• facebook
  • twitter
Sunday, 1 December, 2024

২৫ অক্টোবর মুক্তি পেতে চলেছে দেবপ্রতিম দাশগুপ্তের ‘আবার আসিব ফিরে’

আমেরিকা থেকে প্রথমবার এদেশে আসে এক যুবক। মূলত দাদুর সঙ্গে দেখা করা, ইন্টারনেটে আলাপ হওয়া বান্ধবীকে চাক্ষুষ করা। এরপরে কী হবে জানতে অবশ্যই সিনেমা হলে আসতে হবে। অভিনয়ে রয়েছেন এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী।

দেবপ্রতিম দাশগুপ্তের (তাজু দা) পরিচালনায় ছবি মুক্তি পাবে পঁচিশে অক্টোবর। ছবি মুক্তির আগে ছবি সম্পর্কে তিনি জানালেন, আমি ভ্রমণপ্ৰিয় মানুষ। যেখানেই যাই, আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আমার বাংলা সবচেয়ে সুন্দর। বাংলার কৃষ্টি সৃষ্টি দিয়ে যদি চেনানো যায় বাংলাকে! এই ভাবনা থেকেই জন্ম এই ছবির।

প্রায় ছ’মাস ধরে এ ছবির শুটিং হয়েছে। ছবিটি নিয়ে অনেক টানাপোড়েন গেছে। বিভিন্ন কারণে স্ক্রিপ্ট বদল করতে হয়েছে বারবার। একজন অভিনেতা শ্যুটিংয়ের দিন সকালে জানান, তিনি কাজ করতে পারবেন না। সেদিনই লন্ডন থেকে ফেরা আরেকজন অভিনেতা ত্রাতার ভূমিকায় আবির্ভুত হয়েছেন।

একটা গোটা ইউনিট পাশে না দাঁড়ালে, আর প্রযোজক কেশব মুখার্জি সাহায্য না করলে এই ছবি আমি শেষ করতে পারতাম না। এ ছবি নির্মাণের সময়ের ঘটনা মনে রাখার মতো। সবচেয়ে করুণ অভিজ্ঞতা হলো ঋতব্রতর দাড়ি। এই ছবির শ্যুটিং চলাকালীন সে অন্য একটি শ্যুটিংয়ে যায়। সেই ছবিতে তাঁকে দাড়ি কাটতে হয়। তারপর আমরা গালে হাত দিয়ে বসে থাকি, কবে তাঁর মুখে দাড়ি গজিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

এতো অভিনেতা-অভিনেত্রী, সংগীতশিল্পী, রাতুল সকলে মিলেমিশে কাজটা করেছি। সব নিয়ে প্রায় ৭৫টা চরিত্র। তারকা থেকে নবাগত সকলেই পরস্পরের বন্ধু। তাই ছবির পরিচালনাতে আলাদা করে কোনও চাপ নিতে হয়নি। রাতুল আমার ভাতৃসম। এ ছবির প্রাণ হলো মিউজিক। তাই এমন একজনকে আমি চাইছিলাম, যিনি ব্যাক গ্রাউন্ড মিউজিকটাও ঐতিহ্য মেনে করতে পারবেন। রাতুলকে বলতেই ও রাজি হয়ে যায়। আমার প্রথম পছন্দ মিলে যায়।

এই ছবির মূল স্ট্রং পয়েন্ট ছবির গল্প। ধাত্রীপুর গ্রামের বিত্তশালী বৃদ্ধ প্রাণেশবাবু হঠাৎই ডেকে পাঠান আমেরিকাতে থাকা মা হারা নাতি প্রদ্যুৎকে। বহু বছর পর নিজের একমাত্র উত্তরসূরিকে কাছে পেয়ে প্রাণেশবাবুর আনন্দ আর ধরেনা। ধাত্রীপুর গ্রামে সরকার বাড়িতে যেন খুশীর আমেজ বইতে থাকে। হঠাৎ করেই একদিন প্রাণেশবাবু তাঁর নাতির কাছে তাঁর আগামী জীবনের স্বপ্ন কী জানতে চাইলে উত্তরে প্রদ্যুত জানায় যে, সে গোটা বিশ্বকে খুব কাছ থেকে জানতে চায়, চিনতে চায়। কিন্তু তার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, সেটা তাঁর সামর্থ্যের বাইরে। উত্তরে প্রাণেশবাবু আশ্বাসের সঙ্গে জানান, এই স্বপ্নপূরণে তিনিই হবেন প্রদ্যুতের সঙ্গী। যা অর্থের প্রয়োজন হবে, তা তিনি জোগাড় করে দেবেন। শুধু বিনিময়ে কয়েকটা কাজের গুরু দায়িত্ব এসে পড়ে প্রদ্যুতের ওপর। সেই কাজে সফল হলেই প্রাণেশবাবুর সম্পত্তি আর বহু বছর ধরে আগলে রাখা গুপ্তধনের একমাত্র মালিক হবে প্রদ্যুৎ। দাদুর কথা রাখতে এক নতুন জীবনের পথে অগ্রসর হয় প্রদ্যুত। এই প্রথম বিদেশের মাটি ছেড়ে বেরিয়ে গ্রামবাংলার বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে যায়। নবদ্বীপে নাটক – কীর্তন, সুন্দরবনে বাঘ, বিধবাদের গ্রাম সঙ্গে বনবিবির আখ্যান। বাঁকুড়ায় ভাদু-টুসুর গান, মুর্শিদাবাদে লুপ্তপ্রায় আলকাপ ও রায়বেঁশে,পুরুলিয়ার ছৌ, বীরভূমের বাউল প্রতিটা জায়গাতেই সে একটু একটু করে পরিচিত হতে থাকে সেখানকার ঐতিহ্যের সঙ্গে। নিজের অজান্তেই বিদেশের গণ্ডি পেরিয়ে দেশীয় সত্তা, বাংলার সংস্কৃতি গ্রাস করে প্রদ্যুতের মননকে। এরপর? প্রদ্যুত কি পারবে দাদুর দেওয়া কাজে সফল হতে? দাদুর গুপ্তধন উদ্ধার করার পর কী করবে প্রদ্যুত? বিশ্বভ্রমণ না অন্যকিছু?

আমেরিকা থেকে প্রথমবার এদেশে আসে এক যুবক। মূলত দাদুর সঙ্গে দেখা করা, ইন্টারনেটে আলাপ হওয়া বান্ধবীকে চাক্ষুষ করা। এরপরে কী হবে জানতে অবশ্যই সিনেমা হলে আসতে হবে। অভিনয়ে রয়েছেন এক ঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী।