• facebook
  • twitter
Wednesday, 19 March, 2025

অন্তরের মুক্তির ছবি ‘ছাদ’

সিনেম্যাটিক ল্য়াঙ্গুয়েজ বা চলচ্চিত্রের ভাষা একেবারেই অন্যরকম। নির্দেশক ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী সেই ভাষাটাকেই হাতিয়ার করেছেন তাঁর বক্তব্যকে তুলে ধরতে। ‘ছাদ’ দেখে লিখলেন অবন্তী সিনহা।

ব্যক্তিগত স্পেস, সম্পর্কের স্পেস কিংবা ক্রিয়েটিভ স্পেস- প্রতিটির আলাদা আলাদা গুরুত্ব আছে। তা নিয়ে লেখার পরিসরও একটু বেশি প্রয়োজন হয়। কিন্তু সিনেম্যাটিক ল্য়াঙ্গুয়েজ বা চলচ্চিত্রের ভাষা একেবারেই অন্যরকম। নির্দেশক ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী সেই ভাষাটিকেই হাতিয়ার করেছেন তাঁর বক্তব্যকে তুলে ধরতে। তাঁর নির্দেশনায় মুক্তি পেয়েছে, ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন প্রযোজিত বাংলা ছবি ‘ছাদ’।

‘ছাদ’ কী, কেন, এ নিয়ে অনেকেই হয়তো অনেক কথা লিখে ফেলেছেন এতদিনে। কিন্তু ‘ছাদ’ ছবিতে একটা চরিত্র হয়ে উঠেছে তার নির্বাক উপস্থিতি সমেত। ছাদে মেলা জামাকাপড়গুলো এক একটা সম্পর্কের মতো। কোনওটা রোদ পড়ে উজ্জ্বল হয়, কোনওটার রং জ্বলে হয় ফিকে। দমবন্ধ করা একটা অন্তরমহল পেরিয়ে আলোকজ্জ্বল ছাদে পা রাখার জন্য একধরনের ক্যথারসিস প্রয়োজন হয়। যেমন প্রয়োজন হয় জ্যোৎস্নায় ভেসে যাওয়ার জন্যও।

লেখিকা হিসেবে নিজের অস্তিত্বকে খুঁজে পাওয়ার গল্প তো ‘চারুলতা’-ও আমাদের দেখিয়েছে। আর বাস্তব জীবনে আশাপূর্ণা দেবী, লীলা মজুমদার বা ইসমত চুগতাইরা। ইন্দ্রাণীর ছবিতে মেয়েটির লেখক হয়ে ওঠার জার্নির পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে একটা ব্যক্তিগত স্পেস। যে-স্পেসটুকুর জন্যই সে লড়াই করে শেষতক। যেখানে পারিবারিক বিধিনিষেধ, দাম্পত্য শৈত্য কিংবা নিঃসঙ্গতা আর তাকে স্পর্শ করে না। অন্তরের মুক্তির প্রতিবিম্ব হয়ে ওঠে ‘ছাদ’।

ছবিটির অন্যতম সম্পদ প্রয়াত অনুপ মুখোপাধ্যায়ের সাউন্ড ডিজাইন। যে- সাউন্ডস্কেপ চোখ বুজে শুনলে, আমাদের নিয়ে ফেলে উত্তর কলকাতার শ্যাওলা ধরা, দমচাপা কোনও গলিতে। পাওলি দাম অভিনীত ‘মিত্রা’র চরিত্রটি তার মতো বহু নারীর প্রতিনিধিত্ব করে। খুব মেইনস্ট্রিম ছবি এটি নয়, অন্য ধারার ছবি হিসেবেই ‘ছাদ’-কে দেখতে হবে।