প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত ফের চলে এলেন খবরের শিরোনামে। মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক টানাপোড়েন আচমকাই এসে গেল এই অভিনেতার মৃত্যুরহস্যের তদন্তকে ঘিরে একরাশ প্রশ্ন।
বিজেপি বিহারের এক মুখপাত্র এদিন দাবি করেন, সুশান্ত সিং রাজপুতের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের সাহায্য করেছেন উদ্ধব ঠাকরে। উদ্ধব চাননি বলে সুশান্ত সিং রাজপুতের তদন্ত সঠিক পথে এগোয়নি। এই তদন্তকে প্রভাবিত করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। এই রকম অনেক পাপ করেছেন উদ্ধব। সে কারণে ভগবান তাঁকে কঠিন পরীক্ষার মুখে ঠেলে দিয়ে বড় শাস্তির মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।বিজেপির এক মুখপাত্রের এই মন্তব্য চাঞ্চল্য তৈরি করেছে জাতীয় রাজনীতিতে।
যদিও উদ্ধব ঠাকরের শিবিরের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যের চরম বিরোধিতা করা হয়েছে। যদিও বিজেপি বিহারের মুখপাত্র তথা ওবিসি মোর্চার জাতীয় সম্পাদক কিন্তু তিনি তাঁর মন্তব্যে অনড়।
মহারাষ্ট্রের মুখমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে নিশানা করে নিখিল আনন্দ বলেন, উনি বিহারের ছেলে সুশান্ত সিং রাজপুতেরর নৃশংস খুনের ঘটনার প্রমাণ লোপাট করেছেন। সে কারণে অযাচিতভাবে ভগবান ওঁকে শাস্তি দিচ্ছেন।
‘নিখিলের দাবি, ‘সুশান্তের মতো দিশাকেও ‘খুন’ করা হয়েছিল , যার প্রমাণ লোপাট করেছিলেন উদ্ধব । ‘নিখিলের এই মন্তব্য করার আগে কঙ্গনা রানাওয়াতের একটি মন্তব্য ট্রেন্ডিং হচ্ছে মহারাষ্ট্র জুড়ে।
কঙ্গনার মুম্বই অফিস বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দিয়েছিল বিএমসি কর্তৃপক্ষ। সেই সময় কঙ্গনাও মহারাষ্ট্র সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী বলে দাবি করেছিলেন। বলেছিলেন ,’এ ধরনের অহঙ্কার বেশিদিন থাকবে না।
কারণ ইতিহাসের চাকা ঘোরে। বাস্তবে কঠিন সংকটের মুখোমুখি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ভাবতেও পারেননি, শিবসেনার মধ্যে এত বড়সড় বিদ্রোহ দেখা দেবে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের এতজন শিবসেনা বিধায়ক মহারাষ্ট্র ছেড়ে গুজরাত এবং তারপরে অসমে চলে গেলেন, অথচ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী কিছুই জানতে পারলেন না।
মহারাষ্ট্রের এই মহাসংকটে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার যখন এই প্রশ্ন রেখেছিলেন উদ্ধবের কাছে, তখন উদ্ধব কোনও উত্তর দিতে পারেননি।
অসহায় পাওয়ার আসলে মহারাষ্ট্রের গোয়েন্দা ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন। সেই সঙ্গে নাম না করে পাওয়ারকে। কারণ এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, অথচ মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর প্রশাসন টের পেল না, এ কী করে সম্ভব ? এক্ষেত্রে যাঁর নাম উঠে আসছে, তিনি হলেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। তাঁর নিপুণ নকশায় এই সব সম্ভব হয়েছে।
অনেকে বলছেন , মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে হলেও প্রশাসনের রাশ অনেকটাই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ছিল। কারণ যখন দেবেন্দ্র ফড়নবিশ রাতের অন্ধকারে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন, তখনও চমকে গিয়েছিল বিরোধীরা।
তবে সেই সরকার বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ফের যখন মহারাষ্ট্রে মহাসংকট দেখা দিল , তখনও দেবেন্দ্র ফড়নবিশই নায়ক।
তাঁর এই গোপন প্ল্যানের আগাম আঁচ কেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব পেলেন না, সেটাই রাতের ঘুম কেড়েছে পাওয়ারের।সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রে এখন পাওয়ার প্লে চলছে।