• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

“বিখ্যাত” শক্তিগড়ে অভিযান, শহীদ দিবস ফেরৎ ক্রেতাদের জন্য মজুত বস্তা বস্তা মিষ্টি পোঁতা হল মাটিতে

তিন কুইন্টাল পচা ল্যাংচা বাজেয়াপ্ত আমিনুর রহমান, বর্ধমান ,২১ জুলাই: ফের বর্ধমানের শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানগুলোতে অভিযান চলল। গুণমান খারাপ এই অভিযোগে এর আগে ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত ল্যাংচার স্থানে অভিযান চালায় খাদ্য দপ্তরের ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা। কিন্তু তার পরেও বস্তা বস্তা ফাংগাসে ভরা পচা , আধকাঁচা ল্যাংচা উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হল। সাম্প্রতিক কালে

তিন কুইন্টাল পচা ল্যাংচা বাজেয়াপ্ত

আমিনুর রহমান, বর্ধমান ,২১ জুলাই: ফের বর্ধমানের শক্তিগড়ে ল্যাংচার দোকানগুলোতে অভিযান চলল। গুণমান খারাপ এই অভিযোগে এর আগে ঐতিহাসিক ও বিখ্যাত ল্যাংচার স্থানে অভিযান চালায় খাদ্য দপ্তরের ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা। কিন্তু তার পরেও বস্তা বস্তা ফাংগাসে ভরা পচা , আধকাঁচা ল্যাংচা উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি হল। সাম্প্রতিক কালে রাজ্যের কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটে নি। জানা গেছে একুশে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেস এর শহীদ দিবসের দিন ওই ল্যাংচা বিক্রির জন্য বিভিন্ন দোকানে মজুত করা ছিল। তবে আগে ভাগে খবর পেয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেন আধিকারিকরা। বর্ধমানের শক্তিগড় থানার পুলিশের সহযোগিতায় বিভিন্ন দোকানে বস্তায় মজুত করে রাখা বাসি, পচা ল্যাংচা উদ্ধার করে জেসিবি দিয়ে বিরাট গর্ত করে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হলো। ২১ জুলাইয়ের আগেই পচা ল্যাংচা উদ্ধার হওয়ার ঘটনায় স্বস্তিতে তৃণমূল শিবিরের একাংশ।

দীর্ঘ দিন ধরেই বর্ধমানের “বিখ্যাত” হাবগুলোতে খাবার অযোগ্য ল্যংচা বিক্রি নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠে আসে। তার পরই বৃহস্পতিবার বর্ধমানের শক্তিগড়ে ল্যাংচার গুণমান খারাপের অভিযোগ পেয়ে ফুড সেফটি বিভাগের অফিসাররা অভিযানে নামেন। বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। কড়া নজরদারি রাখা হয়। আর তার পরেই যে অভিযোগের বিষয় সামনে আসে তাতে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরাও রীতিমত অবাক হয়ে যান। শনিবার বর্ধমানের বিখ্যাত শক্তিগড়ের ল্যাংচার দোকানগুলিতে হানা দেয় স্বাস্থ্যদপ্তর, জেলা পুলিশ, ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর ও লিগ্যাল মেট্রোলজি দপ্তর যৌথভাবে। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুবর্ণ গোস্বামী ও ডেপুটি পুলিশ সুপার (ডিইবি) এ এস চ্যাটার্জী। এদিন এই হানাদারিতে প্রতিনিধিরা দেখেন, অধিকাংশ দোকানের রান্নাঘর চরম অস্বাস্থ্যকর, মিষ্টির কড়াই আ-ঢাকা, কারিগরদের কোন স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয় না। নেই সামান্য পরিচ্ছন্নতা বজায়ও। কোথাও বা বিষাক্ত রং মেশানো হচ্ছে মিষ্টিতে।

এছাড়াও অনেকগুলি দোকানের গুদামে হানা দিয়ে সাত-দশদিন আগে থেকে ভেজে‌ রাখা, ফাংগাস পরে যাওয়া বাসি ,পচা ল্যাংচা মেঝের উপর ডাঁই করে রাখা অবস্থায় দেখতে পান হানাদারি টিম। প্রাথমিকভাবে এই টিমের অনুমান এই সমস্ত বাসি মিষ্টি যা ২১-শে জুলাই তৃণমূল কংগ্রেস এর শহীদ দিবসের দিন পুনরায় ভেজে, রসে ডুবিয়ে বিক্রি করবার পরিকল্পনা ছিল।কারণ ২১ শে জুলাই বিভিন্ন জেলা থেকে চারচাকা, বাস বা অন্যান্য যানবাহনে জাতীয় সড়ক ধরে বহু তৃণমূলকর্মী আসা-যাওয়া করেন এবং এরজন্য শক্তিগড়ে ল্যাংচার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। পরীক্ষার জন্য কয়েকটি নমুনা রেখে বাকি প্রায় তিন কুইন্ট্যাল এই ধরণের ভাজা বাসি ল্যাংচা বাজেয়াপ্ত করে তা পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে সাতজন দোকানদারকে আইনী নোটিশ ধরানো হয়েছে। কয়েকজনের বিরুদ্ধে শক্তিগড় থানায় ডায়েরীও করা হয়। এর আগে অবশ্য ১৭ জন দোকানদারের কোন লাইসেন্স নেই বলে জানা গিয়েছিল। এবার তাই সমস্ত অসাধু দোকানদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ মামলা রুজু করা হচ্ছে। তাদের প্রত্যেকের দশ লক্ষ টাকা অব্দি জরিমানা ও সাত বছর পর্যন্ত হাজতবাস বা উভয়ই হতে পারে। এদিন ক্রেতাদের শক্তিগড়ে ল্যাংচা কেনার আগে যথেষ্ট সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকরা। একইসঙ্গে রবিবার কলকাতামুখী ও কলকাতা ফেরৎ ক্রেতাদের স্বার্থে স্বাস্থ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে সকাল থেকেই কড়া নজরদারী জারি রাখতে ফুড সেফটি অফিসারদের মোতায়েন করেছেন জেলার উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী।