রথীন কুমার চন্দ
কয়েকদিন আগেই গেল অভিনেতা সত্যেন দাস ওরফে অনুপ কুমারের জন্মদিন৷ অনুপ কুমারের মতো এত বড় মাপের ভার্সেটাইল এক অভিনেতার জন্মদিন সিনেমা জগতে সেই ভাবে উৎযাপন না হলেও তাঁর গুণগ্রহিতার অভাব নেই গোটা ভারতে৷ সে বসন্ত বিলাপ হোক বা মৌচাক বা দাদার কীর্তি তাঁকে ছাড়া গোটা সিনেমাটাই যে জৌলুসহীন তা একবাক্যে স্বীকার করেছিলেন এই সিনেমাগুলির নির্মাতা থেকে দর্শক সকলেই৷
অনুপ কুমার ওরফে সত্যেন দাস, বাংলা সিনেমার প্রখ্যাত কৌতুক অভিনেতাদের মধ্যে অন্যতম নাম৷ সেলুলয়েড পর্দার পোশাকি নাম অনুপ কুমার, বাস্তবে ও সাংসারিক জীবনে সত্যেন দাস নামে পরিচিত ছিলেন, তবে বাস্তব নাম সিনেমার পর্দায় নামকরণের আড়ালে হারিয়ে বা ভুলতে বসেছিল সবাই, শুধুমাত্র সত্যেন দাসকে তার পরিচিতজনেরা খুঁজে পেতেন অনুপ কুমারের অভিনয়ের মধ্যে৷
অনুপ কুমার ৩০০র উপর বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন৷ তার বাবা ধীরেন্দ্রনাথ দাস ছিলেন একাধারে গায়ক ও নায়ক৷ অনুপ কুমার ১৭ই জুন ১৯৩০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন৷ তার বাবা ধীরেন্দ্রনাথ দাসের সাথে অন্তরঙ্গতা ছিল কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও বিজয়া দাসের সাথে৷ অনুপ কুমার অভিনয় জীবনের হাতেখড়ি শিশির কুমার ভাদুড়ী ও তাঁর বাবার কাছে৷
অনুপ কুমার খুদে অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেছেন ধীরেন গাঙ্গুলীর হালখাতায় (১৯৩৮ সালে)৷ তার অভিনয় জীবন অনেক খুদে বয়স থেকে সুচনা ঘটে, পলাতক ও নিমন্ত্রণ সিনেমায় অভিনয় দক্ষতা ফুটে ওঠে৷ পলাতক সিনেমার জন্য তিনি ১৯৬৪ সালে বিএফজে এওয়ার্ডে সেরা অভিনেতা হিসেবে পুরস্কৃত হন৷
বসন্ত বিলাপ, মৌচাক, দাদার কীর্তি সিনেমায় তার কৌতুক অভিনয় বিশেষ নজর কেড়েছিল সমস্ত দর্শকের, যখন রবি ঘোষ, জহর রায়, নবদ্বীপ হালদারের মত নামজাদা অভিনেতাদের পাশাপাশি অভিনয় করেন৷
১৯৮৮ সালে স্টার থিয়েটার থেকে রৌপ্য পদকে ভূষিত হন৷ অভিনয়ে অনন্য ছাপ রাখার জন্য ১৯৮৯ সালে নাট্য একাডেমি পুরস্কার পান, ১৯৯১ সালে শিরোমণি পুরস্কার ও যাত্রায় সেরা নির্দেশকের পুরস্কার পেয়েছিলেন ১৯৯৭ সালে৷
রবি ঘোষের পরলোকগমনের পর জটায়ু চরিত্রের পরিস্ফুটন তার অসাধারন অভিনয় ক্ষ্মতায় জীবন্ত হয়ে ওঠে৷
দাদার কীর্তিতে তার কৌতুক অভিনয় দর্শকদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে৷
তার অভিনীত সিনেমাগুলি হল ‘পিতা পুত্র’, বালুচরি, দাদু, নিশি পদ্ম, রাগ অনুরাগ, বাবা তারকনাথ প্রভৃতি৷