সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাস্তবে তিনি নেই। আছেন পর্দা জুড়ে। বেলা শুরুর পথ বেয়ে তৃতীয় পুরুষে। বেলা শুরুর পর মুক্তি পেয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ ডাবিং করা ছবি তৃতীয় পুরুষ। প্রযোজনায় ইউডি এন্টারটেনমেন্ট।
পরিচালক রাজ মুখোপাধ্যায় এর আগে সৌমিত্রবাবুকে নিয়ে বানিয়েছিলেন ‘চল কুন্তল’। তাঁর আফসোস, ‘‘অসুস্থতার জন্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছবি-মুক্তির দিন যেতে পারতেন না।
কিন্তু ‘তৃতীয় পুরুষ’-এ অভিনয়ের পর বলেছিলেন, তিনি ছবি মুক্তির দিন উপস্থিত থাকবেন। তাঁকে ছাড়াই মুক্তি পেল ছবিটি।’’
২০১৮-য় রাজ ‘তৃতীয় পুরুষ’ বানিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে মনোজ মিত্র, দীপঙ্কর দে, শ্রীলেখা মিত্র, ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, শিশুশিল্পী শুভদর্শী মুখোপাধ্যায়। ২০১৯-এ ছবির সমস্ত কাজ শেষ। ২০২০-তে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ছবি।
অতিমারি সব ওলটপালট করে দিয়েছে। ছবির পটভূমিকায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত বিপত্নীক সৌমিত্র। ছেলে (ইন্দ্রজিৎ) বৌমা (শ্রীলেখা) বিচ্ছিন্ন।
এক মাত্র নাতি দাদুর হেফাজতে। যে মানুষ নিজেকেই নিজে সামলাতে পারেন না তিনি কী করে এক শিশুর দায়িত্ব বহন করবেন? বিচ্ছেদের সন্তানও কি খুব সুস্থ ভাবে মানুষ হবে? ছবিতে অভিনেতার বন্ধু মনোজ মিত্র। আইনজীবী দীপঙ্কর দে।
নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ‘বেলাশুরু’ ছবিতে আধুনিক জীবনের সমস্যা ভুলে যাওয়া রোগের উপরে আলো ফেলেছেন।
‘পোস্ত’-তেও তিনি দাদু হয়ে সামলেছেন নাতিকে। এই দুটো জনপ্রিয় ছবিরই ছায়া রাজের এই ছবিতে?
পরিচালকের যুক্তি, ‘ময়ূরাক্ষী’ বা ‘শ্রাবণের ধারা’র মতো ছবিতেও সৌমিত্রবাবু বিস্মৃতির সমস্যায় আক্রান্ত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সেই নামগুলোও তা হলে বলতে হয়। তিনি নিজের মতো করে গল্প লিখেছেন। পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছেন।
ছবির আর এক অনত্যম চরিত্রে থাকা শ্রীলেখা মিত্র জানিয়েছেন, সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কাজের স্মৃতি সততই সুখের। কেউ ভাবতে পারেননি, এই ছবিই তাঁর শেষ ডাবিং করা ছবি হবে। ছবিটি নিবেদন করেছেন পঙ্কজ নাহতা এবং কিশোর রথী।
ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে থাকা শিশু-অভিনেতা শুভদর্শী, পরিচালক রাজ মুখার্জির ছেলে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে প্রথমবার বড় পর্দায় অত্যন্ত সাবলীল অভিনয় করেছে।
দাম্পত্যের ভাঙনে এক শৈশবের বেড়ে ওঠা, প্রতিদিনের অস্ফূট মানসিক যন্ত্রণাকে অভিব্যক্তিতে ফুটিয়ে তুলেছে শুভদর্শী।