প্রবল প্রতিবাদের মধ্যেও মুক্তি পেল কঙ্গনা রানাওয়াতের ‘ইমার্জেন্সি’

ছবি: ইনস্টাগ্রাম

শুক্রবার মুক্তি পেল কঙ্গনা রানাওয়াতের বহু বিতর্কিত ছবি ‘ইমার্জেন্সি’। বারবার বাধা পাওয়ার পরেও মিশ্র পর্যালোচনায় ছিল ছবিটি। অবশেষে বিভিন্ন দৃশ্যের কাঁটাছেঁড়ার পর পর্দায় দেখার সুযোগ পেলেন দর্শকরা। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ছবির প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার তথা অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ব্যক্তিগত জীবন ও কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক এই ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে ছবিতে উঠে আসে শিখদের প্রসঙ্গ। আর তাই নিয়েই শুরু হয়েছে যত সংঘাত।

সারা দেশে এই ছবি বড় পর্দায় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হলেও শিখ অধ্যুষিত পাঞ্জাবে এই ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে পাঞ্জাব সরকারের পক্ষ থেকে কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা না হলেও হল মালিকরা এই ছবিটির প্রদর্শনীতে নারাজ। এই ছবির প্রদর্শনী নিয়ে তাঁরা হলে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে চাইছে না। কারণ ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে কঙ্গনার ‘ইমার্জেন্সি’ নিয়ে।

এদিকে ‘শিরোমনি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি’ (এসজিপিসি) পাঞ্জাবে এই ছবির প্রদর্শনী নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তাঁদের দাবি, এই ছবিতে ইন্দিরা গান্ধীর হয়ে কথা বলতে গিয়ে শিখ সম্প্রদায়কে ছোট করা হয়েছে। ইতিহাসকে বিকৃত করে তাঁদেরকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। ছবিটি যাতে পাঞ্জাবে মুক্তি না পায় সেজন্য শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি (এসজিপিসি)-র প্রেসিডেন্ট হরজিন্দর সিং ধামি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন।


বিষয়টি নিয়ে রাজ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কড়া পুলিশি প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিবাদীরা যাতে কোনও বিশৃঙ্খলা ঘটাতে না পারে, সেজন্য অমৃতসর, পাতিয়ালার মতো শহরের প্রেক্ষাগৃহের সামনে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও এই রাজ্যের আরও অনেক প্রেক্ষাগৃহে এই ছবিটির প্রদর্শনী বাতিল করে দিয়েছেন হল মালিকরা। মূলত শিরোমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটির প্রবল বিরোধিতার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

একজন প্রতিবাদী জানিয়েছেন, ‘আমরা “ইমার্জেন্সি” মুক্তির বিরুদ্ধে। কারণ এতে শিখ ধর্ম এবং ইতিহাসকে ভুলভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে। ছবিটি নিয়ে আমরা আগেও আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু সরকার ছবিটি বন্ধ করার জন্য কিছুই করেনি। সেন্সর বোর্ড ছবিটি মুক্তির অনুমতি দিয়েছে এবং এখন আমরা তার প্রতিবাদ করছি।’

বিক্ষোভকারীরা আরও হুমকি দিয়েছেন, এই ছবির প্রদর্শনীর জন্য রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে পাঞ্জাব সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী থাকবে। কারণ ইতিমধ্যে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েও কোনও উত্তর পাইনি।

তবে এসজিপিসি নেতৃত্বের বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় কঙ্গনা রানাওয়াতের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এটি পাঞ্জাব ও অনেক শহরের শিল্প ও শিল্পীদের উপর সম্পূর্ণ হয়রানি। তাঁরা জরুরি অবস্থা প্রদর্শনের অনুমতি দিচ্ছেন না। আমি সকল ধর্মের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। চণ্ডীগড়ে পড়াশোনা এবং বেড়ে ওঠার কারণে আমি শিখ ধর্মকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ ও অনুসরণ করেছি।’

প্রসঙ্গত এই ছবির মূল চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার কাজেও অভিষেক হয়েছে কঙ্গনার। তাঁর সঙ্গে সহকারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুপম খের, শ্রেয়স তালপাদে, মহিমা চৌধুরী, মিলিন্দ সোমান এবং বিশাখ নায়ার।