এলেন তিনি। কিন্তু কোথাও যেন তাঁর মধ্যে বিষাদের ছায়া। বোমকাই শাড়ি পরে বিদ্যা বালান যখন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন, তখন তাঁর মধ্যে কোথাও প্রিয়জন হারানোর বেদনা বারবার দেখা যাচ্ছিল। কয়েক মাস আগেই অভিভাবক হারিয়েছেন তিনি। যাঁর হাত ধরেই তিনি প্রথমবার সেলুলয়েডেপা রেখেছিলেন। সেই গৌতম হালদারের কথা বারবার উঠে এল অভিনেত্রীর কথায়। তাঁর প্রিয় দাদার দেওয়া শাড়ি পরেই এসেছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত পরিচালকের কন্যা রাইপূর্ণা হালদার। বিদ্যা তাঁর দিকে ইশারায় দেখিয়ে যেন ছুঁয়ে যেতে চাইলেন ফেলে আসা সেই মুহূর্ত। বারবার ডুব দিলেন নস্টালজিয়ায়। জানালেন, ‘দাদার এই শাড়িটা আমার খুব পছন্দের। আমার প্রথম ছবির পরিচালকের দেওয়া উপহার। যত্ন করে রেখে দিয়েছি। কলকাতায় আসছি। গৌতমদাকে নিয়ে কথা বলব। তাই শাড়িটা পরে এলাম।’ প্রিয় পরিচালকের কথা বলতে গিয়ে নিজে চোখের জলে ভিজলেন, উপস্থিত দর্শকদেরও ভেজালেন।
চলচ্চিত্র উৎসবে এসে বিদ্যা বালান জানালেন, তাঁর লড়াইয়ের কথা, যখন একের পর এক দক্ষিণী ছবি থেকে তিনি বাদ পড়ছেন। অনেকেই কথা দিয়ে কথা রাখেননি। বিজ্ঞাপনী ছবিই তাঁর একমাত্র ভরসা। সেই সময়ই তাঁকে ফোন করেন পরিচালক গৌতম হালদার। তাঁকে নির্বাচিত করেন ভালো থেকো ছবিতে। প্রথম ছবির টুকরো টুকরো মুহূর্ত কিছুই ভোলেননি বলিউডের এই নামজাদা অভিনেত্রী। জানালেন, কীভাবে তাঁর বাংলা উচ্চারণ ঠিক করে দিয়েছিলেন পরিচালক। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যারের সহযোগীতার কথাও ভোলেননি তিনি।
বিদ্যার দ্বিতীয় ছবি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পরিণীতা’। পরিচালক প্রদীপ সরকার। তার পরে সুজয় ঘোষের ‘কহানি’। সেখানে পরিচালক থেকে সহ-অভিনেতারা বাঙালি। কলকাতায় লম্বা শুটিং। আবার তাঁর সাম্প্রতিক ব্লকবাস্টার ‘ভুলভুলাইয়া ৩’-এ তিনি ‘মঞ্জুলিকা’। কলকাতার সঙ্গে তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। সে কথা মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করলেন বিদ্যা বালান। বললেন, ‘আমি বাংলার, বাঙালির। আমার নানা কাজে নানা ভাবে তাই বাংলা-যোগ।’ শুধু বাংলা কথাই নয় রাহুল দেব বর্মনের বাংলা গানও শুনিয়েছেন অভিনেত্রী।
‘ভালো থেকো’-র পর আর বাংলা ছবিতে দেখা যায়নি তাঁকে? জবাবে অভিনেত্রী জানালেন, ইচ্ছে আছে বাংলা কমেডি ছবি করার। তবে বাংলার পরিচালকরা চাইলে তিনি নিশ্চয়ই বাংলা ছবিতে কাজ করতে ইচ্ছুক। সেই আশা নিয়েই কলকাতা ছাড়লেন বিদ্যা।