ভারত বারবন হুইস্কির আমদানি শুল্ক ৫০ শতাংশে কমিয়ে এনেছে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর পরিকল্পনার মধ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়। ট্রাম্পের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর আলোচনার ঠিক আগে, ১৩ ফেব্রুয়ারি বারবন হুইস্কির উপর শুল্ক হ্রাসের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল। ওইদিন কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেটিতে বলা হয়েছে, আমেরিকার বারবন হুইস্কির আমদানিতে এবার থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হবে। আগে শুল্কের পরিমাণ ছিল ১৫০ শতাংশ। এদিকে ২ দিনের আমেরিকা সফর সেরে শুক্রবার রাতে দিল্লিতে ফিরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদীর সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। ১৩ ফেব্রুয়ারি বারবন হুইস্কির উপর উপর শুল্ক হ্রাসের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। অনেকের মতে, বৈঠকের আগেই সমঝোতার চাল দিয়েছেন মোদী, যাতে ট্রাম্প তাঁর সামনে অভিযোগের সুযোগ কম পান। বারবন হুইস্কির কর হ্রাসের বিজ্ঞপ্তির কথা প্রকাশ্যে আসে শুক্রবার, মোদী-ট্রাম্প বৈঠকের পরে।
বারবন হুইস্কি আমেরিকায় খুবই জনপ্রিয়। ভারতেও এর চাহিদা কম নয়। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই বিশেষ হুইস্কির উপর প্রাথমিক শুল্ক হবে ৫০ শতাংশ। এরসঙ্গে অতিরিক্ত শুল্ক থাকবে আরও ৫০ শতাংশ। সব মিলিয়ে মোট ১০০ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হবে এই হুইস্কির আমদানিতে। তবে আমেরিকা থেকে অন্যান্য মদের আমদানির উপর মূল শুল্ক হ্রাস করা হয়নি। ফলে অন্যান্য মদের আমদানির উপর আরোপিত ১০০ শতাংশ শুল্কই কার্যকর থাকবে।
আমেরিকা ভারতে বারবন হুইস্কির শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক। এবং ভারতে আমদানি করা এই ধরণের মদের প্রায় এক-চতুর্থাংশ আসে আমেরিকা থেকে। বারবন হুইস্কি আমেরিকার সবথেকে বিখ্যাত এবং ঐতিহ্যবাহী হুইস্কিগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি তৈরি হয় মূলত ভুট্টা দিয়ে । এটির মিষ্টি, ধোঁয়াটে এবং ভ্যানিলার মতো স্বাদ জনপ্রিয়। ভারত ২০২৩-২৪ সালে ২.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বারবন হুইস্কি আমদানি করেছে। এর প্রধান রপ্তানিকারক দেশগুলির মধ্যে রয়েছে আমেরি্কা, সিঙ্গাপুর, ইটালি এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরই ট্রাম্প অনেক দেশের উপর কর চাপানোর কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, করের ক্ষেত্রে তাঁর নীতি হবে ‘টিট ফর ট্যাট’। অর্থাৎ, যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যত কর নেবে, সেই দেশের পণ্যেও তত কর চাপাবে আমেরিকা। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পর অনেকেই এখন কর হ্রাসের পথ নিচ্ছে। ভারতে আমেরিকার পণ্যের উপর চাপানো শুল্ক নিয়ে আগেও একাধিক বার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের কয়েক ঘণ্টা আগেও তিনি জানিয়েছিলেন, আমেরিকার পণ্যে ভারত খুব বেশি কর নেয়। মোদীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনাও হয়। পরে ট্রাম্প জানান, সমঝোতার আলোচনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর চেয়ে অনেক বেশি দক্ষ। দুই দেশের বাণিজ্যনীতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ট্রাম্প।
হুইস্কির পাশাপাশি এই মাসের শুরুতে বাজেটে আমেরিকা থেকে আমদানি করা উচ্চমানের বাইকের উপর কাস্টম ট্যাক্স হ্রাস করা হয়েছে যাতে আমদানি সস্তা হয়। আগামী দিনে আরও কিছু আমেরিকার পণ্যে কর কমাতে পারে ভারত।