• facebook
  • twitter
Friday, 27 December, 2024

‘এটাকে একটা হিউমানিস্ট থ্রিলার বলাই ভালো’

একটি মানবিক দৃষ্টিকোণকে প্রাধান্য দেওয়া গল্প এবং স্মার্ট সম্পাদনা। ‘চালচিত্র’-র পরিচালক প্রতিম ডি গুপ্ত-র সঙ্গে কথা বললেন অবন্তী সিনহা।

থ্রিলারের উপর বাঙালিদের ভীষণ টান। সেটা ভেবেই কি আবার থ্রিলারকেই বেছে নিলেন?

‘সাহেব বিবি গোলাম’ করেছিলাম ২০১৬-তে। প্রায় ৮ বছর পর আবার থ্রিলার করছি, কারণ এই জনরাটা দর্শক হিসেবে আমার নিজের খুব ভালো লাগে। ‘চালচিত্র’ ছবিটা আমি যেভাবে ভেবেছি, তাতে এটাকে একটা হিউমানিস্ট থ্রিলার বলাই ভালো। কারণ মানবিক দৃষ্টিকোণকেই এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অ্যাবিউজিং বা ভায়োলেন্ট, যেরকম থ্রিলার হয় সাধারণত, তার থেকে ‘চালচিত্র’ একেবারেই আলাদা।

কেউ তো ক্রিমিনাল হয়ে জন্মায় না। পরিস্থিতির কারণে অপরাধ প্রবণতা তৈরি হয়। আপনার ছবির ক্ষেত্রে ঠিক কী ঘটে ?

আমার ছবির ক্ষেত্রেও তাই। পরিস্থিতির কারণেই একজন সেখানে অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু তাঁর নিজের কাছে স্পষ্ট যুক্তি ছিল, কেন তিনি এই কাজ করছেন। সেই কার্যকারণটা থাকা খুব জরুরি একটা ক্রাইম থ্রিলারে। একজন মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন মানুষ অপরাধ করে চলেছেন, এটা আমাকে ঠিক ইমপ্রেস করে না। বরং সমাজ কীভাবে একটা মানুষকে অসহায় করে তোলে এবং দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে সেও আপরাধ করতে পারে- এই যুক্তিটা আমার কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।

আপনার ছবির অপরাধীর প্রতি কি আপনি কিছুটা সহানুভূতিশীল?

সহানুভূতিশীল ঠিক বলব না, তবে ওঁর একটা যুক্তিযুক্ত ব্যাক স্টোরি আছে। দ্য ক্রাইম ইজ ভেরি ঘাস্টলি। সিরিয়াল কিলার এখানে মেয়েদের মারছে এবং একটা চালচিত্রর ফ্রেমে আটকে দিচ্ছে। কিন্তু কেন সে এই কাজ করল, সেই অনুসন্ধানটাও খুব ইন্টারেস্টিং।

আমাদের চোখ ওটিটি-তে খুন জখম দেখে দেখে কিছুটা প্রস্তুত হয়ে গেছে, এটা ভেবেই কি বড়ো পর্দায় এই ‘গোরিনেস’ রাখার সাহস দেখালেন?

একজন ফিল্মমেকার হিসেবে বলতে পারি, আমি যখন মনে করছি পর্দায় একটা খুন দেখাব, সেটার জন্য দু’রকম পন্থা আছে। একটা হল, খুনটা যেভাবে ঘটছে এগজ্যাক্টলি সেটা দেখানো। আর দ্বিতীয় পন্থা হল আফটারম্যাথ অফ দ্য মার্ডার। গল্পের সঙ্গে কোনটা যাবে সেটা হল ইম্পর্ট্যান্ট।

সিরিয়াল কিলারদের একটা কমন টেন্ডেন্সি হল, একটা মার্ডার করার পরে খুনটাকে স্টেজ করা। প্রতিটা ভিক্টিমকে এক রকমভাবে সাজায়, একরকম জামাকাপড় পরায়, একরকম ক্লু ছাড়ে সে। আমার গল্পের খাতিরে আমাকে আফটারম্যাথটাই বেশি দেখাতে হয়েছে, রাদার দ্যান দ্য অ্যাকচুয়াল অ্যাক্ট অফ কিলিং। সেই সঙ্গে তদন্তকারীদের ব্যক্তিগত জীবনে কীভাবে এই ইনভেস্টিগেশনটা প্রভাব ফেলছে, সেই সাবপ্লটগুলোও উঠে এসেছে।

আমাদের সমাজে অপরাধ বাড়ছে। অপরাধমূলক গল্প নিয়ে তৈরি ছবির একটা প্রভাব সমাজে পড়ছে বলে মনে করেন?

না, যদি আপনি বলতে চান যে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া বা ক্রাইমই সমাধানের পথ- দেন ইটস আ ডেঞ্জারাস অ্যাপ্রোচ। কিন্তু ক্যরেক্টারগুলোর ক্যাথারসিস যদি দেখানো যায়, অর্থাৎ অপরাধের পরিণাম যে খারপই হয় সেই মেসেজটা যদি উঠে আসে- তাহলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনও কারণ নেই বলেই আমার মনে হয়।