কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের দিনক্ষণ ঘোষণা মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘মহানায়ক সম্মান’ মঞ্চ থেকে সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতার চেহারা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। করলেন শাসনও। মমতা এদিন বলেন, ‘একটু খাওয়াদাওয়া করতে বলুন তো। একদম খায় না। দেখুন চেহারা কী হয়েছে!’ পাশাপাশি এই মঞ্চ থেকেই কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের তারিখ ঘোষণা করলেন মুখ্য়মন্ত্রী। মমতা জানিয়েছেন, এবার ৪ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। চেয়ারম্য়ান করা হয়েছে গৌতম ঘোষকে। কো–চেয়ারম্য়ানের দায়িত্ব পালন করবেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়।
বুধবার উত্তমকুমারের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে ধনধান্য স্টেডিয়ামে আয়োজিত হয় ‘মহানায়ক সম্মান’ অনুুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে নচিকেতা সহ আরও কয়েকজন শিল্পীকে মহানায়ক সম্মান প্রদান করেন মুখ্য়মন্ত্রী। সেই সময় নচিকেতার চেহারা নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নচি! আমি ওকে বলি, নচি, নাচি নাচি! কারণ ওর ছন্দে গান নাচে। গানের সঙ্গে প্রাণের এত সুরধারা, প্লাবনের মতো শ্রাবণের ধারা বয়ে আনে। ওর গান আমাদের মুগ্ধ করে। আমরা কিছুদিন আগে রশিদকে হারিয়েছি। রশিদ খুব ভাল গাইত, ওদের একটা টিম ছিল। নচিকেতাও দারুণ ক্লাসিক্যাল গায়। রবীন্দ্রসঙ্গীত থেকে শুরু করে জয়ন্তী মঙ্গলা কালী– সবরকম গানই গায়। আজও গাইবে। তাঁকে মহানায়ক সম্মান দিতে পেরে আমরা ধন্য। আমাদের অনেক ভালবাসা রইল নচিকেতার জন্য।’
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী শাসনের সুরে বলেন, ‘একটু খাওয়াদাওয়া করতে বলুন তো। একদম খায় না। দেখুন চেহারা কী হয়েছে!’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঠিকই খাই, আমি ইচ্ছে করে কমিয়েছি। কিন্তু ও এমন কমিয়েছে, তার কোনও তুলনাই চলে না। নিজেকে তো ভালো থাকতে হবে। আমি বলেছি, তুমি না খেলে বাড়িতে গিয়ে হানা দেব।’
নচিকেতা চক্রবর্তীর পাশাপাশি, অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের জন্যও উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘শুভাশিসদার মতো শিল্পীকে সম্মান দিতে পেরে আমরা ধন্য। সেই পুরনো দিন থেকে বয়ে চলেছেন তিনি। শরীরে একটু নজর দিন। আমার মনে হচ্ছে, আপনার শরীরটা ভালো নেই।’
এদিন অনুষ্ঠান শুরুর সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবার এই দিনটি উত্তমকুমারকে উৎসর্গ করি। তিনি চিরনায়ক, চিরদিন বেঁচে থাকবেন সকলের হৃদয়ে। আমরা তাঁকে দেখতে পাইনি। কিন্তু তাঁর ছবি মায়ের সঙ্গে দেখতে যেতাম থ্রি-ফোরে পড়তে। চলচ্চিত্রে বাংলা গান হতো এত ভালো ভালো, সেই ধারাটা আজও ধরে রেখেছি। মহানায়কের সেই গান যখন আজও গাওয়া হয়, মনে হয় বাংলার অস্তিত্ব আজও ধরে রাখা গেছে। বাংলার সঙ্গে উত্তমকুমারের গভীর সম্পর্ক। নিজের অস্তিত্ব কখনও অস্বীকার করতে নেই। সবসময় সেই শিকড় খোঁজার চেষ্টা করি আমরা।’
এদিন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, রুক্মিনী মৈত্রের মতো শিল্পীদেরও পুরস্কৃত করা হয়। চল্লিশ বছর ধরে টেলি ইন্ডাস্ট্রিতে অবদান রাখার জন্য প্রসেনজিৎকে বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রসেনজিৎ আমাদের গর্বের বাংলার উৎসারী। ওর জন্য আমার ভালবাসা, শুভকামনা থাকবে ।’