২২০০ কোটির আর্থিক প্রতারণা চক্রে যুক্ত অভিনেত্রী সুমি বোরা, জেনে নিন কে এই সুমি

সম্প্রতি অসম জুড়ে হইচই পড়ে গেছে অনলাইন ট্রেডিং আর্থিক প্রতারণা চক্র নিয়ে। অর্থ লগ্নি করে অল্প সময়ে অধিক লাভের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের মোট ২২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এই চক্র। এই ব্যাপারে তদন্তে উঠে এসেছে এক অসমিয়া নৃত্যশিল্পী-অভিনেত্রীরও নাম। পুলিশ সন্দেহ করছে, সুমি বোরা নামক এক নৃত্যশিল্পীও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু, কে এই সুমি বোরা? জেনে নেওয়া যাক।

সুমি বোরা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত হলেও তিনি মূলত একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী এবং প্রশিক্ষক। অসমের ডিব্রুগড়ে জন্মগ্রহণ করা সুমি ছোটো থেকেই নাচ, মূলত সত্রিয় ও বিহু নাচ নিয়ে আগ্রহী। রূপলেখা বর্বরা দাস চাউলখোয়া মিউজিক কলেজ থেকে তিনি নাচের ডিগ্রি পান। এর পরে ডিব্রুগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সত্রিয় নাচে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ৯ বছরের বেশিদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যেমন চাউলখোয়া মিউজিক কলেজ, শিক্ষা ভ্যালি স্কুল, নার্চার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইত্যাদিতে পেশাগতভাবে নাচ শিখিয়েছেন। বর্তমানে তিনি অসমিয়া সিনেমায় অভিনয় এবং নাচের কোরিওগ্রাফির সঙ্গে যুক্ত।

২০২৩ সালে তিনি তার্কিক বোরার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রাজস্থানের উদয়পুরে হওয়া বিলাসবহুল ওই বিবাহানুষ্ঠানে এই প্রতারণা চক্রের মূল চাঁই বিশাল ফুকন। তিনি ওই অনুষ্ঠানে প্রচুর অর্থব্যয়ও করেন।


পুলিশ সন্দেহ করছে, বিশাল সুমির মাধ্যমে অসমিয়া সিনেমা ও বিনোদন জগতের আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত এবং তাঁদের অর্থও অনলাইন ট্রেডিং-এ লগ্নি করার নাম করে আত্মসাৎ করত। বিশাল বোরাদম্পতির জন্য একটা নাচের অ্যাকাডেমি এবং বিভিন্ন জমিজমায় বিনিয়োগ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশালের গ্রেপ্তারির পর পুলিশ বোরা দম্পতির গুয়াহাটির আবাসনে হানা দেয়, কিন্তু তাদের কোনো সন্ধান পায়নি। তারা এখন নিখোঁজ। তাদের সন্ধান এখনো জারি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অসমে একটি আর্থিক প্রতারণা চক্রের তদন্ত করছে পুলিশ। অনলাইন ট্রেডিং-এর নাম করে লোকজনকে দিয়ে মিথ্যে বিনিয়োগ করিয়ে টাকা তুলত এই চক্র।পুলিশ জানায়, মূল চক্রী বিশাল লগ্নিকারীদের এই বলে আশ্বাস দিতেন, তিনি ৬০ দিনে বিনিয়োগ করা অর্থের ৩০% তাঁর গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেবেন। বিশালের বিলাসবহুল জীবনযাপন দেখে গ্রাহকরা সহজেই তাঁর কথা বিশ্বাস করে নিতেন।

অসমিয়া সিনেমায় বিনিয়োগ ছাড়াও বিশাল বিভিন্ন বাড়ি কিনেছেন, চারটে বেনামি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছেন। পুলিশ তাঁর ডিব্রুগড়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এই সংক্রান্ত নানা তথ্যপ্রমাণ বাজেয়াপ্ত করে।