়মে বেশ কিছু ফান্ডের শ্রেণী এবং গঠন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে, যা ভবিষ্যতের রিটার্নেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই নিয়ম অনুযায়ী ফান্ড কোন শ্রেণীতে পড়ছে, তা আগে নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, পোর্টফোলিওতে যেন একই শ্রেণির একাধিক ফান্ড না থাকে।

যাচাই করুন তহবিল
আপনার সম্পদ থেকে আপনি কোথায় কত টাকা রাখবেন, তা সাধারণত স্থির করা হয় দীর্ঘমেয়াদী পোর্টফোলিও, অর্থাৎ সাত থেকে দশ বছরের বিনিয়োগের কথা মাথায় রেখে। তবে স্বল্প বা মধ্যমেয়াদী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের লক্ষ্যের কথা ভেবেই মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিও বাছাই করা উচিত।

প্রয়োজনীয় টাকা ইক্যুইটি ফান্ডে রাখবেন না কোনও মতেই। একইভাবে অবসরের পরে আপনার বিনিয়োগের উদ্দেশ্য হল মাসিক প্রয়োজনের টাকাটা উপার্জন করে নেওয়া। দীর্ঘমেয়াদী লাভই শুধু এক্ষেত্রে আপনার লক্ষ্য নয়। তাই লক্ষ্য অনুযায়ী স্কিম বাছুন। দরকারে নিজের ফান্ড পোর্টফোলিও আরও একবার খতিয়ে দেখে নিন। কম সময়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলে পুনর্মূল্যায়ন করে উপযুক্ত ফান্ড বেছে নেওয়া জরুরি।

মাথায় রাখুন রিটার্ন কিন্তু অনিশ্চিত
লগ্নি থেকে কত টাকা ফেরত পাবেন, সে বিষয়টা এড়িয়ে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। তবে এ নিয়ে একেবারে শেষে মাথা ঘামানোই ভালো এবং অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে। গত বছরের রিটার্ন নিয়ে ভাবনার তেমন কিছু নেই। বার্ষিক রিটার্নের হিসেব থেকেও ছবিটা স্পষ্ট না হতেই পারে। কারণ, কয়েক বছর ভালো রিটার্ন এলেও বেশির ভাগ বছরেই হয়তো পারফর্ম্যান্স ভালো না-ও হতে পারে।

এসবের চেয়ে অনেক বেশি কাজে লাগবে বিভিন্ন সময়ে ফান্ডের রিটার্নের ওঠা পড়া খতিয়ে দেখা এবং তার তুল্যমূল্য বিচার। ওই নির্দিষ্ট ফান্ডে কতদিনের জন্য টাকা রাখতে চান, তার ভিত্তিতে সময়কাল বেছে নিতে পারেন। তা তিন বছর হতে পারে, পাঁচ বছর কিংবা সাত বছরও হতে পারে। এই সময়কালের রোলিং রিটার্নের হিসেব থেকে ফান্ডের কার্যকারিতা বা ধারাবাহিকতা সম্পর্কে তুলনামূলকভাবে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া সম্ভব।